পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / entertainment

মহানায়কের বাড়ির লক্ষ্মীপুজোয় কেন ঢাক বাজে ? জানালেন গৌরব

74-এ পা দিল উত্তম কুমারের বাড়ির কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো । পুজোয় পৌরহিত্য করেন মহানায়কের নাতি গৌরব চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী দেবলীনা কুমার ।

By ETV Bharat Entertainment Team

Published : 4 hours ago

ETV BHARAT
মহানায়কের বাড়ির লক্ষ্মীপুজো (নিজস্ব চিত্র)

কলকাতা, 18 অক্টোবর:প্রতি বছরই লক্ষ্মীর আরাধনায় মেতে ওঠে মহানায়ক উত্তম কুমারের পরিবার। মহানায়কের 46এ, হরিশ মুখার্জি রোডের (ভবানীপুরের) বাড়ির বর্তমান প্রজন্মই এখন কোমর বেঁধে সব সামলে নেয় । পৌরহিত্য করেন মহানায়কের নাতি গৌরব চট্টোপাধ্যায় । সঙ্গতে গৌরব-জায়া দেবলীনা কুমার । এ বছর 74-এ পা দিল মহানায়কের বাড়ির কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো । প্রতিবারের মতো এবারেও সব রীতি মেনেই পুজো হল বলে জানালেন মহানায়কের নাত-বৌ দেবলীনা কুমার ।

উত্তম কুমারের বাড়ির লক্ষ্মীপ্রতিমা ঘিরে এক বড় ইতিহাস আছে । মহানায়কের ভবানীপুরের বাড়ির দেবী তাঁর স্ত্রী গৌরীরূপী । শোনা যায়, ‘যদুভট্ট’ ছবির শুটিংয়ে মূর্তি গড়ছিলেন নিরঞ্জন পাল । শুটিং ফ্লোরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে সেই দৃশ্য চোখে পড়ে উত্তম কুমারের । তিনি শিল্পীকে বাড়িতে ডাকেন লক্ষ্মীপ্রতিমা গড়ার বায়না দেবেন বলে । শিল্পী বাড়িতে পৌঁছে উত্তম কুমারের খোঁজ করতে গিয়ে দেখেন, গৌরীদেবী ঘর মুছছেন । তিনি ঘোমটার ফাঁক থেকে এক ঝলক তাকিয়ে শিল্পীকে বসতে বলার পর উত্তম কুমারকে ডেকে দেন । কিন্তু ওই মুহূর্তেই শিল্পীর চোখে মা লক্ষ্মীর ছবি আঁকা হয়ে যায় । তিনি ছাঁচ ভেঙে গৌরীদেবীর মুখের আদলে লক্ষ্মীমূর্তি গড়েন । আজও প্রতিমার মুখের গড়নে সেই চেনা ছাপ । যা ভাঙতে দেয়নি এই প্রজন্মও ।

উত্তম কুমারের বাড়ির লক্ষ্মীপুজো (নিজস্ব ভিডিয়ো)

1950 সালে ছেলে গৌতমের জন্মের বছরেই মহানায়ক উত্তম কুমার বাড়িতে এই লক্ষ্মীপুজো শুরু করেন । শোনা যায়, অভিনেতা ছবি বিশ্বাসের বাড়ির কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো দেখেই নাকি উত্তম কুমারের সাধ হয় নিজের বাড়িতেও দেবীর পুজো করবেন । ওই সময় স্টুডিয়ো পাড়া থেকে আর্ট ডিরেক্টর এসে আলপনা দিতেন ।

গৌরব চট্টোপাধ্যায় বললেন, "ঐতিহ্য মেনেই পুজোর দিনে ভোরে গঙ্গায় ডুব দিয়ে ঘট ভরে আনা হয়...৷" উত্তম কুমারের আমল থেকে একটা বড় রুপোর ঘট বসানো হয় প্রতিমার সামনে । লক্ষ্মীপুজোয় ঢাক বাজানোয় মানা । কিন্তু মহানায়কের বাড়িতে ঢাক বাজে এদিন । কেন ? উত্তরে গৌরব বলেন, "অনেক কিছুই হুজুগে শুরু হয়েছে আমাদের বাড়িতে । এটাও তেমনই । মা দুর্গা চলে যাওয়ার পর সবার মন খারাপ থাকে । তাই এদিন ঢাক বাজে এই বাড়িতে ।"

লক্ষ্মী আরাধনা গৌরব-দেবলীনার (নিজস্ব চিত্র)

ভোগের দিকটা সামলান উত্তম কুমারের নাতনি নবমিতা চট্টোপাধ্যায় । এ ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন মৌমিতা চট্টোপাধ্যায়, সৌরভ চট্টোপাধ্যায়, ত্বরিতা চট্টোপাধ্যায় । পরিবারের বড়রা এখন ছোটদের হাতেই ছেড়ে দিয়েছেন সব দায়িত্ব ।

মহানায়কের বাড়ির লক্ষ্মীপুজো (নিজস্ব চিত্র)

ভোগে থাকে পোলাও, লুচি, ছোলার ডাল, পাঁচরকম ভাজা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, পায়েস । সেই সময় ভিয়েন বসিয়ে পান্তুয়া, গজা তৈরি হত বাড়িতেই । বালতি করে পান্তুয়া বিতরণ করা হত পাড়া-পড়শিদের বাড়িতে । আসতেন টলিপাড়ার অনেকেই । মেনুতে থাকত লুচি, ছোলার ডাল, বেগুন বাসন্তী, আলুর দম, ধোকার ডালনা, ছানার ডালনা, মিস্টি । ইদানিং মেনুতে কিছু রদবদল ঘটলেও নিয়মকানুন একচুলও সরেনি । পুত্রকে কোলে নিয়ে মহানায়কের বাড়ির লক্ষ্মীপুজোয় হাজির হন অভিনেতা গৌরব চক্রবর্তী, ঋদ্ধিমা ঘোষ ।

মহানায়কের বাড়ির লক্ষ্মীপুজোয় ছেলেকে নিয়ে গৌরব-ঋদ্ধিমা (নিজস্ব চিত্র)

ABOUT THE AUTHOR

...view details