কলকাতা, 13 ফেব্রুয়ারি: এ কী বিচিত্র 'শহর' সেলুকাস...। যেখানে ঋত্বিক ঘটকের সিনেমা প্রদর্শনেও বাধা । হ্যাঁ, এমন ঘটনাই ঘটেছে নাকতলা হাইস্কুলে । ঋত্বিক ঘটকের ছবি প্রদর্শনে আপত্তি ওঠাকে অনভিপ্রেত বলে মনে করছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ ৷ তাঁর স্পষ্ট কথা, "ঋত্বিক ঘটক সবার সম্পত্তি ৷ এবিষয়ে কোনও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ অনভিপ্রেত ৷"
এ বছর প্রবাদপ্রতিম চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের জন্মশতবর্ষ । সেই উপলক্ষে সম্প্রতি ঋত্বিক মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সহযোগিতায় নাকতলা হাইস্কুলে দেখানোর কথা ছিল 'কোমল গান্ধার' এবং 'আমার লেনিন'। প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সেই অনুযায়ী সংগঠনের কথাবার্তাও হয়ে যায় । সূত্রের খবর, ছবি প্রদর্শনের কয়েক দিন আগে হঠাৎ বেঁকে বসেন প্রধান শিক্ষক ।
সংগঠনকে তিনি জানান, "কয়েকজন ব্যক্তি হুমকি দিয়েছেন যে, এই দুটি ছবি দেখানো হলে বিদ্যালয়ে ভাঙচুর হবে । তাঁদের সবথেকে আপত্তি 'আমার লেনিন' নিয়ে ।" এরপর সংগঠনের তরফে প্রধান শিক্ষককে শুধু 'কোমল গান্ধার' দেখানোর জন্য অনুরোধ জানানো হলে প্রধান শিক্ষক তারও নির্দেশ দেননি বলে অভিযোগ ।
এই ঘটনায় সিনেপ্রেমীদের একাংশের মনে প্রশ্ন, এটাই ঋত্বিক, মৃণাল, সত্যজিতের শহর ? ঋত্বিক ঘটকের ছবি দেখানোর ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা ! একদিকে প্রয়াত পরিচালকের 'তিতাস একটি নদীর নাম' ছবির প্রিন্ট পুনরুদ্ধার হচ্ছে । অন্যদিকে, তাঁর 'কোমল গান্ধার' দেখানোর অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না ।
এই ব্যাপারে ইটিভি ভারত কথা বলে চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষের সঙ্গে, যিনি ঋত্বিক ঘটককে খুব কাছ থেকে দেখেছেন ৷ এমনকি তাঁর কাছ থেকে নিজের কাজের প্রশংসাও পেয়েছেন । গৌতম ঘোষ ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে বলেন, "ঋত্বিকদা'র এবার জন্মশতবর্ষ । তাঁকে ঘিরে নানা মানুষ নানা রকমের অনুষ্ঠান করবে । তিনি কারও একার নন । তিনি মানুষের সম্পত্তি । তিনি আমাদের গর্ব । এখানে কোনও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ অনভিপ্রেত । এর কোনও দরকার আছে বলে মনে হয় না আমার ।"
টলিপাড়ায় পরিচালকদের একটি নয়, দুটি সংগঠন । পুরনো সংগঠন ইআইএমপিডিএ (ইস্ট ইন্ডিয়া মোশন পিকচার্স ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন) এবং পরে তৈরি হওয়া ডিএইআই (ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া)। এই ব্যাপারে নতুন সংগঠনের সভাপতি সুব্রত সেনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি ।