পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / entertainment

পালাবদলে নতুন বাংলাদেশ, কেমন আছেন 'উরাধুরা'র গায়িকা দেবশ্রী অন্তরা? - Debosrie Antara

Singer Antara Roy Chowdhury: প্রত্যেকবারের মতো এবার আর গ্রামের বাড়ির দুর্গা পুজোয় মাতছেন না 'উরাধুরা' গায়িকা দেবশ্রী অন্তরা ৷ ইটিভি ভারতকে জানালেন নেপথ্যের কারণ ৷

By ETV Bharat Entertainment Team

Published : 4 hours ago

Singer Antara Roy Chowdhury
গায়িকা দেবশ্রী অন্তরা (সোশাল মিডিয়া)

হায়দরাবাদ, 7 অক্টোবর: একদিকে ছাত্রদের কোটা আন্দোলনকে ঘিরে উত্তাল হয়েছিল সে দেশের রাজনীতি ৷ অন্যদিকে বেশ কিছু জায়গায় বন্যার কবলে পড়ে সর্বহারা সাধারণ মানুষ ৷ একের পর এক বিপর্যয়ে যেন বিধ্বস্ত, 'লাগামছাড়া' হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ ৷ তার মধ্যেই মর্ত্যে মা দুর্গা এসেছেন ৷ অশুভ শক্তির বিনাশ করে শুভ শক্তির বিকাশ ঘটাতে ৷ সার্বিক এই পরিস্থিতিতে 'উরাধুরা' গানে ঝড় তোলা সঙ্গীতশিল্পী দেবশ্রী অন্তরা অর্থাৎ অন্তরা রায়চৌধুরীর পুজো পরিকল্পনা থেকে গান নিয়ে ভাবনা, শুনল ইটিভি ভারত ৷

ইটিভি ভারত: তুফান সিনেমায় বড় ব্রেক ৷ লাগে উরা ধুরা গানে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ৷ গান নিয়ে পরের প্ল্যান কী?

দেবশ্রী অন্তরা: পুজোর কয়েকদিন আগেই আমার একটা নতুন গান মুক্তি পেয়েছে ৷ নাম তুমি ছাড়া ৷ তবে বর্তমানে গান থেকে সবকিছু একটু হল্টে রাখছি ৷ কারণ আমাদের দেশের অবস্থা নর্মাল নয় ৷ তারসঙ্গে আমারও এই পরিস্থিতিতে গান গাওয়ার মন নেই ৷ সত্যি কথা বলতে আমি জানি না, শ্রোতারা এই মুহূর্তে আমার গান শোনার জন্য প্রস্তুত কি না ৷ আমার দেশের জন্য গান গাওয়ার মানসিকতা খুব একটা নেই ৷

ইটিভি ভারত: অনেক সময় কঠিন পরিস্থিতিতে গান মানুষের মন ভালো করে ৷ গানও তো ভাল থেরাপি ভারি পরিবেশ থেকে একটু মন ঘোরানোর জন্য..

দেবশ্রী অন্তরা: আসলে 'উরাধুরা' গানের পর আমার জীবন আরও বেশি উরাধুরা হয়ে গিয়েছে ৷ অর্থাৎ প্রথমে আমার বাবা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন ৷ তারপর আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি ৷ ফলে এই পুজোয় আমি ঠিক করে কাজ করতে পারিনি ৷ আমার মনে হয়, এই বছরের জন্য আমার ল্যান্ডমার্ক থাক 'উরাধুরা'-ই ৷ 2025 সালে আমি নতুন কিছু দিতে পারব ৷ আমার সময় লাগবে নিজেকে স্থির করার জন্য ৷

ইটিভি ভারত: দেশের অস্থির পরিস্থিতিতে কীভাবে নিজেদের সামলেছো? অভারকাম করতে পেরেছ?

দেবশ্রী অন্তরা: সত্যি কথা বলতে আমার রাজনৈতিক কোনও ভিউস নেই ৷ আমাদের দেশের অবস্থা রাজনৈতিকভাবে খারাপ হয়েছে ৷ ফলে ওইদিক থেকে আমি কোনও ব্যাকল্যাশ ফেস করিনি ৷ যেটা হয়েছে উরাধুরার জনপ্রিয়তা আমাকে বাংলাদেশে ওভারনাইট তারকা বানিয়ে দিয়েছে ৷ কিন্তু পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে তুমি ছাড়া গান মুক্তি পেলেও তেমন সাড়া মেলেনি ৷ এখন ওই রকম পরিস্থিতিই নেই যে গান নিয়ে মার্কেটিং করব ৷ শেরপুরে এখন বন্যা পরিস্থিতি.... লোকে সেখান থেকে বাঁচবেন নাকি আমার গান শুনবেন.. ফলে দেশের অবস্থাই যখন সার্বিকভাবে খারাপ তখন গান শোনার মতো মন মানসিকতা থাকে না ৷

ইটিভি ভারত: এই মুহূর্তে বাংলাদেশে দুর্গাপুজোর আবহ কি তৈরি হয়েছে?

দেবশ্রী অন্তরা: হ্যাঁ, আমাদের এখানে পুজো হচ্ছে ৷ মণ্ডপে মণ্ডপে ঠাকুর এসেছে ৷ কিন্তু আগের মতো সেই উদযাপন নেই৷ এমনকী আমার গ্রামের বাড়িতে দুর্গাপুজো হয় ৷ কিন্তু সেখানেও এই বছর আমরা থাকছি না ৷ পুজোও সেইভাবে উদযাপিত হবে না ৷ কারণ আমার বাবা অসুস্থ ৷ এই মুহূর্তে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়া বন্ধ রাখতে হয়েছে ৷ ফলে কাজের মধ্য দিয়ে পুজোর সময় নিজেকে ব্যস্ত রাখছি ৷

ইটিভি ভারত: বাংলাদেশে দুর্গাপ্রতিমা ভেঙে ফেলা হচ্ছে অনেক জায়গায় ৷ সোশাল মিডিয়ায় এমন পোস্ট ভাইরাল ৷ এটা কি সত্যি?

দেবশ্রী অন্তরা: আমার ক্ষেত্রে এই কথা সত্যি নয় ৷ কারণ চাঁদপুরে আমার গ্রামের বাড়িতে দুর্গাপুজো 500 বছর ধরে হয়ে আসছে ৷ সেখানে কিন্তু প্রতিমা ভাঙা হয়নি ৷ বসুন্ধরাতে প্রতিমা রেখে পুজো প্রস্তুতি হচ্ছে ৷ ফলে প্রতিমা যে ভাঙা হচ্ছে এমন কিছু আমার চোখে পড়েনি ৷ ফলে পোস্টের সত্যতা যাচাই করতে পারব না ৷ কিন্তু হ্যাঁ, এটা নিয়ে খবর হচ্ছে ৷

ইটিভি ভারত: 500 বছরের দুর্গাপুজোর বিশেষত্ব কী?

দেবশ্রী অন্তরা: আমরা রায়চৌধুরী উপাধি পেয়েছি ৷ আমাদের পরিবার জমিদার বংশের ৷ কোনও এক রাজা এই পুজো শুরু করেছিলেন ৷ তারপর থেকে নিয়ম মেনে পুজো হয়ে আসছে ৷

ইটিভি ভারত: পুজোয় প্রেম হয়েছে?

দেবশ্রী অন্তরা: না ৷ গ্রামের বাড়ির পুজোতে পরিবার, আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে কেটে যেত ৷ তাঁদের সঙ্গেই ওঠা-বসা, খাওয়া-দাওয়া, হৈ-হুল্লোড় ৷ তাই নতুন করে প্রেমের কথা ভাবতে হয়নি ৷

ইটিভি ভারত: গ্রামের বাড়ির দুর্গাপুজোর বিশেষ স্মৃতি ...

দেবশ্রী অন্তরা: ধুনুচি নাচ বা সিঁদুর খেলা কমন বিষয় ৷ তবে দশমীর দিন আমাদের কাদা খেলা হয় ৷ অর্থাৎ মাকে বরণ করার আগে ঠাকুর দালানের সামনে একটা বড় গর্ত খোঁড়া হয় ৷ বেশ বড় গর্ত ৷ পুরো কাদা ভর্তি থাকে ৷ আর সেখানে কে কাকে কাদার মধ্যে বা গর্তের মধ্যে ফেলতে পারবে এই নিয়ে মজাদার খেলা হয় ৷ সবাই কাদা মেখে ভূত হয়ে যায় ৷ মেয়েরা সিঁদুর খেলে আর বাচ্চারা কাদা খেলে ৷ তবে সেখানে বড়রাও যুক্ত হয়ে যায় ৷ শুধু তাই নয়, দশমীর দিন দীঘি থেকে মাছ তোলা হয় ৷ ভোগ রান্না হয় ৷ গ্রামের সকলে সেদিন পেট ভরে খান আমাদের বাড়িতে ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details