কলকাতা, 12 ফেব্রুয়ারি: কেন্দ্রীয় বাজেটে আয়করের সীমা 12 লক্ষ টাকা পর্যন্ত বাড়ানোয় মুষ্ঠিমেয় লোকের সুরাহা হয়েছে। বৃহত্তর শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষিত হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে এমনটাই জানিয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। একই সঙ্গে, আমেরিকার বর্বর আচরণে মোদি সরকারের নীরব থাকা এবং বেকার যুবক-যুবতীদের জীবন যন্ত্রণার সমাধান না হওয়ার মতো একাধিক অভিযোগ তুলে পথে নামছে রাজ্যের বামপন্থী দলগুলি।
বিমান বসু বলেন, "পশ্চিমবঙ্গে বামদলগুলির পক্ষ থেকে সারা দেশের সঙ্গে এ রাজ্যের গ্রাম শহর সর্বত্র আগামী 14 ফেব্রুয়ারি থেকে 20 ফেব্রুয়ারি সপ্তাহব্যাপী জনবিরোধী কর্পোরেটমুখী বাজেটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হবে ৷ বামপন্থীদের বিকল্প প্রস্তাবগুলির সমর্থনে প্রচার চালানো হবে।" পাশাপাশি, বামদলগুলির পক্ষ থেকে রাজ্যের সর্বত্র কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী বাজেট ও আমেরিকা থেকে ভারতীয় অভিবাসীদের বর্বরোচিতভাবে ফেরৎ পাঠানোর প্রতিবাদে, রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি জোরদার করতে 14-20 ফেব্রুয়ারি জেলায় জেলায় প্রচার করা হবে বলেও জানান তিনি ৷
বিমান বসু জানান, দিল্লিতে গত 3 তারিখ পাঁচটি বামপন্থী দলের সভা থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, প্রতি রাজ্যে বামদলগুলির পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী বাজেটের প্রতিবাদে ও বিকল্প বাজেট প্রস্তাবের ভিত্তিতে প্রচার করা হবে। তিনি বলেন, "কেন্দ্রীয় বাজেটে জনগণের মৌলিক চাহিদাগুলি উপেক্ষা করা হয়েছে। ব্যাপক বেকারত্বের সমস্যার সমাধানে কোনও দিক নির্দেশ করা হয়নি। আয়করের সীমা 12 লক্ষ টাকা পর্যন্ত বাড়ানোয় চাকুরি ও মুষ্ঠিমেয় কিছু মানুষের সুরাহা হলেও মূল্যবৃদ্ধি এবং জিএসটি’র মতো পরোক্ষ করের প্রভাবে শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষিত হয়েছে। সরকার কর্পোরেট ও ধনীদের বাড়তি সুবিধা দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে বামপন্থী দলগুলির বিকল্প প্রস্তাব জনগণের শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সামাজিক সুরক্ষার অধিকারকে সুনিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।"
অন্যদিকে, রাজ্যে বিজনেস সামিটেরও কড়া সমালোচনা করেছে তিনি। বিমান বসু বলেন, "এ রাজ্যের সরকার অনেক ঢক্কানিনাদ করে কর্পোরেট হাউসের সহযোগিতায় বেঙ্গল বিজনেস সামিট করে ৷ কিন্তু রাজ্যের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়েনি, বেকার যুবক-যুবতীদের জীবন যন্ত্রণার সমাধান হয়নি। বরং তৃণমূল দলের আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, লুটপাট ও হামলায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটছে, জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। জঘন্য কাজের প্রতিবাদে এবং ন্যায়বিচারের দাবিতে প্রতিবাদীদের সব আন্দোলনে বামপন্থীরা পূর্ণ সমর্থন চালিয়ে যাবে। রাজ্যে নানা কৌশলে সাম্প্রদায়িক বিভাজন সৃষ্টির অপচেষ্টা এবং জনগণের ঐক্যবিরোধী শক্তিগুলি সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক থাকার আবেদন জানানো হচ্ছে।"