নয়াদিল্লি, 14 মার্চ: কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি এবং তাঁর দল যেভাবে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ)-এর সমালোচনা করেছেন, তা সম্পূর্ণ খারিজ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷ দিনদু'য়েক আগেই পাশ হওয়া সিএএ আইনকে কার্যকর করার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে। এরপরই বিরোধীদের তরফে এর তীব্র সমালোচনা চলছে ৷ এএনআই'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাহুল গান্ধিকে সরাসরি পাবলিক ফোরামে এসে সিএএ ইস্যুতে তাঁর দলের কথা তুলে ধরার চ্যালেঞ্জ করেন।
অমিত শাহ বলেন, "আমি রাহুল গান্ধিকে এই বিষয়ে বিস্তারিত সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি ৷ সাধারণ জনগণের কাছে সিএএ'র বিরোধিতা করার কারণ ব্যাখ্যা করতে বলছি। রাজনীতিতে, আপনার সিদ্ধান্তগুলিকে দৃঢ় অবস্থান দেওয়ার দায়িত্ব আপনারই। সিএএ আমাদের সরকারের সিদ্ধান্ত, তাই সে বিষয়ে আমাকে বোঝাতে হবে। একইভাবে রাহুল গান্ধিরও উচিত এই আইনের বিরোধিতা কেন করছেন তা ব্যাখ্যা করা।"
এর আগে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা এবং রাজ্যসভার সাংসদ জয়রাম রমেশ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন লাগু নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কংগ্রেসের অভিযোগ, এটি একটি বিতর্কিত আইন কারণ নাগরিকত্ব কখনোই ধর্মের ভিত্তিতে হয় না ৷ এটি ভারতের সংবিধান বিরুদ্ধ বলেও মত কংগ্রেসের। উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বিরোধীরা শুধু মিথ্যার রাজনীতিতে লিপ্ত ৷ 2019 সালে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ইস্তেহারের সিএএ'র বিষয়ে বলা ছিল ৷ 2019-এ তা সংসদের দুই কক্ষে পাশও হয় ৷
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "রাহুল গান্ধি, মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বা কেজরিওয়াল-সহ সমস্ত বিরোধী দল মিথ্যার রাজনীতিতে লিপ্ত হয়েছে ৷ তাই সময়ের প্রশ্নই ওঠে না। বিজেপি তার 2019 সালের ইস্তেহারে স্পষ্ট করেছে, সিএএ আনা হবে ৷ উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব (পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে) দেওয়া বিজেপির একটি স্পষ্ট অ্য়াজেন্ডার মধ্যে রয়েছে ৷ সেই প্রতিশ্রুতির অধীনে, নাগরিকত্ব (সংশোধন) বিল 2019 সালে সংসদের উভয় কক্ষে পাশ হয়েছিল। করোনার কারণে এটি দেরি হয় ৷ বিজেপি তার অ্য়াজেন্ডা সাফ করে দিয়েছিল নির্বাচনে দল জেতার আগেই ৷"
তিনি এর সঙ্গেই যোগ করেছেন, "সময়, রাজনৈতিক লাভ বা ক্ষতির প্রশ্নই নেই। এখন, বিরোধীরা তোষণের রাজনীতি করে ৷ তাদের ভোটব্যাঙ্ককে সুসংহত করতে চায়। আমি তাদের অনুরোধ করতে চাই যে, তারা রাজনীতি করবেন না ৷” স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "রাজনৈতিক লাভ-ক্ষতির প্রশ্নই নেই কারণ, বিজেপির মূল লক্ষ্য পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে আসা নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের অধিকার এবং ন্যায়বিচার দেওয়া। বিরোধীরা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক এবং 370 ধারা বাতিল নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল ৷ সেগুলিকেও রাজনৈতিক ফায়দা বলে দাগিয়েছিল। তাই বলে কি আমরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেব না ? আমরা 1950 সাল থেকে বলে আসছি যে আমরা 370 ধারা প্রত্যাহার করব ৷" (এএনআই)
আরও পড়ুন:
- ‘এক দেশ, এক ভোট’-এর পক্ষেই মত দিল কোবিন্দের কমিটি, রাষ্ট্রপতির কাছে রিপোর্ট পেশ
- 'সংবিধানে রয়েছে, নাগরিকত্ব আইন কেন্দ্রের বিষয়, রাজ্যের নয়', সাফ বার্তা শাহের
- পশ্চিমবঙ্গে পদ্ম ফুটবেই, সিএএ নিয়ে মমতাকে আক্রমণ করে 'শাহি হুঙ্কার'