ধানবাদ, 11 জানুয়ারি: স্কুলের শেষ দিন। আর দেখা হবে না প্রিয় বন্ধুদের সঙ্গে। তাই একে অন্যের ইউনিফর্মে মনের কথা লিখে দিয়েছিল দশম শ্রেণির কিছু ছাত্রী। এই 'অপরাধে' টি-শার্ট খুলে নিলেন স্কুলের প্রিন্সিপাল। অন্তর্বাস আর ব্লেজার পরে যেতে হল বাড়ি। ঝাড়খণ্ডর ধানবাদের একটি খ্যাতনামা স্কুলের প্রায় 80 জন ছাত্রীর সঙ্গে এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ।
ঘটনায় ক্ষুব্ধ ছাত্রীদের অভিভাবকরা। তাঁরা স্কুলে গিয়ে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। পাশাপাশি, স্থানীয় কালেক্টারের অফিসেও গিয়েছেন। সঙ্গে ছিলেন এলাকার বিধায়ক রাগিনী সিংও। তাঁদের দাবি, প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। সূত্রের খবর, ঘটনাটি কী হয়েছে খোঁজ নেবেন বলে জানিয়েছেন কালেক্টার। প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থাও নেবেন। এক অভিভাবক জানান, বাড়ি ফেরার পর থেকেই মেয়ের মন খারাপ । সে কারও সঙ্গে কথা বলছে না। শুধু তাই নয়, এমন ঘটনার পর লজ্জায়-অপমানে সে কোনও চরম পদক্ষেপ নিতে পারে বলেও আশঙ্কা পরিবরারের।
স্কুলের শেষ দিন সবসময় বিশেষ। এত বছরের বন্ধুদের সঙ্গে আর রোজ রোজ দেখা হবে না । তাদের সঙ্গে কোনও কিছু নিয়ে মেতে ওঠা যাবে না । টিফিন ভাগ করে খাওয়ার দিনও শেষ। আর তাই সেই বিশেষ দিনটিকে আরও বিশেষ করে রাখতে চেয়েছিলেন এই বেসরকারি স্কুলের ছাত্রীরা। বাকিরাও যেমনটা চায়। সেই ভাবনা থেকেই 'পেন ডে'-র আয়োজন ।
সাধারণত, 'পেন ডে' এমন এক আয়োজন যেখানে প্রিয় বন্ধুর জামায় বা অন্য কোনও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসে কিছু লিখে দিতে হয় । এক অপরকে কীভাবে মনে রাখবে বা একে অন্যের থেকে কী কী শিখেছে সেটই তুলে ধরা হয় । এই ছাত্রীরাও তাই করেছিল । বন্ধুদের কোন স্বভাব তাদের ভালো বা খারাপ লাগে সে কথা লিখেছিল তারা । একে অপরকে কী নামে ডাকে-লিখেছিল সেটাও ।
প্রথমে স্কুলের কেউ আপত্তি করেনি । কারও মনে হয়নি এভাবে শার্টে গোপন কথা লিখে দারুণ অন্যায় হয়ে যাচ্ছে। এতে স্কুলের চরম বদনাম হয়ে যাবে! আসরে নামেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক । কার গায়ে কী লেখা হয়েছে তা পড়ে ক্ষুব্ধ হন তিনি। তাঁর মনে হয়, এই সমস্ত টি-শার্ট পরে ছাত্রীরা বাইরে গেলে স্কুলের বদনাম হবে । স্কুলে কী ধরনের বিষয়ের চর্চা হচ্ছে তা বাইরের কেউ জানতে পারলে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নেন ছাত্রীরা সকলে স্কুলের টি-শার্ট খুলে ফেলবে। শেষমেশ অন্তর্বাস আর ব্লেজার পরে বাড়ি যেতে হল পড়ুয়াদের।