কলকাতা, 11 জানুয়ারি: শুরু হয়ে গিয়েছে গঙ্গাসাগর মেলা। চলবে 18 তারিখ পর্যন্ত ৷ প্রতিবছরের মতো এই বছরেও পুণ্যার্থীদের মেলা প্রাঙ্গণে নিয়ে যেতে থাকছে বেসরকারি বাস। তবে গঙ্গাসাগরে যে বেসরকারি বাসের ভাড়া ধার্য করা রয়েছে 2019 সাল থেকে তার আর কোনও হেরফের হয়নি। তাই শুধুমাত্র পুণ্যার্থীদের কথা ভেবেই বেসরকারি বাস দিচ্ছেন মালিকরা ৷ কিন্তু মালিক পক্ষের একাংশ স্পষ্ট জানিয়েছেন, ভাড়া বাড়ানো না-হলে আগামী বছর থেকে তারা মেলার জন্য বাস দিতে পারবেন না।
গঙ্গাসাগর রুট
সড়কপথে যেতে হলে প্রথমে পৌঁছতে হয় কাকদ্বীপের হারউড পয়েন্ট বা লট নম্বর 8-এ। এরপর ভেসেলে করে পৌঁছতে হয় কচুবেড়িয়া। তারপর সেখান থেকে বাসে বা গাড়িতে করে গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণে পৌঁছতে হয়। তাই কচুবেরিয়া থেকে পুণ্যার্থীদের মেলা প্রাঙ্গণে পৌঁছে দিতেই অন্যান্য বারের মতো এবারেও সরকারের নিজস্ব বাস যেমন থাকছে তেমনই থাকছে বেসরকারি বাস।
গঙ্গাসাগর মেলার জন্য় এবছরের যানবাহন পরিষেবা
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, এবছর মেলায় 2 হাজার 250টি সরকারি বাস থাকছে । পাশাপাশি 250টি বেসরকারিও বাস থাকছে ৷ 9টি বার্জ, 32টি ভেসেল, 100টি লঞ্চও থাকছে। এছাড়াও 21টি জেটি ব্যবহার করা হবে। বেসরকারি বাসের মধ্যে এই বছর থাকছে না কোনও মিনিবাস। প্রসঙ্গত, গতবছর 190টি বেসরকারি বাস ব্যবহার করা হয়েছিল মেলার পরিবহণের জন্য।
বাসমালিক ও শ্রমিক সংগঠন এনিয়ে কী বলছে?
- গঙ্গাসাগর পরিবহণ সহায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য তথা দক্ষিণ 24 পরগনার জয়েন্ট কমিটি অফ বাস অপারেটরস সাধারণ সম্পাদক অশোক গায়েন জানান, 2010 সাল থেকে একই ভাড়া চলেছিল। 2019 সালে 5 টাকা বাড়ানো হয়। তবে সেই থেকে ভাড়া আর বাড়েনি। তবে এই ক'বছরে বেড়েছে জ্বালানির দাম থেকে শুরু করে সব কিছুরই মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে। এবিষয়ে, বহুবার রাজ্য পরিবহণ দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও কোনও লাভ হয়নি। বর্তমানে কচুয়েরিয়া থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত যাত্রী পরিবহণের ক্ষেত্রে বাসের ভাড়া যাত্রী পিছু 35 টাকা। তবে আবার যাত্রী নিতে বাসটি খালি ফেরে কচুবেড়িয়া পর্যন্ত। তাতে খরচ বাড়ে।
উল্লেখ্য, জ্বালানির খরচ থেকে শুরু করে চালক ও কন্ডাক্টরদের থাকা-খাওয়ার সমস্ত খরচই বহন করতে হয় বাস মালিকদের। এইসব খরচ নিয়ে মেলার ক'টা দিনে বাস পিছু খরচ হয় প্রায় 50 হাজার টাকার কাছাকাছি।
- বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় জানান, স্থানীয় প্রশাসনের অনুরোধে এবছর বাস দেওয়া হলেও আগামী বছর থেকে আর হয়তো বাস পাঠাবেন না।
- অন্যদিকে, ওয়েস্ট বেঙ্গল রোড ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশন-সহ রাজ্য সিটুর সভাপতি সুভাষ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই সরকারের নীতি হল, নিজেও লুটবে এবং বাকিদের সেই সুযোগ করে দেবে। পরিবহণের ক্ষেত্রেও ঠিক একই ছবি। এতবছর হয়ে গেল বেসরকারি বাস থেকে ট্যাক্সি কোনওটারই ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়নি। তাই বাস এবং ট্যাক্সি মালিকরা নিজেরা নিজেদের মতো করে ভাড়া বাড়িয়ে নিয়েছেন। যেসব বাস চালক এবং খালাসিদের ওখানে থেকে পরিষেবা দিতে হচ্ছে তাঁদের রোজকার খাওয়ার খরচটা পর্যন্ত বর্তমান ভাড়ায় ওঠে না বলে তাঁর অভিযোগ।