ETV Bharat / state

কোথায় ক্ষতিপূরণের 33 কোটি ? বিবাদী বাগে ট্রামের প্রত্যাবর্তন আটকে পুলিশি গড়িমসিতে

ক্ষতিপূরণ হিসেবে মিলেছে প্রায় 33 কোটি টাকা ৷ তারপরেও বিবাদী বাগে ট্রামের প্রত্যাবর্তন আটকে রয়েছে পুলিশের গড়িমসির কারণে ৷

ETV BHARAT
ট্রামের প্রত্যাবর্তন আটকে পুলিশি গড়িমসিতে (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 10, 2024, 4:42 PM IST

কলকাতা, 10 নভেম্বর: বিবাদী বাগ চত্বরে 2017 সালে ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য বন্ধ হয়ে যায় ট্রাম পরিষেবা । পুনরায় ট্রামকে ওই রুটে ট্র্যাকে ফেরানো-সহ অন্যান্য খরচের জন্য প্রায় 33 কোটি টাকা ক্ষতিপূরণও মেলে মেট্রোর থেকে । এরপর মেট্রোর কাজ শেষ হয়েছে ৷ পুনরায় ট্রামের জন্য ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে জমি ৷ তবে এখনও ট্রামলাইন বসানোর কোনও কাজই শুরু হয়নি ৷ পথের কাঁটা হয়েছে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ । ইটিভি ভারতের হাতে এসেছে এই সংক্রান্ত একটি আরটিআই রিপোর্ট ৷ তার ভিত্তিতে এই রুটে ট্রামের প্রত্যাবর্তন নিয়ে উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন ৷

ট্রামের সঙ্গে কীসের বৈরিতা ট্রাফিক বিভাগের ? কিংবা কার অঙ্গুলিহেলনে এই রুটে ট্রাম চালাতে তাদের অনীহা ? ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো করিডরের ডালহৌসি-বিবাদী বাগ চত্বরে মহাকরণ স্টেশনের কাজ শুরু হয় 2017 সাল থেকে । আর সেই কাজের জন্যই ওই বছরের জুলাই মাস থেকে বেলাইন হতে হয়েছিল ট্রামকে ।

বিবাদী বাগে ট্রামের প্রত্যাবর্তন আটকে পুলিশি গড়িমসিতে (নিজস্ব ভিডিয়ো)

কথা ছিল যে, মেট্রোর মাটির নীচের কাজ শেষ হলেই আবারও পেতে দেওয়া হবে ট্রামলাইন । রুটে ফিরবে ট্রাম পরিষেবা । কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন বিবাদী বাগ চত্বরে মেট্রোর কাজ শেষ করে ট্রাম এবং বাস টার্মিনাসের জমি ফিরিয়ে দিয়েছে । তবে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের তরফে ওই রুটে ট্রাম চালানোর অনুমতি মেলেনি বলে জানা গিয়েছে । তাই ওই রুটে পুনরায় ট্রামলাইন পাতার কাজও শুরু করা যাচ্ছে না ।

ETV BHARAT
আরটিআইয়ের রিপোর্ট (নিজস্ব চিত্র)

ইটিভি ভারতের হাতে এসেছে একটি আরটিআই কপি ৷ সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই অংশে মেট্রোর কাজের জন্য যেহেতু ট্রামলাইন তুলে দেওয়া হচ্ছে, তাই মেট্রো নির্মাণকারী সংস্থা কলকাতা মেট্রোরেল কর্পোরেশন লিমিটেড (KMRCL) তিন ক্ষেপে ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (WBTC)-কে মোট 32 কোটি 9 লক্ষ 50 হাজার 250 টাকা দিয়েছে । ট্রামলাইন তুলে দেওয়ার ক্ষতিপূরণ, যে তিনবছর মেট্রোর কাজ চলবে সেই তিন বছরের ভাড়া বাবদ অর্থ এবং মেট্রোর কাজ শেষ হলে পুনরায় লাইন পাতা বাবদ অর্থ মিলিয়ে এই টাকা দেওয়া হয়েছে ।

কিন্তু ট্রামপ্রেমীরা মনে করছেন যে, শহরের বুক থেকে পাকাপাকিভাবে ট্রাম তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে পরিবহণ দফতর ৷ আর সেজন্যই বিবাদী বাগ রুট তো বটেই, পাশাপাশি বন্ধ হয়ে যাওয়া আর কোনও রুটেই হয়তো আর কোনওদিন গড়াবে না ট্রামের চাকা ।

ETV BHARAT
মেট্রোর কাজের জন্য বন্ধ হয়েছিল ট্রাম পরিষেবা (নিজস্ব চিত্র)

মেট্রোর কাজের জন্য এই রুটটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কেএমআরসিএল ঠিক কোন খাতে কত টাকা ডব্লিউবিটিসি-কে দিয়েছিল, তা জানতে চেয়ে ট্রাম গবেষক দেবাশিস ভট্টাচার্য আরটিআই করেছিলেন । ক্যালকাটা ট্রাম ইউজারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দাবি করেন যে, ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো সম্প্রসারণের কাজের জন্য ডালহৌসি-বিবাদী বাগ চত্বরে মেট্রোর কাজ শুরু হয় ৷ ফলে তখন থেকেই ওই রুটে ট্রাম চলাচল বন্ধ হয়ে যায় । মেট্রোর সেই কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর ট্রামলাইন ফিরিয়ে আনার কথা উঠলেই সেই পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় ট্রাফিক বিভাগ ।

তিনি তথ্যের অধিকার আইনে আবেদন করার পর জবাবে কেএমআরসিএল জানিয়েছে যে, ডব্লিউবিটিসি-র দাবি অনুসারে প্রায় পুরো টাকাটাই দিয়ে দেওয়া হয়েছে । মেট্রোর কাজ শেষ হওয়ার পর ট্রামলাইন পাতা হবে বলে একটি টেন্ডারও ডাকা হয়েছিল ৷ তবে সেই টেন্ডারের মেয়াদও উত্তীর্ণ হয়েছে ৷ কিন্তু ট্রামের লাইন পাতার কোনও কাজই এগোয়নি । এখন প্রশ্ন উঠেছে যে, মেট্রোর কাজ শেষ হওয়ার পর আবারও ট্রামলাইন পাতার জন্য যে টাকাটা নেওয়া হয়েছিল তার কী হল ? এর থেকে আরও একটি বিষয় পরিষ্কার যে, পরিবহণ দফতরের ট্রাম তুলে দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা আগে ছিল না ।

ETV BHARAT
প্রায় 33 কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ নেওয়ার পরও পুনরায় বসেনি ট্রামলাইন (নিজস্ব চিত্র)

আর এক ট্রামপ্রেমী শহরবাসী সাগ্নিক গুপ্ত জানিয়েছেন যে, 2023 সালে ট্রাম নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করা হয় । সেই মামলার প্রেক্ষিতে ডব্লিউবিটিসি-র তৎকালীন ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজনবীর সিং কাপুর একটি অ্যাফিডেভিড দাখিল করেছিলেন ৷ সেখানে বলা হয়েছে যে, মেট্রোরেলের কাজের জন্য যে ট্রাম রুটগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে, সেইগুলি পর পর চালু করা হবে । এমনকি কোন রুটে, কবে নাগাদ ট্রাম চালু হতে পারে, তারও একটা আনুমানিক লক্ষ্যমাত্রা সেখানে দেওয়া হয়েছিল । সাগ্নিক আরও জানান যে, ওই বছরই ডব্লিউবিটিসি-র পক্ষ থেকে বিবাদী বাগে ট্রামলাইন পাতার জন্য একটি টেন্ডার ডাকা হয় । কিন্তু তার পর কেটে গিয়েছে বেশ অনেকটা সময় ৷ তবে কোনও কাজই এগোয়নি ।

প্রসঙ্গত, বিবাদী বাগের মিনিবাস স্ট্যান্ডের পাশেই ছিল বিবাদী বাগ ট্রাম টার্মিনাসে ঢোকার মূল লাইন । উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার ট্রামরুটের মধ্যে যোগাযোগ সূত্র তৈরি করতো এসপ্ল্যানেড আর বিবাদী বাগ ট্রাম রুট । তাই এই টার্মিনাসটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার ট্রাম আর এই রুটের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ।

ETV BHARAT
বিবাদী বাগ চত্বরে ফেরেনি ট্রাম (নিজস্ব চিত্র)

কেএমআরসিএল-এর এক প্রাক্তন কর্তা ইটিভি ভারতকে জানিয়েছেন যে, বিবাদী বাগে ট্রাম ও বাস টার্মিনাস ছিল ৷ তাই মেট্রোর কাজ শেষ হলে ট্রাম ও বাস টার্মিনাস দুয়েরই পুনর্বাসন হওয়ার কথা ছিল । তিনিও মনে করেন যে, যদি বিবাদী বাগ অঞ্চলে ট্রাম পরিষেবা পুনরায় চালু করা না হয়, তাহলে সেক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের অর্থ ফিরিয়ে দেওয়াটাই যুক্তিসঙ্গত ৷

ডব্লিউবিটিসি-র এক আধিকারিক জানিয়েছেন যে, বিবাদী বাগের যেই অংশ দিয়ে 2017 সালের আগে পর্যন্ত ট্রাম চলাচল করতো, সেই অংশের প্রায় পুরোটাই মেট্রোর কাজ শেষ হওয়ার পর ডব্লিউবিটিসি-র ট্রাম বিভাগকে ফেরত দিয়ে দিয়েছে । কিন্তু উত্তর কলকাতার যেইসব রুটে দিয়ে ট্রাম এসে বিবাদী বাগে যেত, সেই তিনটি রাস্তা অর্থাৎ চিৎপুর রোড বা রবীন্দ্র সরণী, বউবাবাজার স্ট্রিট বা বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট এবং লালবাজার স্ট্রিটের রুটে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ ট্রাম চালাতে অনুমতি দিচ্ছে না । ফলে বিবাদী বাগে এখনও ট্রামলাইন পুনরায় পাতার কাজ শুরু করা যাচ্ছে না । যেদিন পুলিশ অনুমতি দেবে, তার পর থেকেই শুরু হয়ে যাবে কাজ ।

উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, পুলিশ ট্রামের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে কিন্তু ট্রাম চলবে কি না সেবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না ।

কলকাতা, 10 নভেম্বর: বিবাদী বাগ চত্বরে 2017 সালে ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য বন্ধ হয়ে যায় ট্রাম পরিষেবা । পুনরায় ট্রামকে ওই রুটে ট্র্যাকে ফেরানো-সহ অন্যান্য খরচের জন্য প্রায় 33 কোটি টাকা ক্ষতিপূরণও মেলে মেট্রোর থেকে । এরপর মেট্রোর কাজ শেষ হয়েছে ৷ পুনরায় ট্রামের জন্য ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে জমি ৷ তবে এখনও ট্রামলাইন বসানোর কোনও কাজই শুরু হয়নি ৷ পথের কাঁটা হয়েছে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ । ইটিভি ভারতের হাতে এসেছে এই সংক্রান্ত একটি আরটিআই রিপোর্ট ৷ তার ভিত্তিতে এই রুটে ট্রামের প্রত্যাবর্তন নিয়ে উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন ৷

ট্রামের সঙ্গে কীসের বৈরিতা ট্রাফিক বিভাগের ? কিংবা কার অঙ্গুলিহেলনে এই রুটে ট্রাম চালাতে তাদের অনীহা ? ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো করিডরের ডালহৌসি-বিবাদী বাগ চত্বরে মহাকরণ স্টেশনের কাজ শুরু হয় 2017 সাল থেকে । আর সেই কাজের জন্যই ওই বছরের জুলাই মাস থেকে বেলাইন হতে হয়েছিল ট্রামকে ।

বিবাদী বাগে ট্রামের প্রত্যাবর্তন আটকে পুলিশি গড়িমসিতে (নিজস্ব ভিডিয়ো)

কথা ছিল যে, মেট্রোর মাটির নীচের কাজ শেষ হলেই আবারও পেতে দেওয়া হবে ট্রামলাইন । রুটে ফিরবে ট্রাম পরিষেবা । কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন বিবাদী বাগ চত্বরে মেট্রোর কাজ শেষ করে ট্রাম এবং বাস টার্মিনাসের জমি ফিরিয়ে দিয়েছে । তবে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের তরফে ওই রুটে ট্রাম চালানোর অনুমতি মেলেনি বলে জানা গিয়েছে । তাই ওই রুটে পুনরায় ট্রামলাইন পাতার কাজও শুরু করা যাচ্ছে না ।

ETV BHARAT
আরটিআইয়ের রিপোর্ট (নিজস্ব চিত্র)

ইটিভি ভারতের হাতে এসেছে একটি আরটিআই কপি ৷ সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই অংশে মেট্রোর কাজের জন্য যেহেতু ট্রামলাইন তুলে দেওয়া হচ্ছে, তাই মেট্রো নির্মাণকারী সংস্থা কলকাতা মেট্রোরেল কর্পোরেশন লিমিটেড (KMRCL) তিন ক্ষেপে ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (WBTC)-কে মোট 32 কোটি 9 লক্ষ 50 হাজার 250 টাকা দিয়েছে । ট্রামলাইন তুলে দেওয়ার ক্ষতিপূরণ, যে তিনবছর মেট্রোর কাজ চলবে সেই তিন বছরের ভাড়া বাবদ অর্থ এবং মেট্রোর কাজ শেষ হলে পুনরায় লাইন পাতা বাবদ অর্থ মিলিয়ে এই টাকা দেওয়া হয়েছে ।

কিন্তু ট্রামপ্রেমীরা মনে করছেন যে, শহরের বুক থেকে পাকাপাকিভাবে ট্রাম তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে পরিবহণ দফতর ৷ আর সেজন্যই বিবাদী বাগ রুট তো বটেই, পাশাপাশি বন্ধ হয়ে যাওয়া আর কোনও রুটেই হয়তো আর কোনওদিন গড়াবে না ট্রামের চাকা ।

ETV BHARAT
মেট্রোর কাজের জন্য বন্ধ হয়েছিল ট্রাম পরিষেবা (নিজস্ব চিত্র)

মেট্রোর কাজের জন্য এই রুটটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কেএমআরসিএল ঠিক কোন খাতে কত টাকা ডব্লিউবিটিসি-কে দিয়েছিল, তা জানতে চেয়ে ট্রাম গবেষক দেবাশিস ভট্টাচার্য আরটিআই করেছিলেন । ক্যালকাটা ট্রাম ইউজারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দাবি করেন যে, ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো সম্প্রসারণের কাজের জন্য ডালহৌসি-বিবাদী বাগ চত্বরে মেট্রোর কাজ শুরু হয় ৷ ফলে তখন থেকেই ওই রুটে ট্রাম চলাচল বন্ধ হয়ে যায় । মেট্রোর সেই কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর ট্রামলাইন ফিরিয়ে আনার কথা উঠলেই সেই পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় ট্রাফিক বিভাগ ।

তিনি তথ্যের অধিকার আইনে আবেদন করার পর জবাবে কেএমআরসিএল জানিয়েছে যে, ডব্লিউবিটিসি-র দাবি অনুসারে প্রায় পুরো টাকাটাই দিয়ে দেওয়া হয়েছে । মেট্রোর কাজ শেষ হওয়ার পর ট্রামলাইন পাতা হবে বলে একটি টেন্ডারও ডাকা হয়েছিল ৷ তবে সেই টেন্ডারের মেয়াদও উত্তীর্ণ হয়েছে ৷ কিন্তু ট্রামের লাইন পাতার কোনও কাজই এগোয়নি । এখন প্রশ্ন উঠেছে যে, মেট্রোর কাজ শেষ হওয়ার পর আবারও ট্রামলাইন পাতার জন্য যে টাকাটা নেওয়া হয়েছিল তার কী হল ? এর থেকে আরও একটি বিষয় পরিষ্কার যে, পরিবহণ দফতরের ট্রাম তুলে দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা আগে ছিল না ।

ETV BHARAT
প্রায় 33 কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ নেওয়ার পরও পুনরায় বসেনি ট্রামলাইন (নিজস্ব চিত্র)

আর এক ট্রামপ্রেমী শহরবাসী সাগ্নিক গুপ্ত জানিয়েছেন যে, 2023 সালে ট্রাম নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করা হয় । সেই মামলার প্রেক্ষিতে ডব্লিউবিটিসি-র তৎকালীন ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজনবীর সিং কাপুর একটি অ্যাফিডেভিড দাখিল করেছিলেন ৷ সেখানে বলা হয়েছে যে, মেট্রোরেলের কাজের জন্য যে ট্রাম রুটগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে, সেইগুলি পর পর চালু করা হবে । এমনকি কোন রুটে, কবে নাগাদ ট্রাম চালু হতে পারে, তারও একটা আনুমানিক লক্ষ্যমাত্রা সেখানে দেওয়া হয়েছিল । সাগ্নিক আরও জানান যে, ওই বছরই ডব্লিউবিটিসি-র পক্ষ থেকে বিবাদী বাগে ট্রামলাইন পাতার জন্য একটি টেন্ডার ডাকা হয় । কিন্তু তার পর কেটে গিয়েছে বেশ অনেকটা সময় ৷ তবে কোনও কাজই এগোয়নি ।

প্রসঙ্গত, বিবাদী বাগের মিনিবাস স্ট্যান্ডের পাশেই ছিল বিবাদী বাগ ট্রাম টার্মিনাসে ঢোকার মূল লাইন । উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার ট্রামরুটের মধ্যে যোগাযোগ সূত্র তৈরি করতো এসপ্ল্যানেড আর বিবাদী বাগ ট্রাম রুট । তাই এই টার্মিনাসটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার ট্রাম আর এই রুটের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ।

ETV BHARAT
বিবাদী বাগ চত্বরে ফেরেনি ট্রাম (নিজস্ব চিত্র)

কেএমআরসিএল-এর এক প্রাক্তন কর্তা ইটিভি ভারতকে জানিয়েছেন যে, বিবাদী বাগে ট্রাম ও বাস টার্মিনাস ছিল ৷ তাই মেট্রোর কাজ শেষ হলে ট্রাম ও বাস টার্মিনাস দুয়েরই পুনর্বাসন হওয়ার কথা ছিল । তিনিও মনে করেন যে, যদি বিবাদী বাগ অঞ্চলে ট্রাম পরিষেবা পুনরায় চালু করা না হয়, তাহলে সেক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের অর্থ ফিরিয়ে দেওয়াটাই যুক্তিসঙ্গত ৷

ডব্লিউবিটিসি-র এক আধিকারিক জানিয়েছেন যে, বিবাদী বাগের যেই অংশ দিয়ে 2017 সালের আগে পর্যন্ত ট্রাম চলাচল করতো, সেই অংশের প্রায় পুরোটাই মেট্রোর কাজ শেষ হওয়ার পর ডব্লিউবিটিসি-র ট্রাম বিভাগকে ফেরত দিয়ে দিয়েছে । কিন্তু উত্তর কলকাতার যেইসব রুটে দিয়ে ট্রাম এসে বিবাদী বাগে যেত, সেই তিনটি রাস্তা অর্থাৎ চিৎপুর রোড বা রবীন্দ্র সরণী, বউবাবাজার স্ট্রিট বা বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট এবং লালবাজার স্ট্রিটের রুটে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ ট্রাম চালাতে অনুমতি দিচ্ছে না । ফলে বিবাদী বাগে এখনও ট্রামলাইন পুনরায় পাতার কাজ শুরু করা যাচ্ছে না । যেদিন পুলিশ অনুমতি দেবে, তার পর থেকেই শুরু হয়ে যাবে কাজ ।

উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, পুলিশ ট্রামের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে কিন্তু ট্রাম চলবে কি না সেবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.