ঘাটাল, 8 অগস্ট: ভোট এলেই নেতা থেকে প্রার্থীদের মুখে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কথা ৷ সেই তালিকা থেকে বাদ নেই ঘাটালের সাংসদ দেবও ৷ কিন্তু ভোট মিটে যাওয়ার কয়েক মাস পরেই বন্যার কবলে ঘাটাল । এই সময় না দেখে মিলছে সাংসদ দেবের ৷ আর না কোনও কথা হচ্ছে মাস্টার প্ল্যান নিয়ে ৷ এক হাঁটু জলের মধ্যে দাঁড়িয়ে তীব্র হতাশার প্রকাশ ঘাটালের বানভাসি এলাকার মানুষজনের ।
এলাকাবাসী শান্তি দোলুই বলেন, "জল পেরিয়ে বাজার করতে যেতে হচ্ছে ৷ জল কমছে ও বাড়ছে ৷ ভোটের সময় বলল মাস্টার প্ল্যান হবে ৷ তার কিছুই দেখতে পারছি না ৷ দেবদাও বলে গেলে মাস্টার প্ল্যান হবে ৷ কিন্তু সেই নিয়ে কোনও আলোচনা নেই ৷ আমাদের একটাই চাওয়া, এই জল যন্ত্রণা থেকে চিরতরে মুক্তি ৷"
বৃষ্টি কমেছে তবে এখনও জলমগ্ন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল পুরসভার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড । জল কমতে শুরু করেছে ৷ কিন্তু ঘাটাল পুরসভার 5, 7, 9, 10 এই সমস্ত ওয়ার্ডগুলি থেকে জল এখনও সম্পূর্ণভাবে নামেনি । তাই বেশ কয়েকদিন ধরে জল যন্ত্রণায় ভুগছেন বাসিন্দারা । রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে পানীয় জলের ট্যাপও জলের তলায় । সম্পূর্ণভাবে জল কমতে এখনও বেশ কয়েকদিন সময় লাগবে বলে জানাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা । তবে তারা এই জল যন্ত্রণা থেকে যত দ্রুত সম্ভব মুক্তি চাইছেন ।
ঘাটাল লোকসভা থেকে কয়েক লক্ষ ভোটে তৃতীয়বারের জন্য জয়ী হয়েছেন সাংসদ দীপক অধিকারী তথা অভিনেতা দেব । তিনি ভোটের প্রচারে প্রচারে এসে বলে গিয়েছিলেন, ভোটে জেতার পরই শুরু হয়ে যাবে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ এবং সে কাজ রূপায়িত করবে রাজ্য সরকার । এই দেবের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনিও বারবার বলেছেন, ঘাটালের মাস্টার প্ল্যান করবে রাজ্য সরকার ৷ এক্ষেত্রে কেন্দ্র সরকারের কোন সাহায্য নেওয়া হবে না । কিন্তু সে কেবল প্রতিশ্রুতিই রয়ে গিয়েছে । বাস্তবে তার কোনও অস্ত্বিত্ব দেখছে না এলাকাবাসীরা ৷
যদিও মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ নিয়ে তৃণমূল ও সাংসদ দেবকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট । তিনি বলেন,"লোকসভা ভোটের আগেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান এবং খালকাটা এই দুটোই হয়ে গিয়েছে ৷ এটা একটা ইতিহাস । এই আনন্দে ঘাটালবাসী গামছা ও ধুতি পরে পারাপার করছে ।"
এই বিষয়ে ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বিকাশ করের বক্তব্য,"মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রাজ্য সরকার নিজেই করবে । অর্থ বরাদ্দ হয়েছে, আস্তে আস্তে কাজ শুরু হবে । সমীক্ষা শুরু হয়েছে, আগামী দু থেকে তিন বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ কাজ হয়ে যাবে ।"