গুপ্তিপাড়া, 24 নভেম্বর: দাদুর বাড়ির শৌচালয় থেকে অবশেষে মিলল নিখোঁজ শিশুর দেহ ৷ মৃতের নাম স্বর্ণাভ সাহা ৷ বয়স 5 বছর ৷ ঘটনাটি ঘটেছে হুগলি জেলার বলাগড়ের গুপ্তিপাড়ার বাদাগাছিতে ৷ ঘটনায় দাদু, ঠাকুমা ও শিশুটির জেঠিমাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ ৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকাল থেকেই পাঁচ বছরের স্বর্ণাভর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না ৷ নিজের বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় সে । অনেক খোঁজাখুঁজি পরও তাঁকে পাওয়া যায়নি । শিশুটির খোঁজে পুলিশ ড্রোন ক্যামেরা নিয়ে ডোবা-পুকুর, জঙ্গলে তল্লাশি চালায় । রাতে নিয়ে আসা হয় স্নিফার ডগও ।
রবিবার ভোরে দাদুর বাথরুম থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় স্বর্ণাভ সাহাকে । সঙ্গে সঙ্গে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ কিন্তু সেখানে চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । তবে কী কারণে মৃত্যু সেটা পরিষ্কার নয় ।
পরিবারের দাবি, শিশুটির মুখে, গলায় ও পায়ে আঘাতের দাগ পাওয়া গিয়েছে । কেউ বা কারা বেঁধে রেখে অত্যাচার করেছে তার উপর । পারিবারিক গণ্ডগোলের জেরেই এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে মনে করছে প্রতিবেশীরা ।
হুগলি জেলা গ্রামীণ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সরকার বলেন, "বলাগড়ের গুপ্তিপাড়ায় শিশু নিখোঁজের ঘটনায় পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই অপহরণের মামলা রুজু হয়েছে । ঘটনায় শিশুটির দাদু শম্ভু সাহা এবং জেঠিমা টুম্পা সাহা, ঠাকুমা চায়না সাহাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ।"
ছেলের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না মা সুপ্রিয়া সাহা ৷ তাও তিনি বলেন, "আমাদের সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির লোকেদের অশান্তি ছিল । আমরা আলাদা বাড়ি করে থাকি ৷ পাশেই শ্বশুর থাকে ৷ বাড়িতে সারাক্ষণ অশান্তি ও গালিগালাজের করে শ্বশুর ৷ আমার ছেলের ঠাকুর ভক্ত ছিল । তাই সারাক্ষণ গালিগালাজ ও যাতে না শুনতে পায় তাই ছেলেকে দূরে রাখি । পাশে এক পাতানো দাদুর বাড়িতে খেলতে যায় ছেলে । ওখানেই বেশিরভাগ থাকে ও ৷"
গুপ্তিপাড়া 1 নম্বর পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান বিশ্বজিৎ নাগের কথায়, "শনিবার থেকে শিশুটি নিখোঁজ ছিল । আজ সকালে দাদু শিশুটিকে অচৈতন্য অবস্থায় দেখতে পান । তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে দিয়ে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করে চিকিৎসক । কোনও সমস্যার কারণে এই ঘটনা ঘটেছে বলে পরিবারের অনুমান । আমরা চাই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক অপরাধীদের ।"