জলপাইগুড়ি, 5 এপ্রিল: ঝড়ে ক্ষতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাঁর প্রশ্ন, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কোথায় গেল মোদির গ্যারান্টি ? শুক্রবার জলপাইগুড়ির এবিপিসি মাঠে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে জনসভা করেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় ৷ সেই সভার মঞ্চ থেকেই তিনি এই প্রশ্ন তোলেন ৷
গত রবিবার বিকেলে আচমকা ঝড়ে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় ৷ বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয় ৷ আহত হন অনেকে ৷ রবিবার রাতেই জলপাইগুড়ি হাসপাতালে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ ঘটনাস্থলেও যান তিনি ৷ ঘটনার পর সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ কিন্তু বৃহস্পতিবার কোচবিহারের জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী এই নিয়ে কোনও কথা বলেননি ৷ শুক্রবার সেই ইস্যুটিকে সামনে রেখেই সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷
তিনি বলেন, ‘‘এখানে প্রধানমন্ত্রী এলেন ৷ গতকাল৷ তিনি অনেক বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে কথা বলেছেন ৷ কিন্তু জলপাইগুড়ির কথা তো একবারও বলেননি ৷ আলিপুরদুয়ারের মানুষগুলো এত বিপদে আছে, একবারও বলেননি ৷ তখন মোদি কা গ্যারান্টি কোথায় গেল ?’’ মমতা কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘জায়গা ছিল না বলার ৷ ভুলেই গিয়েছিল ৷ কারণ, টুইট তো পার্টি থেকে করে ৷ আর আমি তো নিজে পৌঁছাই ৷
পাশাপাশি সেদিনের ঘটনার পর তিনি কী কী পদক্ষেপ করেছেন, সেই কথা বলেও মমতা ৷ তিনি জানান, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে ঝড়ের পর তিনি রাতেই চলে আসেন ৷ হাসপাতালে যান ৷ পরে ঘটনাস্থলে যান ৷ ওই ঘটনার পর জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালের ভূমিকার প্রশংসাও করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তিনি আরও জানান, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অনেক বাড়ি তছনছ হয়ে গিয়েছে ৷ রাজ্য সরকার বাড়ি তৈরি করে দিতে তৈরি ৷
তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন চলছে বলে এমসিসি-র আওতায় আমরা আছি ৷ তাই সবকিছুতেই নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নিতে হবে ৷ আজ যদি নির্বাচন না থাকত, তাহলে আমি এক সেকেন্ডে বাড়িগুলোর টাকা দিয়ে দিতাম ৷ টাকা আমাদের আছে ৷ টাকা প্রশাসন তৈরিও রেখেছে ৷ কিন্তু নির্বাচন কমিশনে চিঠি পাঠানো হয়েছে অনুমতি নেওয়ার জন্য ৷’’
এর পরই তিনি এই ইস্যুতে তোপ দাগেন বিজেপির বিরুদ্ধে ৷ মমতা বলেন, ‘‘আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ করব, বিজেপির কথা শুনে দেরি করবেন না ৷ মানুষগুলো আশ্রয়হীন অবস্থায় আছে ৷ টাকা আছে ৷ আপনারা শুধু অনুমতি দিন ৷’’
তিনি আরও বলেন, ’’টাকা আমি হাতে করে দেব না ৷ আমার পার্টিও দেবে না ৷ প্রশাসন টাকা দিয়ে আসবে ৷ এতে বিজেপির আপত্তি কোথায় ?’’ একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন যে বিজেপি মানুষের বিপদের সময় পাশে থাকে না ৷ বিজেপির তরফে তোলা ত্রাণ নিয়ে বঞ্চনার অভিযোগও তিনি উড়িয়ে দেন ৷ তিনি বলেন, মানুষ যখন বিপদে পড়ে, তখন সব মানুষকে একসঙ্গে দেখতে হয় ৷ আমরা কখনও বঞ্চনা করি না ৷’’
আরও পড়ুন: