কলকাতা, 31 অক্টোবর: কালীপুজোর দিন জোড়াবাগানে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হল এলআইসি এজেন্টের দেহ । হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় । ঘটনাটি ঘটেছে জোড়াবাগান থানা এলাকায় । মৃতের নাম অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় । বয়স আনুমানিক 38 বছর ৷ ইতিমধ্যেই স্থানীয় জোড়াবাগান থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ।
পুলিশ জানিয়েছে, ফ্ল্যাটের ভিতর থেকেই এলআইসি এজেন্টের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় বৃহস্পতিবার ৷ দেহ উদ্ধারের পর স্থানীয় থানার তরফ থেকে খবর দেওয়া হয় কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড বিভাগের গোয়েন্দাদের । তদন্তকারীদের অনুমান অনুযায়ী, ওই যুবককে খুন করা হয়েছে । তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে । ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট আসার পরেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে ।
লালবাজারে হোমিসাইড বিভাগের তরফে জানা গিয়েছে, মৃত অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাথায় গভীর আঘাতে চিহ্ন মিলেছে । পাশাপাশি তাঁর বুকে পিঠে এবং হাতে ও পায়ে চোট রয়েছে । কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড বিভাগের গোয়েন্দাদের প্রাথমিক অনুমান, কোনও ব্লান্ট ওয়েপেন অর্থাৎ ভোঁতা কোনও অস্ত্র দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়েছে ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দেহটি যেখান থেকে উদ্ধার হয়েছে সেই ফ্ল্যাটের নীচে থাকেন মৃতের দিদি । আজ সকালে যখন অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিদি তাঁকে চা খাওয়ার জন্য ডাকেন তখন ফোন ধরেননি অভিজিৎ । একাধিকবার নীচ থেকে ডাকাডাকি করা হলেও তিনি সাড়া দেননি । এরপর সন্দেহ হওয়াতে তাঁর দিদি এলাকার লোকজন নিয়ে উপরে ফ্ল্যাটের দিকে গিয়ে দেখেন, তাঁর দরজা প্রায় খোলা রয়েছে এবং মাটিতে পড়ে রয়েছেন অভিজিৎ ।
কে বা কারা তাঁকে খুন করে সেখান থেকে চলে গেল ? কেন কেউ তা জানতে পারল না ? সেই বিষয়টিও রহস্যের । এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে পুলিশ প্রাথমিকভাবে কথা বলে জানতে পেরেছে, ওই যুবক এলআইসি এজেন্ট ছিলেন । এলাকায় কোনও সময় কোনওরকমের ঝুট ঝামেলায় তিনি জড়াননি । জোড়াবাগান থানার পুলিশ রাস্তার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ইতিমধ্যেই সংগ্রহ করেছে বলে জানা গিয়েছে ।
এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক ইটিভি ভারতকে বলেন, "আমরা ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি । ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট আসার পর বিষয়টি খোলাসা হতে পারে । ফ্ল্যাটের যে জায়গা থেকে দেহ উদ্ধার হয়েছে সেখানে কোনও রকমের জিনিসপত্র খোয়া গিয়েছে কি না সেটিও ভালোভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।"
ইতিমধ্যেই যেখান থেকে দেহটি উদ্ধার হয়েছে সম্পূর্ণ সেই জায়গাটিকে ঘিরে রেখেছে পুলিশ । সেখানে যাতে কোনও রকমের বহিরাগত না ঢুকতে না পারেন তার বন্দোবস্তও করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।