কলকাতা, 25 ফেব্রুয়ারি: সর্বস্ব হারিয়ে অথৈ জলে আনন্দপুরের বস্তিবাসীরা ৷ পাশে দাঁড়াল পৌরনিগম ৷ প্রবাদ আছে সকাল বলে দেয় দিনটা কেমন যাবে। কিন্তু রবিবার আনন্দপুরের বস্তিবাসীদের জন্য এত বড় বিপদ অপেক্ষা করছে, সম্ভবত এদিন সকালেও তা আঁচ করতে পারেনি তারা। মাত্র 10-15 মিনিটের আগুন অনেক কিছুই বদলে দিয়ে গিয়েছে বাইপাসের ধারের এই বস্তিটির। আর তাই মন বিষণ্ণ গোটা এলাকার। এমনিতেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। অন্যদিকে আজ শবেবরাত ৷ এসবের মধ্যে সর্বস্ব হারিয়ে দিশেহারা 38 থেকে 40টি পরিবার। মিনিট পনেরোর আগুন শুধু তাদের ঘর নেয়নি, কেড়ে নিয়েছে তাদের স্বপ্নও।
গোটা বস্তিতে 68টি ঘর রয়েছে ৷ তার মধ্যে এদিন প্রায় 40টি বাড়ি আগুনে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। আগুন নিভে যাওয়ার পর সেই ধ্বংসস্তূপ থেকেই ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন বস্তিবাসীরা। এদিন ঘটনাস্থলে গিয়ে চোখে পড়ল আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘর থেকেই নিজে শেষ সম্বল খোঁজার চেষ্টা করছেন তাদের কেউ কেউ। এমনিতে কলকাতা পৌরনিগমের তরফ থেকে আগুনে পুড়ে যাওয়া বাড়িগুলি নতুন করে তৈরি করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে এলাকার কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ বলেন, "আমরা ঘটনার সময় থেকেই এখানে আছি যাদের ঘর ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে তাদের আপাতত অস্থায়ীভাবে বসবাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে ৷ পাশাপাশি প্রতিদিন দু'বেলা খাওয়ার, পানীয় পর্যাপ্ত জল, জামাকাপড়, অসুস্থ মানুষজনের ওষুধপত্র সবটাই ব্যবস্থা করা হবে ৷ সবটাই কলকাতা কর্পোরেশনের তদারকি হবে ৷ এই কাজে দলের তরফেও সাহায্য করা হবে।"
এদিন দুপুরে সেখানে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে দেওয়া আপৎকালীন সহায়তা ছাড়াও পুরসভার তরফ থেকে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। খালের উলটো-প্রান্তে থাকা সিইএসসি ময়দানেই অস্থায়ীভাবে এই 40টি পরিবারের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আপাতত যতদিন পর্যন্ত তাদের পুরনো বাসস্থান ঠিকমতো তৈরি করে না-দেওয়া হচ্ছে ততদিন সেখানেই থাকবে তারা। পরবর্তীতে আবার পুরনো ঠিকানায় তাদের স্থানান্তরিত করা হবে। প্রসঙ্গত এদিন ঘর হারানো বস্তিবাসীদের একাংশ পৌরনিগমের ব্যবস্থাপনায় যে খুশি, এমন কথাও জানিয়েছেন। একইসঙ্গে বস্তির উলটো দিকে থাকা একটি বাণিজ্যিক বহুতলের বিরুদ্ধে কিছু মানুষ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, সঠিক সময় তাদের কাছ থেকে জল পাওয়া গেলে হয়তো বেশ কিছু বাড়ি ও জিনিসপত্র বাঁচানো যেত।
আরও পড়ুন: