কলকাতা, 14 সেপ্টেম্বর: আরজি কর-কাণ্ডে আলোচনার টেবিলে আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তার এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৷ তবে, শেষমেশ তা হল না। সন্ধ্যা 6.41 মিনিট থেকে 9.30 মিনিট পর্যন্ত একাধিক ঘটনা ঘটলেও বৈঠক হল না। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকদের বৈঠক ভেস্তে যাওয়া প্রসঙ্গেই বিস্ফোরক দাবি করেলন জুনিয়র চিকিৎসরা।
তাঁদের দাবি মুখ্যমন্ত্রী বাডির বাইরে এসে কথা বলার পর তাঁরা সমস্ত দাবি ছেড়ে বৈঠকে বসতে রাজি ছিলেন । কিন্তু জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি তাঁদের প্রশাসনের তরফে বলা হয়, তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করা হয়েছে। আর বৈঠক করা হবে না। তাঁরা যেন বেরিয়ে যান। নইলে বাস ডেকে বের করে দেওয়া হবে । পড়ুয়াদের দাবি, প্রশাসনের এমন ব্যবহারে তাঁরা হতাশ ও নির্বাক ।
এর আগে জুনিয়র ডাক্তাররা সরাসরি সম্প্রচারের বদলে বৈঠকের 'ভিডিয়ো রেকর্ডিং' তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি করেন ৷ তবে, রাজ্য সরকার এখনই সেই ভিডিয়ো জুনিয়র ডাক্তারদের হাতে তুলে দিতে নারাজ ৷ মুখ্যমন্ত্রী বাইরে বেরিয়ে এসে জানালেন, বৈঠক হবে, ভিডিয়ো হবে, এমনকী বৈঠকের মিনিটস তাঁদের হাতে তুলে দেবে সরকার ৷ কিন্তু, সেই বৈঠকের ভিডিয়ো তুলে দিতে পারবেন না ৷ সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলায় আলোচনার ভিডিয়ো তিনি কারও হাতে তুলে দেবেন না ৷
মমতা বলেন, "আমি চাই তোমরা ভিতরে এসে বৈঠক করো ৷ আর যদি বৈঠক না-করো, তাহলে অন্তত চা খেয়ে যাও ৷ তোমাদের জন্য আমি 2 ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছি ৷ কিন্তু, তোমরা বাইরে দাঁড়িয়ে ভিজছো ৷ এতে আমার খারাপ লাগছে ৷" কিন্তু, এতেও বরফ গলেনি ৷ জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি দল মুখ্যমন্ত্রীর দিকে হাতজোড় করে দাঁড়িয়ে থাকেন ৷ তাঁদের দাবি, বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার নয় ৷ যে ভিডিয়োগ্রাফি হবে, তার একটি কপি জুনিয়র ডাক্তারদের হাতে তুলে দিতে হবে ৷
কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী বা জুনিয়র ডাক্তার দু’পক্ষই অনড় থাকেন ৷ সবশেষে মুখ্যমন্ত্রী জানান, তিনি সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি নিয়ে সেই ভিডিয়ো জুনিয়র ডাক্তারদের হাতে দিতে পারবেন ৷ কোনোভাবেই সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলা ইস্যুতে আলোচনার বিষয়, তার আগে প্রকাশ করবেন না ৷ শেষপর্যন্ত বৈঠক ভেস্তে যায় ৷
উল্লেখ্য, এদিন জুনিয়র ডাক্তাররা কালীঘাটে মুখ্য়মন্ত্রীর বাড়ির সিকিউরিটি চেক পেরিয়ে ভিতরে ঢোকার পরেই লাইভ স্ট্রিমিংয়ের দাবি জানান ৷ কিন্তু, অফিসিয়ালদের তরফে, তা নাকচ করে দেওয়া হয় ৷ জানানো হয়, সরকারের তরফে বৈঠকের ভিডিয়ো রেকর্ডিং করা হবে ৷ কালীঘাট থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে প্রকাশিত ভিডিয়োতে বলা হয়, কেন সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে না, বলা হচ্ছে না ৷ এমনকি, তাঁরা নমনীয় মনোভাব দেখিয়ে লাইভ স্ট্রিমিং থেকে পিছিয়েও আসেন ৷ বদলে দু’তরফে ভিডিয়ো রেকর্ডিংয়ের অনুমতি চাওয়া হয় ৷ তাতেও আপত্তি জানায় সরকার ৷ এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী বাইরে বেরিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলেন ৷ সেখানেও বরফ গলেনি ৷