মথুরাপুর, 9 জুলাই: এখন ডিজিটাল ক্লাসরুমের যুগ ৷ শহরের বেসরকারি স্কুলগুলিতে এই ডিজিটাল ক্লাসরুমের রমরমা ৷ গ্রামের পড়ুয়াদের কাছে যা কেবলই স্বপ্ন ৷ তবে এই স্বপ্নই এবার সত্যি করে দেখাল সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামের একটি স্কুল ৷ মথুরাপুরে ঘাটবকুলতলা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চালু হল ডিজিটাল ক্লাসরুম ৷ পিছিয়ে পড়া মৎস্যজীবী পরিবারের শিশুদের কথা মাথায় রেখে ডিজিটাল ক্লাসরুম চালুর উদ্যোগ নিলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর পুরকাইত ৷
ডিজিটাল ক্লাসরুম নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, "সাধারণত সরকারি স্কুলে এই ধরনের ব্যবস্থা দেখতে পাওয়া যায় না ৷ তবে এলাকার মানুষের সহযোগিতায় এই প্রত্যন্ত গ্রামে আমরা ডিজিটাল ক্লাসরুম চালু করেছি ৷ কম্পিউটার ও প্রজেক্টরের মাধ্যমে পড়ার বিষয়বস্তুকে জীবন্ত করে তোলা হচ্ছে ৷ ভবিষ্যতে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে স্মার্ট বোর্ডের মাধ্যমে ডিজিটাল ক্লাসরুমকে আরও আধুনিক করার ৷"
প্রতিবছর বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে তছনছ হয়ে যায় সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এই এলাকা। এর ফলে ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে হয় এখানকার মানুষদের ৷ তাদের পক্ষে বাড়িতে কম্পিউটার বা প্রজেক্টর কিনে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করানোর ক্ষমতা নেই ৷ কারণ সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকার মানুষদের মূল জীবিকাই হল মাছ ধরা ৷ তাই মৎস্যজীবী পরিবার শিশুদের অত্যাধুনিকমানের ব্যবস্থার মাধ্যমে পড়াশোনায় আগ্রহী করার স্কুলের প্রয়াস ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এলাকার মানুষদের মধ্য। এই ডিজিটাল ক্লাসরুম আগামিদিনে অন্যান্য স্কুলগুলিকে পথ দেখাবে বলে মত স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকদের ।
বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের জন্যও রয়েছে এই স্কুলে সমস্ত শিক্ষা সামগ্রী ৷ ছাত্রছাত্রীদের যাতে কোনওরকম অসুবিধা না-হয় সেজন্য তাদের হাতের কাছে থাকছে সেগুলি । রয়েছে ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়ানোর ব্যবস্থাও । আগামিদিনে সম্পূর্ণ স্কুলকে শিশুবান্ধব হিসাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে প্রধান শিক্ষকের । স্থানীয় বাসিন্দাদের স্কুলের সঙ্গে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি ।
প্রত্যন্ত গ্রাম্য এলাকায় ডিজিটাল ক্লাসরুম হওয়ায় খুশি পড়ুয়ারাও ৷ ডিজিটাল ক্লাসরুমের বিষয়ে স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া সায়ন্তিকা মণ্ডল জানায়, "স্কুলে ডিজিটাল ক্লাসরুমে পড়াশোনা করতে বেশ ভালো লাগছে ৷ স্কুলে এলে আর বাড়ি যেতে ইচ্ছে করে না । স্কুলের মধ্যে বন্ধু বান্ধব আর শিক্ষকরা আমাদের আনন্দের সঙ্গে পড়ান ৷ আমরাও আনন্দের সঙ্গে পড়াশোনা করি । হেডস্যরের এই উদ্যোগে আমরা খুব খুশি ৷"