কলকাতা, 2 মে: সামাজিক অনুষ্ঠানে একই মঞ্চে গিয়ে বিরোধী প্রার্থীর প্রশংসা করে দলীয় শাস্তির মুখে পড়েছেন কুণাল ঘোষ। বুধবারই দল তাঁর রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদ কেড়ে নিয়েছে। তারপর থেকেই কুণাল ঘোষ সরব। এদিকে দলের অন্দরে দলীয় কর্মীদের একাংশ কোথাও কুণালের হয়েই ব্যাট ধরেছে। নেতাদের কেউ কেউ দলের বিরোধিতা না করলেও কুণালের পক্ষে সরব হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দিনভর কুণাল ঘোষ সংবাদ শিরোনামে ছিলেন।
বুধবার পদ হারানোর পর এদিন নিচু তলার কর্মীদের একাংশ পোস্টার ব্যানার নিয়ে তাঁর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। গতকাল দলের পর থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার পর এদিন তারকা প্রচারকের তালিকা থেকেও কুণালের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে অবশ্য মুখ খুলেছেন কুনণাল। তবে দলের অন্তরে কর্মীদের একাংশ মনে করছেন, যেভাবে দলকে ডিফেন্ড করতে তিনি সরব হয়েছেন, তারপরে দল তাঁর বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা সঠিক নয়।
এদিন দলের দুই নেতা শান্তনু সেন এবং ব্রাত্য বসু কুণাল ঘোষকে নিয়ে মুখ খুলেছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ শান্তনু সেন এদিন সংবাদ মাধ্যমে বলেন, "আমিও সামাজিক অনুষ্ঠানে যাই। বিভিন্ন সময়ে বিরোধী নেতা-নেত্রীদের ফোন আমার কাছে আসে সাহায্যের জন্য। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক ৷ তিনি এক্ষেত্রে রাজনীতির রং বিচারের কথা আমাকে বলেননি। তাই আমিও রাজনীতির রং বিচার করি না। তবে আগামিদিনে এই ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে বিরোধী কেউ আমন্ত্রিত কি না, সেটা খবর নিয়ে যাব। প্রয়োজনে যাতে সময়টা এক না হয় সেটাও লক্ষ্য রাখব।"
এদিন কুণাল ঘোষ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "কুণালদা কিছু একটা বলেছেন। দল সেই কারণে তাঁর বিরুদ্ধে একটা ব্যবস্থা নিয়েছে। এখন হয়তো তাঁর মনে হচ্ছে, তাহলে কি তিনি দলের জন্য কিছুই করেননি ! এই বিষয়টি মনে হলে, তিনি যা যা করেছেন তা হয়তো রোমন্থন করছেন। সেটা করতে গিয়ে হয়তো তাঁর দুঃখ হচ্ছে। আজ হয়তো কুণালকে দেখছেন আগে হয়তো অন্য কারও হয়েছে। আগামিদিনে হয়তো অন্য কারও হবে।"
এদিন এই নিয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকেও প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি বলেন, "এই বিষয় নিয়ে ডেরেক ও'ব্রায়েন নিজে কোনও মন্তব্য করেননি। সেখানে পার্টির মধ্যে থেকে আমি এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে পারি না।" এরপরেও তিনি কুণাল প্রসঙ্গে বলেন, "কুণাল ঘোষ আমার সহকর্মী। আমি মনে করি কুণাল ঘোষ পার্টির মধ্যেই আছেন। কুণাল ঘোষ এবং দল কীভাবে সমস্যার সমাধান করবে সেটা দলের ব্যাপার। আগে যদি বিষয়টি নিয়ে ডেরেক কিছু বলেন তবেই আমি কোনও কথা বলতে পারি।" এদিন তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কুণাল এবং দলের মধ্যে সমঝোতার কোনও সম্ভাবনা কি আছে ? জবাবে ব্রাত্য বসু বলেন, "কুণাল যেভাবে জান-প্রাণ দিয়ে দলের হয়ে কথা বলেন তাতে আগামিদিনে নিশ্চয়ই আপনারা যে বোঝাপড়ার কথা বলছেন তার একটা ব্যবস্থা হবে। এমনটা আমি আশা করি।"
আরও পড়ুন
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ রাজভবনের কর্মীর
'পদ নয়, পথে আছি', মমতা-অভিষেকের নাম নিয়ে চোখের জলে বার্তা কুণালের