কলকাতা, 30 ডিসেম্বর: তেত্রিশ বারের জন্য সন্তোষ ট্রফি জয়ের লক্ষ্যে মঙ্গলবার নামছে বাংলা ৷ বছরের শেষদিনে সঞ্জয় সেনের ছেলেদের সামনে সামনে কেরল হার্ডল। দু'দলই সেমিফাইনালে দাপুটে ফুটবল খেলে ফাইনাল পাকা করেছে ৷ তাই আগামিকাল নিজামের শহরে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পূর্বাভাস ৷
এখনও পর্যন্ত সন্তোষ ট্রফিতে 32 বার মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। বাংলা জিতেছে 15 বার। কেরলের জয় ন'টি ম্য়াচে। ড্র হয়েছে আটটি ম্য়াচ। তবে খেতাব যুদ্ধে নামার আগে বাংলা এবং কেরল, কোনও দলই পরিসংখ্যানে চোখ দিতে নারাজ। চলতি প্রতিযোগিতায় 10টি করে ম্যাচ খেলে দু'দলই জয়ী হয়েছে ন'টি ম্যাচে। ম্যাচের আগেরদিন বাংলা কোচ সঞ্জয় সেন বলেন, "ফাইনালে পৌঁছনো অন্য রাজ্যের কাছে বড় কৃতিত্ব হতে পারে। বাংলার ক্ষেত্রে তা নয়। চ্যাম্পিয়ন হতে না-পারলে বাংলার ক্ষেত্রে মূল্য নেই, শূন্য।" একইসঙ্গে তিনি যোগ করেছেন, "আমরা 32 বার সন্তোষ ট্রফি জিতেছি। কিন্তু দলের অংশগ্রহণের সংখ্যায় সন্তোষ ট্রফি এখন অনেক বড় টুর্নামেন্ট। আমি অতীতের কৃতিত্ব খাটো করছি না। তবে মনে করি এখন চ্যাম্পিয়ন হওয়া অনেক কঠিন।"
কল্যাণীতে যে দৌড় সঞ্জয় সেনের বাংলা শুরু করেছিল, নিজামের শহরে এসে সেই তেজ আরও বেড়েছে। তবে লাস্ট ল্যাপে প্রতিপক্ষ দেখে অঙ্ক কষেই সঞ্জয় সেন জয়ের ছক সাজাচ্ছেন। কেরল 10 ম্যাচে 35 টি গোল করেছে। নসিব রহমান (8), মহম্মদ আজসল (9), শ্রীজেশ (5) গোল করে কেরলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। অন্যদিকে বাংলার 27 গোলে রবি হাঁসদার অবদান (11), নরহরি শ্রেষ্ঠার সাত ৷ এই দু'জন ছাড়াও বাংলার অন্য ফরোয়ার্ড এবং মিডফিল্ডাররাও গোলের মধ্যে রয়েছেন। যা সঞ্জয় সেনের কাছে বড় সুবিধা। রবি হাঁসদার সামনে সুযোগ মহম্মদ হাবিবকে টপকে সন্তোষের একটি মরশুমে সর্বাধিক গোলদাতা হওয়ার ৷ আপাতত কিংবদন্তির সঙ্গে একই মেরুতে তিনি ৷
সঞ্জয় সেন বলছেন, "এটা স্ট্রাইকারদের জন্য ভালো যে দলে একাধিক গোল করার লোক রয়েছে। দলের পক্ষেও বিষয়টি স্বস্তির। যতক্ষণ গোল আসছে ততক্ষণ নরহরি না রবি, কে গোল করল তা নিয়ে আমি চিন্তা করব না। কিন্তু আমি দেখে খুশি এই পর্যায়েও ছেলেরা গোল পাচ্ছে ৷" অন্যদিকে
কেরল দলে যাঁরা খেলছেন তাদের বেশিরভাগ ফুটবলারই গত দু'টি মরশুম ধরে কলকাতা লিগে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলছেন। মহম্মদ রোশল, নসীব রহমান চেনা মুখ বাংলার ফুটবলে। ফলে প্রতিপক্ষ ফুটবলারদের সম্পর্কে একটা ধারণা বাংলা দলের রয়েছে। হোমওয়ার্ক সারতে যা কাজে লাগছে ৷
সঞ্জয় সেন বলছেন, "ফাইনালে যে দল খেলছে তাঁরা যোগ্য বলেই খেলছে। এখানে যে নিজেদের ছাপিয়ে যাবে সেই শেষ হাসি হাসবে। আমি অনেক ফাইনাল খেলেছি। ফাইনালের আবহ জানা। তাই আর কোনও ভাবনাচিন্তার সুযোগ বা অবকাশ আমাদের কাছে নেই।" সবমিলিয়ে নিজামের শহরে বাংলার উত্তরণের গল্প লেখার পথে কাঁটা বাংলার চেনামুখরাই ৷