জলপাইগুড়ি, 4 এপ্রিল: সিএএ, এনআরসির পর এবার অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (uniform civil code) নিয়েও তোপ দাগলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ সেইসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বিজেপির সখ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ বৃহস্পতিবার মালবাজারের সভা থেকে একাধিক ইস্যুতে মুখ খুলতে গিয়ে বারবারই মমতার গলায় উঠে এসেছে নির্বাচন কমিশনের প্রসঙ্গ ৷ বিজেপির সঙ্গে রীতিমতো শলা-পরামর্শ করে কমিশন কাজ করছে বলেও এদিন অভিযোগ করেছেন মমতা ৷
জলপাইগুড়ির বিধ্বংসী ঝড় কার্যত পথে বসিয়েছে বহু মানুষকে। অনেকেরই বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। ঝড়ের রাতেই জলপাইগুড়ি চলে গিয়েছিলেন মুখ্য়মন্ত্রী। এরপর এলাকার মানুষের পাশে থাকারও আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচন পর্ব শুরু হয়েছে। লাগু হয়েছে আদর্শ আচরণ বিধিও। সেক্ষেত্রে সরাসরি সেই দুর্গতদের জন্য় কিছু ঘোষণা করার ক্ষেত্রেও সমস্যা রয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার মমতা বলেন, "এই ঝড়ে যাদের বাড়ি নষ্ট হয়েছে তাদের বাড়ি আমরা করে দেব। কমিশনের কাছে অনুরোধ, এটা ঝুলিয়ে রাখবেন না। আমরা বাড়ি করে দেব। মানুষগুলি রাস্তায় বসে আছে।"
জলপাইগুড়িতে ঝড়-প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ত্রাণ বিলি নিয়ে যে ক্ষোভ উঠে এসেছিল তা বিজেপির ষড়যন্ত্র বলেই এদিন দাবি করেছেন মমতা ৷ মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, "ত্রাণ নিয়ে বিক্ষোভ হচ্ছে, এটা বিজেপি'র কথা ৷ এটা নিয়ে বিজেপির রাজনীতির কাছে আত্মসমর্পণ করবেন না ৷ বড় জায়গায় ঘটনা ঘটেছে ৷ প্রসাশন সব করে দেবে ৷" এরপরই সরাসরি নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "নির্বাচন না থাকলে আমি এক সেকেন্ডে ঘোষণা করে দিতাম ৷ নির্বাচন কমিশনের কাছে বলা হয়েছে ৷ কিন্তু কমিশন অনুমতি দিচ্ছে না ৷ তাই ত্রাণের ক্ষেত্রেও দেরি হচ্ছে ৷ আসলে বিজেপি না-বললে করতে দিচ্ছে না ৷ কমিশনকেও এখনও ওরা চালাবে !"
অন্যদিকে, সিএএ বা এনআরসির পর এবার ইউসিসি নিয়েও মুখ খুলেছেন মমতা ৷ তাঁর কথায়, "কোথায় গণতন্ত্র ! এক দেশ এক দল থাকতে পারে না ৷ এখানেও একজন মারা গিয়েছে এনআরসির ভয়ে ৷ আমি তো আছি আপনাদের পাহারাদার ৷ কেউ ভয় পাবেন না ৷ আমি এখানকার লোক, মাটির লোক ৷ আমি দিল্লি থেকে এসে রাজনীতি করি না ৷ সিএএ-তে আবেদন করলেই এনআরসি হবে ৷ আপানাকে বিদেশি অনুপ্রবেশকারী বানিয়ে দেবে ৷ সিএএ, এনআরসি কিছুই করতে দেব না ৷ কোনও ডিটেনশন ক্যাম্প এখানে হবে না ৷"
এরপরই মমতা বলেন, "এরপর তো শুনছি মুসলিমদের বিয়ের পদ্ধতি আলাদা, হিন্দুদের পদ্ধতি আলাদা, আদিবাসীদের আলাদা, তফশিলিদের আলাদা পদ্ধতিতে বিয়ে হবে ইউনিফর্ম সিভিলকোডের মাধ্যমে ৷ মুসলিম, রাজবংশী, আদিবাসী, খ্রিষ্টান-সহ সবার বিয়ে পদ্ধতি আলাদা করে দেবে। এখন বিয়েটাও ঠিক করে দেবে ! কে, কাকে বিয়ে করবে সেটাও বলে দেবে ! কে কী শাড়ি পড়বে তাও তোমরা ঠিক করে দেবে ? এই দেশটাকেই বিজেপি শেষ করে দিচ্ছে।"
আরও পড়ুন: