মালদা, 6 মে: আর কয়েকঘণ্টা পরেই তৃতীয় দফায় লোকসভা নির্বাচন । তার ঠিক আগে শাসকদলের বিরুদ্ধে আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গ করে সরকারি প্রকল্প পাইয়ে দেওয়ার ভুয়ো প্রচার ও সাম্প্রদায়িক বিভেদ তৈরি করে প্রচারের অভিযোগ উঠল ৷ এই নিয়ে ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছে কংগ্রেস নেতৃত্ব ।
সোমবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে মালদা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী ইশা খান চৌধুরি বলেন, “আমাদের মূলত শাসক দলের বিরুদ্ধে দু’টি অভিযোগ রয়েছে । ভোটের ঠিক আগের মুহূর্তে পৌঁছে শাসক দলের মধ্যে হারের ভয় দেখা দিয়েছে । সেই কারণে শাসকদল ভুয়ো প্রকল্পের কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে । সাম্প্রদায়িক বিভেদ তৈরি করতে ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘কালিয়াচক 1 ব্লকের বিডিওর কাছে আমরা একটি অভিযোগ জানিয়েছি । কালিয়াচক 1 ব্লকের সুজাপুরে শাসক দলের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিটি বুথের 25টি পরিবারকে আবাস যোজনার বাড়ি তৈরি করার কথা বলছে । মানুষকে ভুল বোঝাতে ওরা ওই পরিবারগুলির নথিপত্রও সংগ্রহ করছে । আদর্শ আচরণবিধি চলাকালীন এই ধরনের কোনও কাজ করা যায় না । আমাদের কাছে এই অভিযোগের ভিডিয়ো প্রমাণ রয়েছে । বিডিওকে অভিযোগ জানানোর পরও বিডিওকে তেমন কোনও ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি ।’’
কংগ্রেসের প্রার্থীর অভিযোগ, ‘‘দ্বিতীয়ত, মালদা দক্ষিণ কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রান্তে শাসক দল সাম্প্রদায়িক বিভেদ তৈরি করতে একটি পোস্টার ছড়িয়ে দিয়েছে । আমার নামে এবং ডালুবাবুর নামে এই প্রচার করা হচ্ছে । আমাদের পরিবারের একটি প্রথা রয়েছে । ভোটে লড়াই করার আগে আমরা ইংরেজবাজারের মনষ্কামনা মন্দিরে প্রার্থনা করি, আর্শীবাদ নিই । গণিখান সাহেবও এই কাজ করতেন । ধর্ম নিরপেক্ষ দেশে সকলের আর্শীবাদ নেওয়ার অধিকার রয়েছে ।’’
তাঁর দাবি, ‘‘আমার সেই ছবি ব্যবহার করে শাসক দল তৃণমূল সাম্প্রদায়িক প্রচার চালাচ্ছে । আমাদের প্রশ্ন এটা কি আইপ্যাকের স্ট্যাটেজি ? ওরা যেভাবে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করছে তাতে বাংলাতে শাসকদল খুব বাজেভাবে হারতে চলেছে । আমরা সমস্ত নথিপত্র-সহ নির্বাচন কমিশন, মালদা জেলার নির্বাচনী আধিকারিক ও অবজারভারকে অভিযোগ জানিয়েছি ।”
জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র আশিস কুণ্ডু বলেন, “তৃণমূল কাজ করে ভোট চায় । উন্নয়ন করে ভোট চায় । তৃণমূল সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে রয়েছে বলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেড রোডে নমাজে অংশ নেন । দুর্গাপুজোর কার্নিভালেও অংশ নেন । তৃণমূলই একমাত্র দল যারা সাম্প্রদায়িকতাকে দূরে সরিয়ে উন্নয়নের নিরিখে ভোট চায় । ইশা খান চৌধুরি যিনি অভিযোগ করছেন তাঁকে বলতে চাই, ওঁর বাবা পাঁচ বছর সাংসদ ছিলেন । পাঁচ বছর ওই বোবা মানুষকে কেউ খুঁজে পাননি । ভোটে হার নিশ্চিত জেনেই এসব মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘গতকাল বিকেল পাঁচটায় নির্বাচনী প্রচার শেষ হয়েছে । অথচ আজ উনি মালদা প্রেস কর্নারে সাংবাদিক বৈঠক করলেন । এটা অভিযোগের নামে নিজের দলের প্রচার ছাড়া কিছু না । আমরা এই নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাব ।”
আরও পড়ুন: