নয়াদিল্লি, 11 ফেব্রুয়ারি: পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে দেদার কারচুপির অভিযোগ ৷ পাকিস্তানের সেনাবাহিনী নির্বাচনকে প্রভাবিত করার সবরকম চেষ্টা চালিয়েছে বলে অভিযোগ একপক্ষের ৷ তাও 2024 সালে সে দেশের জাতীয় নির্বাচন মনে রাখার মতো ৷
পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআই সমর্থিত নির্দল প্রার্থীরা ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির 266টি আসনের মধ্যে 100টিতে জয়ী হয়েছেন ৷ আরেক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) 71টি আসনে জয়ী হয়েছে ৷ অন্যদিকে পাকিস্তান পিপলস পার্টি বা পিপিপি 54টি আসনে জয়ী হয়েছে ৷ যে দলের প্রধান প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ৷ যদিও এখন পিপিপি'র নেতৃত্বে বেনজির-পুত্র বিলওয়াল ভুট্টো জারদারি ৷
দেশের এই রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নওয়াজ শরিফ ঘোষণা করেছেন, তাঁর পিএমএল-এন দেশের একমাত্র দল যে সরকার গড়তে পারে ৷ তারা অন্য দলগুলির কাছে জোট সরকার গড়ার আর্জি জানাবে ৷ এদিকে পিএমএল-এন এবং পিপিপি দল যত সংখ্যক আসন পেয়েছে, তার থেকে অনেক বেশি আসন দখল করেছে পিটিআই সমর্থিত নির্দল প্রার্থীরা ৷ এতে বোঝা যায়, পাকিস্তানে প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা রাজনৈতিক নেতা ইমরান খানের জনপ্রিয়তা কতটা ৷ আর এই জয়ই পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর অশান্তির কারণ ৷
ইমরান খান এখন পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন ৷ তিনি পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন, ক্রিকেট ব্যাটকে পিটিআইয়ের প্রতীক করবেন ৷ তবে নির্বাচন কমিশন সেই অনুমতি দেয়নি ৷ কমিশন দলের অভ্যন্তরীণ নির্বাচনে গোলমালের কারণ দর্শিয়ে ইমরানের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে ৷ এমনকী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেননি ৷ তাঁর বিরুদ্ধে তিনটি ফৌজদারি মামলা দায়ের হয় এবং তিনি জেলবন্দি ৷
পিটিআই সমর্থিত নির্দল প্রার্থীরাই নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী হয়েছে ৷ তাই তারা সরকার গড়তে অন্য় দলগুলির সঙ্গে কথা বলতে পারে বলে জানা গিয়েছে ৷ পিটিআই-এর প্রবীণ নেতা গোহর আলি খানের দাবি, নির্দল প্রার্থীরা নিজেরাই সরকার গড়তে পারে ৷ এর জন্য পিএমএল-এন বা পিপিপি'র সঙ্গে জোট গড়ার দরকার নেই ৷
তবে ভোটে কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ আর সে কারণেই ভোটগণনা এবং ফলাফল ঘোষণায় দেরি হয়েছে ৷ এমনই একটি ঘটনার কথা জানতে পেরেছে ইটিভি ভারত ৷ কানওয়াল শোজাব পিটিআই সমর্থিত নির্দল প্রার্থী ৷ তিনি পিটিআই-এর মহিলা সংগঠনের সভাপতিও ৷ তাঁর অভিযোগ পঞ্জাব প্রদেশে উচ শরিফে একটি সরকারি মহিলা স্কুলে ভোটগণনার সময় কারচুপি করা হয়েছে ৷ ওই ভোটকেন্দ্রটি পিএমএল-এন প্রার্থী সামিউল হাসান গিলানির বাড়ির কাছে ৷ তিনি নাকি বাড়ি থেকে দু'টি ব্যালট পেপার বোঝাই ব্যালট বাক্স নিয়ে এসেছিলেন ভোটকেন্দ্রে ৷ একটি ভিডিয়ো দেখিয়ে এই দাবি করেছেন পিটিআই কর্মী নাহিদ ৷ অবশ্য ইটিভি ভারত এর সত্যতা যাচাই করেনি ৷
মজার ব্যাপার গিলানির সৎ ভাই আলি হাসান গিলানি পিপিপি প্রার্থী ৷ তিনি ন্যাশনাল অ্য়াসেম্বলির 166 নম্বর আসন বাহাওয়ালপুর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৷ তিনিও রিটার্নিং অফিসারের কাছে ফের ভোটগণনার আবেদন জানিয়েছেন ৷ এদিকে একই আসনে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন পূর্বতন বাহাওয়ালপুর স্টেটের রাজা বাহাওয়াল আব্বাস আব্বাসি ৷ তিনিও ফলাফল নিয়ে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন ৷ ফলাফলে তিনি দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন ৷ তবে রাজার অভিযোগ, তিনিই জয়ী প্রার্থী ৷
আরও পড়ুন: