ETV Bharat / health

মহিলাদের প্রসব পরবর্তী যত্ন গুরুত্বপূর্ণ - POSTPARTUM CARE TIPS

প্রসবোত্তর অবস্থা অর্থাৎ প্রসবের পরের সময় হল এমন একটি সময় যেখানে নতুন মায়ের শারীরিক ও মানসিক সমর্থন প্রয়োজন ।

Postpartum care News
মহিলাদের প্রসবের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন (ETV Bharat)
author img

By ETV Bharat Health Team

Published : 2 hours ago

মা হওয়া যে কোনও নারীর জন্য সবচেয়ে বিশেষ অভিজ্ঞতা । কিন্তু সন্তান জন্মের কিছু সময় অনেক মহিলার জন্যও খুব কষ্টকর । প্রসব যোনিপথে হোক বা সিজারিয়ান হোক, এর কারণে শরীরে সমস্যা দেখা দেওয়া, সন্তানের জন্মের কারণে শরীরে পরিবর্তন এবং দুর্বল শরীর নিয়ে নবজাতকের যত্ন নেওয়া, এমন অনেক কারণ রয়েছে যা মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রভাবিত করে । প্রসবের পরে মহিলাদের অবস্থা স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে । চিকিৎসকরা জানান, সন্তান জন্মের পর দীর্ঘসময় মায়ের স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন ৷ সন্তানের জন্মের কয়েকদিন পর যাকে প্রসবোত্তর অবস্থা বা প্রসবোত্তর সময়ও বলা হয় । সেইসময় মহিলাদের বিশেষ যত্ন এবং সাহায্যের প্রয়োজন ।

প্রসবোত্তর সমস্যা: স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ বিজয়লক্ষ্মী বলেন, "সন্তান প্রসবের পরের সময়টা প্রত্যেক মহিলার জন্য আলাদা । কিছু মহিলা দ্রুত পুনরুদ্ধার করে, অন্যরা আরও সময় নেয় । প্রসব যোনিপথে হোক বা সিজারিয়ান হোক, প্রসবের পরের সময়টা সাধারণত মহিলাদের জন্য খুব ঝামেলার । যদি প্রসব স্বাভাবিক পদ্ধতিতে অর্থাৎ যোনিপথে হয়ে থাকে, তাহলে প্রসবের পর কয়েকদিন যোনিপথে ব্যথা ও ফোলাভাব থাকতে পারে । এছাড়াও মহিলাদের প্রস্রাব এবং মলত্যাগ সংক্রান্ত সমস্যা হতে পারে । শুধু তাই নয়, কখনও কখনও যদি কোনও মহিলার যোনিপথে প্রসবের সময় সেলাই বা এপিসিওটমি হয়ে থাকে তবে মহিলারা সাধারণত যোনি, ভালভা এবং পেরিনিয়ামে ব্যথা বা ফোলা অনুভব করেন । সিজারিয়ান ডেলিভারিতেও কিছু ভিন্ন সমস্যা রয়েছে । প্রসবের ধরণ নির্বিশেষে, মায়ের 15-20 দিন এবং কখনও কখনও প্রসবের পরেও দীর্ঘ সময়ের জন্য রক্তপাত অব্যাহত থাকে । তাই সন্তানের জন্মের পর নারীকে কিছু সময়ের জন্য বাড়তি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় ।"

তিনি বলেন, "প্রসবের সময় এবং পরে শরীর প্রচুর শক্তি ব্যবহার হয় । একই সময়ে সন্তানের জন্মের পরে মহিলাদের মধ্যে হরমোনের মাত্রা হঠাৎ করে কমে যায়, যার কারণে কখনও কখনও তাঁদের মেজাজ পরিবর্তন বা অন্য কিছু সমস্যা হতে পারে । এছাড়া নতুন দায়িত্ব যেমন শিশুর দেখাশোনা করা, তার অসময়ে ঘুমানো, জেগে ওঠা এবং কান্নাকাটি করা মাকে খুব ক্লান্ত করে এবং এর কারণে তিনি প্রয়োজনীয় পরিমাণে ঘুমাতে পারেন না ।

ডাঃ বিজয়লক্ষ্মী ব্যাখ্যা করেন, প্রসবের পর 6 সপ্তাহের সময়কালকে প্রসবোত্তর সময়কাল বলা হয় । প্রকৃতপক্ষে এই সময়কালে বেশিরভাগ মহিলাই প্রসবের পরে শারীরিক ও মানসিক সমস্যার প্রভাব বেশি অনুভব করেন । যেমন- শক্তির অভাব, হরমোনের পরিবর্তনের কারণে শারীরিক দুর্বলতা এবং ক্লান্তি বোধ, মেজাজের পরিবর্তন, ওজন বৃদ্ধি এবং চুল পড়া ইত্যাদি । এই সময়কালে, একজন মহিলা আরও দুঃখ, উদ্বেগ এবং বিরক্তি অনুভব করতে পারেন । যা প্রসবোত্তর বিষণ্নতা নামেও পরিচিত । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি সময় এবং যত্ন-সহ পরিচালনা করা যেতে পারে । কিন্তু যদি এই অবস্থা দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকে, তবে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা গুরুত্বপূর্ণ ।

কীভাবে প্রতিরোধ করা যায় ?

তিনি বলেন, "প্রসবের পরপরই মায়ের যত্ন নেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে । তবে এখানে অনেক জায়গায় সন্তান জন্মের পর কিছু সময়ের জন্য মাকে কোনও কাজ করতে না দেওয়ার রেওয়াজও আমরা দেখতে পাই ৷ যার প্রধান কারণ মাকে শারীরিক ও মানসিক বিশ্রাম দেওয়া । কিন্তু আজকাল অনেকেই এসব বিষয়ে তেমন মনোযোগ দেন না ।

তিনি বলেন, "মহিলারা যাতে এই ধরনের সমস্যা এড়াতে পারে এবং মা হওয়ার পর এই সংবেদনশীল সময়টা যাতে ভালোভাবে কাটাতে পারে, তারজন্য বাড়িতে একটি সহায়তা ব্যবস্থা তৈরি করা খুবই জরুরি । যেখানে সন্তানের দেখাশোনা ও আনুষঙ্গিক কাজে এবং গৃহস্থালির কাজে পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও বন্ধুদের সাহায্য নিতে হবে । শুধু তাই নয়, নারীদের উচিত তাদের সময়ের সদ্ব্যবহার করা ৷ যেমন- মায়েদেরও চেষ্টা করা উচিত সন্তানের ঘুমের সময় ঘুম সম্পূর্ণ করার । এছাড়া মহিলাদের খাদ্য ও পুষ্টির প্রতি পূর্ণ যত্ন নেওয়া এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । এটি শারীরিক এবং মানসিক উভয় স্বাস্থ্যের জন্য উপকৃত হবে । এগুলি ছাড়াও মহিলাদের তাদের স্বাস্থ্যের বিশেষ যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৷"

মা হওয়া যে কোনও নারীর জন্য সবচেয়ে বিশেষ অভিজ্ঞতা । কিন্তু সন্তান জন্মের কিছু সময় অনেক মহিলার জন্যও খুব কষ্টকর । প্রসব যোনিপথে হোক বা সিজারিয়ান হোক, এর কারণে শরীরে সমস্যা দেখা দেওয়া, সন্তানের জন্মের কারণে শরীরে পরিবর্তন এবং দুর্বল শরীর নিয়ে নবজাতকের যত্ন নেওয়া, এমন অনেক কারণ রয়েছে যা মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রভাবিত করে । প্রসবের পরে মহিলাদের অবস্থা স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে । চিকিৎসকরা জানান, সন্তান জন্মের পর দীর্ঘসময় মায়ের স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন ৷ সন্তানের জন্মের কয়েকদিন পর যাকে প্রসবোত্তর অবস্থা বা প্রসবোত্তর সময়ও বলা হয় । সেইসময় মহিলাদের বিশেষ যত্ন এবং সাহায্যের প্রয়োজন ।

প্রসবোত্তর সমস্যা: স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ বিজয়লক্ষ্মী বলেন, "সন্তান প্রসবের পরের সময়টা প্রত্যেক মহিলার জন্য আলাদা । কিছু মহিলা দ্রুত পুনরুদ্ধার করে, অন্যরা আরও সময় নেয় । প্রসব যোনিপথে হোক বা সিজারিয়ান হোক, প্রসবের পরের সময়টা সাধারণত মহিলাদের জন্য খুব ঝামেলার । যদি প্রসব স্বাভাবিক পদ্ধতিতে অর্থাৎ যোনিপথে হয়ে থাকে, তাহলে প্রসবের পর কয়েকদিন যোনিপথে ব্যথা ও ফোলাভাব থাকতে পারে । এছাড়াও মহিলাদের প্রস্রাব এবং মলত্যাগ সংক্রান্ত সমস্যা হতে পারে । শুধু তাই নয়, কখনও কখনও যদি কোনও মহিলার যোনিপথে প্রসবের সময় সেলাই বা এপিসিওটমি হয়ে থাকে তবে মহিলারা সাধারণত যোনি, ভালভা এবং পেরিনিয়ামে ব্যথা বা ফোলা অনুভব করেন । সিজারিয়ান ডেলিভারিতেও কিছু ভিন্ন সমস্যা রয়েছে । প্রসবের ধরণ নির্বিশেষে, মায়ের 15-20 দিন এবং কখনও কখনও প্রসবের পরেও দীর্ঘ সময়ের জন্য রক্তপাত অব্যাহত থাকে । তাই সন্তানের জন্মের পর নারীকে কিছু সময়ের জন্য বাড়তি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় ।"

তিনি বলেন, "প্রসবের সময় এবং পরে শরীর প্রচুর শক্তি ব্যবহার হয় । একই সময়ে সন্তানের জন্মের পরে মহিলাদের মধ্যে হরমোনের মাত্রা হঠাৎ করে কমে যায়, যার কারণে কখনও কখনও তাঁদের মেজাজ পরিবর্তন বা অন্য কিছু সমস্যা হতে পারে । এছাড়া নতুন দায়িত্ব যেমন শিশুর দেখাশোনা করা, তার অসময়ে ঘুমানো, জেগে ওঠা এবং কান্নাকাটি করা মাকে খুব ক্লান্ত করে এবং এর কারণে তিনি প্রয়োজনীয় পরিমাণে ঘুমাতে পারেন না ।

ডাঃ বিজয়লক্ষ্মী ব্যাখ্যা করেন, প্রসবের পর 6 সপ্তাহের সময়কালকে প্রসবোত্তর সময়কাল বলা হয় । প্রকৃতপক্ষে এই সময়কালে বেশিরভাগ মহিলাই প্রসবের পরে শারীরিক ও মানসিক সমস্যার প্রভাব বেশি অনুভব করেন । যেমন- শক্তির অভাব, হরমোনের পরিবর্তনের কারণে শারীরিক দুর্বলতা এবং ক্লান্তি বোধ, মেজাজের পরিবর্তন, ওজন বৃদ্ধি এবং চুল পড়া ইত্যাদি । এই সময়কালে, একজন মহিলা আরও দুঃখ, উদ্বেগ এবং বিরক্তি অনুভব করতে পারেন । যা প্রসবোত্তর বিষণ্নতা নামেও পরিচিত । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি সময় এবং যত্ন-সহ পরিচালনা করা যেতে পারে । কিন্তু যদি এই অবস্থা দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকে, তবে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা গুরুত্বপূর্ণ ।

কীভাবে প্রতিরোধ করা যায় ?

তিনি বলেন, "প্রসবের পরপরই মায়ের যত্ন নেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে । তবে এখানে অনেক জায়গায় সন্তান জন্মের পর কিছু সময়ের জন্য মাকে কোনও কাজ করতে না দেওয়ার রেওয়াজও আমরা দেখতে পাই ৷ যার প্রধান কারণ মাকে শারীরিক ও মানসিক বিশ্রাম দেওয়া । কিন্তু আজকাল অনেকেই এসব বিষয়ে তেমন মনোযোগ দেন না ।

তিনি বলেন, "মহিলারা যাতে এই ধরনের সমস্যা এড়াতে পারে এবং মা হওয়ার পর এই সংবেদনশীল সময়টা যাতে ভালোভাবে কাটাতে পারে, তারজন্য বাড়িতে একটি সহায়তা ব্যবস্থা তৈরি করা খুবই জরুরি । যেখানে সন্তানের দেখাশোনা ও আনুষঙ্গিক কাজে এবং গৃহস্থালির কাজে পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও বন্ধুদের সাহায্য নিতে হবে । শুধু তাই নয়, নারীদের উচিত তাদের সময়ের সদ্ব্যবহার করা ৷ যেমন- মায়েদেরও চেষ্টা করা উচিত সন্তানের ঘুমের সময় ঘুম সম্পূর্ণ করার । এছাড়া মহিলাদের খাদ্য ও পুষ্টির প্রতি পূর্ণ যত্ন নেওয়া এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । এটি শারীরিক এবং মানসিক উভয় স্বাস্থ্যের জন্য উপকৃত হবে । এগুলি ছাড়াও মহিলাদের তাদের স্বাস্থ্যের বিশেষ যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.