কলকাতা, 2 ফেব্রুয়ারি: যোগেশচন্দ্র কলেজের সরস্বতী পুজো দেখতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও সাংসদ মালা রায় ৷ কলেজে এক বহিরাগত ব্যক্তি ছাত্রীদের ধর্ষণের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়ে বিচারের দাবিতে সরব হন পড়ুয়ারা ৷ বিক্ষোভরত ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন ব্রাত্য বসু ৷ পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, শিক্ষামন্ত্রী এবিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন ৷
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে আজ যোগেশচন্দ্র কলেজে ছিল কড়া পুলিশি নিরাপত্তা ৷ এদিন কলেজের ভিতরে পুজো করেন আইন বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা ৷ সেখানে উপস্থিত ছিলেন ল কলেজের অধ্যক্ষ সুনন্দা গোয়েঙ্কা ৷ আর ডে কলেজের পুজো হয় কলেজের বাইরের অংশে ৷ এদিন পুজো দেখতে কলেজে উপস্থিত হন ব্রাত্য বসু ও মালা রায় ৷ তাঁরা কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলেন ৷
সেই সময় কলেজে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন একদল ছাত্রী ৷ তাঁরা স্লোগান তোলেন 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস'৷ তাঁদের অভিযোগ, জনৈক বহিরাগত সাবির আলি, যিনি যুব তৃণমূলের সদস্য, তিনি ছাত্রীদের 'রেপ থ্রেট' দিয়েছেন এবং কলেজ থেকে টাকা তুলেছেন ৷ সাবির আলির বিষয়ে ব্রাত্য বসুর সঙ্গে কথা বলতে চান বলে জানান বিক্ষোভরত ছাত্রীরা ৷
তবে ব্রাত্য বসু সেই সময় বলেন, "আমি কথা বলতে চাই ৷ কিন্তু ওরা কথা বলতে চাইছে না ৷ ওরা শুধুই দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছে ৷ আমি কথা বলে দেখলাম, পুজো শান্তিপূর্ণভাবেই হচ্ছে ৷" ফের ছাত্রীরা শিক্ষামন্ত্রীকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখালে তিনি বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধি দলকে কথা বলার জন্য পাঠাতে বলেন ৷ সেই মতো 6 জন ছাত্রীর এক প্রতিনিধি দল ব্রাত্য বসুর সঙ্গে কথা বলে ৷ এরপর ডে কলেজের পুজো দেখতে গিয়ে অভিযুক্ত যুব তৃণমূল নেতা সাবির আলির সঙ্গেও কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী ৷ পরে তিনি কলেজ থেকে বেরিয়ে যান ৷
ল কলেজের ছাত্রীরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পর জানিয়েছেন, "আমরা সবকিছুই শিক্ষামন্ত্রীকে জানিয়েছি ৷ তিনি এ বিষয়ে অবগত আছেন এবং ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন ৷" যদিও সাবির আলি পরে দাবি করেন যে, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগই মিথ্যে ৷
প্রসঙ্গত, এদিনই কিছু সময় পরে ডে কলেজের অধ্যক্ষ একটি ছোট মূর্তি নিয়ে এসে গাড়ি বারান্দায় পুজো করেন ৷ তিনি বলেন, "আমাকে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে ৷ সেই নির্দেশ মেনেই পুজো করছি ৷" সাবির আলির বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "সাবির আলিকে আমি চিনি না ৷"
উল্লেখ্য, সরস্বতী পুজোকে কেন্দ্র করে বেশ কিছুদিন ধরেই বিতর্কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের কলেজ যোগেশচন্দ্র কলেজ । পুজো করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে । অভিযোগ, ল কলেজের পড়ুয়ারা যেখানে পুজো করতে চেয়েছিলেন সেই জায়গায় ডে কলেজের ছাত্ররা দখল করেন । প্রসঙ্গত, যোগেশ চন্দ্র ডে কলেজ ও যোগেশ চন্দ্র চৌধুরী ল কলেজের ক্যাম্পাস একটাই । ডে কলেজের পড়ুয়ারা দাবি করেন, পুজোর জায়গায় অস্থায়ী নির্মাণ তৈরি করেছেন বহিরাগতরা । তাঁরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ৷ অবশেষে পুলিশের উপস্থিতিতে পুজোর অনুমতি দেয় কলকাতা হাইকোর্ট । এমনকী কলেজ চত্বরে যাতে বহিরাগত প্রবেশ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । পাশাপাশি, যে অস্থায়ী নির্মাণ নিয়ে বিতর্ক, সেটিকেও ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত।