ETV Bharat / opinion

আপ-কংগ্রেস ঝগড়া ! হাতের জাদুস্পর্শে দিল্লিতে পদ্ম ফোটাল বিজেপি - DELHI ELECTIONS 2025

27 বছর বাদে দিল্লিতে বিজেপির ফিরে আসা ৷ গেরুয়া দাপটে ফিকে আপ ৷ কংগ্রেস তৃতীয় বারও কোনও আসনই জিততে পারল না ৷

Prime Minister Narendra Modi being felicitated by BJP leaders upon his arrival at the party headquarters
বিজেপির সদর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানাচ্ছেন অন্যরা (ছবি: এএনআই ভিডিয়ো)
author img

By Bilal Bhat

Published : Feb 8, 2025, 10:41 PM IST

নয়াদিল্লি, 8 ফেব্রুয়ারি: দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল আম আদমি পার্টিকে একটা ছোট্ট দলে রূপান্তরিত করল ৷ আর কংগ্রেসের বিষয়ে বলতে গেলে, এবারও তারা রাজধানীর বিধানসভা-মানচিত্রে কোনও দাগই কাটতে পারল না ৷ একটিও আসন জিততে পারেনি কংগ্রেস ৷ কিন্তু বিজেপি-বিরোধী আপ-এর ভোট অনেকাংশেই কেটেছে তাঁদের প্রার্থীরা ৷ তাই আপ-এর ভাগও কমে গিয়েছে ৷

নয়াদিল্লি বিধানসভা কেন্দ্রে তিন হেভিওয়েট প্রার্থীর লড়াইয়ে বিজেপির পরবেশ সাহিব সিংয়ের কাছে পরাজিত হয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ৷ মোট ভোটের 48.82 শতাংশ পেয়েছেন বিজেপির পরবেশ সাহিব সিং ৷ তাঁর প্রাপ্ত ভোট 30 হাজার 88 ৷ 4 হাজার 89টি ভোটে পিছনে রয়ে গিয়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল, প্রাপ্ত ভোটের হার 42.18 শতাংশ ৷ এদিকে তাঁর সঙ্গে দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ছেলে সন্দীপ দীক্ষিতের হারের ব্যবধান 25 হাজার 520 টি ভোট ৷ কংগ্রেস প্রার্থী পেয়েছেন মাত্র 4 হাজার 568টি ভোট, মোট ভোটের 7.41 শতাংশ ৷

কেজরিওয়ালের দুই বিশ্বস্ত সঙ্গী মণীশ সিসোদিয়া এবং সত্যেন্দ্র জৈনও আপ বনাম কংগ্রেস ভোট বিভাজনে পরাজিত হয়েছেন ৷ এরকম আরও অনেকগুলি বিধানসভা আসন রয়েছে, যেখানে বিজেপির জয়ের ব্যবধান সামান্য ৷ কিন্তু স্পষ্ট যে, আপ-এর যাত্রাভঙ্গ করেছে কংগ্রেস ৷

আপ-কংগ্রেসের মধ্যেকার এই ভোট ভাগাভাগি ছাড়াও আরও কয়েকটি কারণ আছে আপ-এর বিরুদ্ধে বিজেপির জয়ের নেপথ্যে ৷ প্রচারে বিজেপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ক্ষমতায় এলে উন্নয়ন হবেই ৷ একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটাররা বুঝতে পারছিলেন না, কাকে সমর্থন করবেন- আপ নাকি কংগ্রেস ? সেইসব দোদুল্যমান ভোটারদের কাছে স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি বিকল্প হয়ে ওঠে ৷ কারণ বিজেপির ম্যানিফেস্টো থেকে শুরু করে স্লোগান- সবই উন্নয়নের আশা জাগিয়েছে ৷ শুধু তাই নয়, এবারে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষও কোনও দ্বিধা না-রেখে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন ৷ তবে কয়েকটি কেন্দ্রে যেখানে তাঁরা বিজেপির থেকে ভালো বিকল্প দল পেয়েছে, সেখানে পদ্মফুলে তাঁদের ভোট পড়েনি ৷

আপ-কংগ্রেস দ্বৈরথের মাঝে বিজেপি কীভাবে জয়ী হয়েছে, তার অন্যতম উদাহরণ মুস্তফাবাদ ৷ এই বিধানসভায় মুসলিম জনসংখ্যা 50 থেকে 55 শতাংশ ৷ এখানে আপ প্রার্থী আদিল আহমেদ খানের বিরুদ্ধে এআইএমআইএম প্রার্থী করেছিল মহম্মদ তাহির হুসেনকে ৷ তাতে লাভের লাভ হয়েছে বিজেপিরই ৷ এই কেন্দ্রে আপ প্রার্থী আদিল আহমেদ পেয়েছেন 67 হাজার 637 টি ভোট, যা মোট ভোটের 33.62 শতাংশ ৷ তিনি 51 হাজার 741 টি ভোটে পরাজিত করেছেন অল ইন্ডিয়া মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) প্রার্থী মহম্মদ তাহির হুসেনকে ৷ তিনি পেয়েছেন 33 হাজার 467 ভোট, যা 16.64 শতাংশ ৷ এদিকে বিজেপি প্রার্থী মোহন সিং বিস্ত মাত্র 17 হাজার 578 ভোটে আপ প্রার্থী আদিলকে হারিয়েছেন ৷ মোট ভোটের 42.36 শতাংশ পেয়েছেন বিস্ত৷ ৷ তাঁর প্রাপ্ত ভোট 84 হাজার 888 ৷

কয়েকটি বিধানসভায় ভোটাররা আপ-এর বদলে বিজেপি-বিরোধী দল হিসাবে কংগ্রেসকে বেছে নিয়েছেন ৷ কিন্তু শেষ হাসি হেসেছে ভারতীয় জনতা পার্টি ৷ যেমন টিমারপুর কেন্দ্র ৷ এখানে কংগ্রেস প্রার্থী লোকেন্দ্র কল্যাণ সিং পেয়েছেন 8 হাজার 361টি ভোট ৷ তাঁকে 47 হাজার 580টি ভোটে পরাজিত করেছেন আম আদমি পার্টির সুরিন্দর পাল সিং ৷ এদিকে আপ প্রার্থী মাত্র 1 হাজার 168টি ভোটে হেরেছেন বিজেপির সূর্যপ্রকাশ খাতরির কাছে ৷ এখানে বিজেপি, আপ এবং কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোট যথাক্রমে- 55 হাজার 626 (46.03 শতাংশ), 54 হাজার 602 (45.07), 8 হাজার 313 (6.88 শতাংশ) ৷

আরেকটি উদাহরণ মেহরৌলি বিধানসভা ৷ বিজেপি প্রার্থী গজিন্দর সিং যাদব পেয়েছেন 35 হাজার 893টি ভোট, যা প্রাপ্ত ভোটের 41.67 শতাংশ ৷ আপ প্রার্থী মহিন্দর চৌধরী এবং বিজেপি প্রার্থীর মধ্যে জয়ের ব্যবধান মাত্র 1 হাজার 782 ৷ মহিন্দর চৌধরীর ঝুলিতে পড়েছে 46 হাজার 567টি ভোট, শতাংশের হিসাবে 40.13 ৷ এদিকে তিনি নির্দল প্রার্থী বালযোগী বাবা বালকনাথকে পরাজিত করেছেন 38 হাজার 618 ভোটে ৷ বাবা পেয়েছেন 9 হাজার 731টি ভোট ৷ কংগ্রেস প্রার্থী পুষ্পা সিং 9 হাজার 338 টি ভোট পেয়ে চতুর্থ স্থানে নেমেছেন ৷

সঙ্গম বিহার আরেকটি বিধানসভা কেন্দ্র, যেখানে আপ আর বিজেপির মধ্যে ব্যবধান মাত্র 344টি ভোট ৷ বিজেপির চন্দন কুমার চৌধরী প্রাপ্ত ভোটের 42.99 শতাংশ অর্থাৎ 54 হাজার 49টি ভোট পেয়েছেন ৷ পরাজিত আম আদমি পার্টির দীনেশ মোহনিয়া পেয়েছেন 53 হাজার 705টি ভোট, যা 42.72 শতাংশ ৷ তৃতীয় স্থানে থাকা কংগ্রেস হর্ষ চৌধরীর ঝুলিতে পড়েছে 15 হাজার 863টি ভোট ৷ আপ প্রার্থীর কাছে তিনি 38 হাজার 186 ভোটে পরাজিত হয়েছেন ৷

একই রকম ঘটনা ঘটেছে ত্রিলোকপুরী আসনে ৷ বিজেপি প্রার্থী রবি কান্ত মাত্র 392টি ভোটে পরাজিত করেছেন আম আদমির অঞ্জনা পার্চাকে ৷ গেরুয়া শিবিরের রবি পেয়েছেন 58 হাজার 217টি ভোট ৷ অঞ্জনার ঝুলিতে 57 হাজার 825 ভোট ৷ দু'জনের ভোট শতাংশ যথাক্রমে 46.1 শতাংশ এবং 45.79 শতাংশ ৷ এদিকে কংগ্রেসের অমরদীপ 52 হাজার 70 ভোটে পরাজিত হয়েছেন আপ প্রার্থীর কাছে ৷ তাঁর প্রাপ্ত ভোট 6 হাজার 147, শতাংশে 4.87 ৷

সংখ্যালঘু অধ্যুষিত সিলামপুরে 50-55 শতাংশ মুসলিম ৷ এখানে মানুষ আপকেই জিতিয়েছে ৷ এই কেন্দ্রে 13 জন প্রার্থী নির্বাচনে লড়েছিলেন ৷

গত তিনটি বিধানসভা নির্বাচনে আপ-এর জনকল্যাণকর প্রকল্পগুলির ফলে ভালো সাড়া মিলেছিল ৷ কিন্তু বিজেপির ম্যানিফেস্টো আরও উন্নত সুবিধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দিল্লিবাসীকে ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আরও ভালো শিক্ষা ব্যবস্থার কথা দিয়েছিলেন ৷ তিনি দিল্লিতে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সামনাসামনি কথা বলেছিলেন ৷ যমুনার জল দূষিত বিতর্কে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী নায়াব সিং সাইনি নিজে যমুনার জল পান করে দেখিয়েছেন ৷ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ কেজিরওয়ালকে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন, তিনি যমুনায় নেমে স্নান করে দেখান ৷

দিল্লি বিধানসভা ভোটের মাত্র চারদিন আগে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বাজেট পেশ করেন ৷ 12 লক্ষ টাকা পর্যন্ত কর ছাড়ের কথা ঘোষণা করা হয় কেন্দ্রীয় বাজেটে ৷ এছাড়া বিকাশপুরীর আবর্জনার ইস্যু নিয়ে বিজেপি যে বিতর্ক তৈরি করেছিল, তা তাদের পক্ষেই গিয়েছে ৷ ভোটের দিন অর্থাৎ 5 ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী মোদি মহাকুম্ভে গিয়ে স্নান করেন ৷ সেই ছবি সোশাল মিডিয়ায় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছিল ৷

বিজেপির তারকা প্রচারক ছিল 40 জন ৷ সবদিক দিয়ে তাঁরা আপকে ঘিরে প্রচার করেছিলেন ৷ 27 বছর পর বিজেপি যে শুধু জিতেছে তাই নয়, বিপুল জয় পেয়েছে ৷ 70টি আসনের মধ্যে 48টিতেই পদ্মফুল ৷

নয়াদিল্লি, 8 ফেব্রুয়ারি: দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল আম আদমি পার্টিকে একটা ছোট্ট দলে রূপান্তরিত করল ৷ আর কংগ্রেসের বিষয়ে বলতে গেলে, এবারও তারা রাজধানীর বিধানসভা-মানচিত্রে কোনও দাগই কাটতে পারল না ৷ একটিও আসন জিততে পারেনি কংগ্রেস ৷ কিন্তু বিজেপি-বিরোধী আপ-এর ভোট অনেকাংশেই কেটেছে তাঁদের প্রার্থীরা ৷ তাই আপ-এর ভাগও কমে গিয়েছে ৷

নয়াদিল্লি বিধানসভা কেন্দ্রে তিন হেভিওয়েট প্রার্থীর লড়াইয়ে বিজেপির পরবেশ সাহিব সিংয়ের কাছে পরাজিত হয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ৷ মোট ভোটের 48.82 শতাংশ পেয়েছেন বিজেপির পরবেশ সাহিব সিং ৷ তাঁর প্রাপ্ত ভোট 30 হাজার 88 ৷ 4 হাজার 89টি ভোটে পিছনে রয়ে গিয়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল, প্রাপ্ত ভোটের হার 42.18 শতাংশ ৷ এদিকে তাঁর সঙ্গে দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ছেলে সন্দীপ দীক্ষিতের হারের ব্যবধান 25 হাজার 520 টি ভোট ৷ কংগ্রেস প্রার্থী পেয়েছেন মাত্র 4 হাজার 568টি ভোট, মোট ভোটের 7.41 শতাংশ ৷

কেজরিওয়ালের দুই বিশ্বস্ত সঙ্গী মণীশ সিসোদিয়া এবং সত্যেন্দ্র জৈনও আপ বনাম কংগ্রেস ভোট বিভাজনে পরাজিত হয়েছেন ৷ এরকম আরও অনেকগুলি বিধানসভা আসন রয়েছে, যেখানে বিজেপির জয়ের ব্যবধান সামান্য ৷ কিন্তু স্পষ্ট যে, আপ-এর যাত্রাভঙ্গ করেছে কংগ্রেস ৷

আপ-কংগ্রেসের মধ্যেকার এই ভোট ভাগাভাগি ছাড়াও আরও কয়েকটি কারণ আছে আপ-এর বিরুদ্ধে বিজেপির জয়ের নেপথ্যে ৷ প্রচারে বিজেপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ক্ষমতায় এলে উন্নয়ন হবেই ৷ একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটাররা বুঝতে পারছিলেন না, কাকে সমর্থন করবেন- আপ নাকি কংগ্রেস ? সেইসব দোদুল্যমান ভোটারদের কাছে স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি বিকল্প হয়ে ওঠে ৷ কারণ বিজেপির ম্যানিফেস্টো থেকে শুরু করে স্লোগান- সবই উন্নয়নের আশা জাগিয়েছে ৷ শুধু তাই নয়, এবারে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষও কোনও দ্বিধা না-রেখে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন ৷ তবে কয়েকটি কেন্দ্রে যেখানে তাঁরা বিজেপির থেকে ভালো বিকল্প দল পেয়েছে, সেখানে পদ্মফুলে তাঁদের ভোট পড়েনি ৷

আপ-কংগ্রেস দ্বৈরথের মাঝে বিজেপি কীভাবে জয়ী হয়েছে, তার অন্যতম উদাহরণ মুস্তফাবাদ ৷ এই বিধানসভায় মুসলিম জনসংখ্যা 50 থেকে 55 শতাংশ ৷ এখানে আপ প্রার্থী আদিল আহমেদ খানের বিরুদ্ধে এআইএমআইএম প্রার্থী করেছিল মহম্মদ তাহির হুসেনকে ৷ তাতে লাভের লাভ হয়েছে বিজেপিরই ৷ এই কেন্দ্রে আপ প্রার্থী আদিল আহমেদ পেয়েছেন 67 হাজার 637 টি ভোট, যা মোট ভোটের 33.62 শতাংশ ৷ তিনি 51 হাজার 741 টি ভোটে পরাজিত করেছেন অল ইন্ডিয়া মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) প্রার্থী মহম্মদ তাহির হুসেনকে ৷ তিনি পেয়েছেন 33 হাজার 467 ভোট, যা 16.64 শতাংশ ৷ এদিকে বিজেপি প্রার্থী মোহন সিং বিস্ত মাত্র 17 হাজার 578 ভোটে আপ প্রার্থী আদিলকে হারিয়েছেন ৷ মোট ভোটের 42.36 শতাংশ পেয়েছেন বিস্ত৷ ৷ তাঁর প্রাপ্ত ভোট 84 হাজার 888 ৷

কয়েকটি বিধানসভায় ভোটাররা আপ-এর বদলে বিজেপি-বিরোধী দল হিসাবে কংগ্রেসকে বেছে নিয়েছেন ৷ কিন্তু শেষ হাসি হেসেছে ভারতীয় জনতা পার্টি ৷ যেমন টিমারপুর কেন্দ্র ৷ এখানে কংগ্রেস প্রার্থী লোকেন্দ্র কল্যাণ সিং পেয়েছেন 8 হাজার 361টি ভোট ৷ তাঁকে 47 হাজার 580টি ভোটে পরাজিত করেছেন আম আদমি পার্টির সুরিন্দর পাল সিং ৷ এদিকে আপ প্রার্থী মাত্র 1 হাজার 168টি ভোটে হেরেছেন বিজেপির সূর্যপ্রকাশ খাতরির কাছে ৷ এখানে বিজেপি, আপ এবং কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোট যথাক্রমে- 55 হাজার 626 (46.03 শতাংশ), 54 হাজার 602 (45.07), 8 হাজার 313 (6.88 শতাংশ) ৷

আরেকটি উদাহরণ মেহরৌলি বিধানসভা ৷ বিজেপি প্রার্থী গজিন্দর সিং যাদব পেয়েছেন 35 হাজার 893টি ভোট, যা প্রাপ্ত ভোটের 41.67 শতাংশ ৷ আপ প্রার্থী মহিন্দর চৌধরী এবং বিজেপি প্রার্থীর মধ্যে জয়ের ব্যবধান মাত্র 1 হাজার 782 ৷ মহিন্দর চৌধরীর ঝুলিতে পড়েছে 46 হাজার 567টি ভোট, শতাংশের হিসাবে 40.13 ৷ এদিকে তিনি নির্দল প্রার্থী বালযোগী বাবা বালকনাথকে পরাজিত করেছেন 38 হাজার 618 ভোটে ৷ বাবা পেয়েছেন 9 হাজার 731টি ভোট ৷ কংগ্রেস প্রার্থী পুষ্পা সিং 9 হাজার 338 টি ভোট পেয়ে চতুর্থ স্থানে নেমেছেন ৷

সঙ্গম বিহার আরেকটি বিধানসভা কেন্দ্র, যেখানে আপ আর বিজেপির মধ্যে ব্যবধান মাত্র 344টি ভোট ৷ বিজেপির চন্দন কুমার চৌধরী প্রাপ্ত ভোটের 42.99 শতাংশ অর্থাৎ 54 হাজার 49টি ভোট পেয়েছেন ৷ পরাজিত আম আদমি পার্টির দীনেশ মোহনিয়া পেয়েছেন 53 হাজার 705টি ভোট, যা 42.72 শতাংশ ৷ তৃতীয় স্থানে থাকা কংগ্রেস হর্ষ চৌধরীর ঝুলিতে পড়েছে 15 হাজার 863টি ভোট ৷ আপ প্রার্থীর কাছে তিনি 38 হাজার 186 ভোটে পরাজিত হয়েছেন ৷

একই রকম ঘটনা ঘটেছে ত্রিলোকপুরী আসনে ৷ বিজেপি প্রার্থী রবি কান্ত মাত্র 392টি ভোটে পরাজিত করেছেন আম আদমির অঞ্জনা পার্চাকে ৷ গেরুয়া শিবিরের রবি পেয়েছেন 58 হাজার 217টি ভোট ৷ অঞ্জনার ঝুলিতে 57 হাজার 825 ভোট ৷ দু'জনের ভোট শতাংশ যথাক্রমে 46.1 শতাংশ এবং 45.79 শতাংশ ৷ এদিকে কংগ্রেসের অমরদীপ 52 হাজার 70 ভোটে পরাজিত হয়েছেন আপ প্রার্থীর কাছে ৷ তাঁর প্রাপ্ত ভোট 6 হাজার 147, শতাংশে 4.87 ৷

সংখ্যালঘু অধ্যুষিত সিলামপুরে 50-55 শতাংশ মুসলিম ৷ এখানে মানুষ আপকেই জিতিয়েছে ৷ এই কেন্দ্রে 13 জন প্রার্থী নির্বাচনে লড়েছিলেন ৷

গত তিনটি বিধানসভা নির্বাচনে আপ-এর জনকল্যাণকর প্রকল্পগুলির ফলে ভালো সাড়া মিলেছিল ৷ কিন্তু বিজেপির ম্যানিফেস্টো আরও উন্নত সুবিধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দিল্লিবাসীকে ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আরও ভালো শিক্ষা ব্যবস্থার কথা দিয়েছিলেন ৷ তিনি দিল্লিতে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সামনাসামনি কথা বলেছিলেন ৷ যমুনার জল দূষিত বিতর্কে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী নায়াব সিং সাইনি নিজে যমুনার জল পান করে দেখিয়েছেন ৷ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ কেজিরওয়ালকে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন, তিনি যমুনায় নেমে স্নান করে দেখান ৷

দিল্লি বিধানসভা ভোটের মাত্র চারদিন আগে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বাজেট পেশ করেন ৷ 12 লক্ষ টাকা পর্যন্ত কর ছাড়ের কথা ঘোষণা করা হয় কেন্দ্রীয় বাজেটে ৷ এছাড়া বিকাশপুরীর আবর্জনার ইস্যু নিয়ে বিজেপি যে বিতর্ক তৈরি করেছিল, তা তাদের পক্ষেই গিয়েছে ৷ ভোটের দিন অর্থাৎ 5 ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী মোদি মহাকুম্ভে গিয়ে স্নান করেন ৷ সেই ছবি সোশাল মিডিয়ায় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছিল ৷

বিজেপির তারকা প্রচারক ছিল 40 জন ৷ সবদিক দিয়ে তাঁরা আপকে ঘিরে প্রচার করেছিলেন ৷ 27 বছর পর বিজেপি যে শুধু জিতেছে তাই নয়, বিপুল জয় পেয়েছে ৷ 70টি আসনের মধ্যে 48টিতেই পদ্মফুল ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.