ঢাকা, 6 অগস্ট: ঢাকার যশোর জেলায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন চাকলাদারের হোটেলে অগ্নিসংযোগ করল আন্দোলনকারীরা ৷ আর সেই আগুনেই জীবিত পুড়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্ততপক্ষে 24 জন ৷ তাঁদের মধ্যে একজন ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে ৷ সংবাদসংস্থা পিটিআই স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এবং হাসপাতাল সূত্রকে উল্লেখ করে এমনটাই জানিয়েছে ৷
জানা গিয়েছে, নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই হোটেলের অতিথি ছিলেন ৷ সোমবার শেষরাতে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা জাবির ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে আগুন ধরিয়ে দেয় ৷ সেই সময় হোটেলের ভিতরেই ছিলেন সকলে ৷ সেই আগুনের জীবিত দগ্ধ হন সকলে ৷ ঘটনাস্থলেই অধিকাংশের মৃত্যু হয় ৷ জানা গিয়েছে, ঢাকার যশোর জেলার হোটেলটি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন চাকলাদারের ৷ সেই ক্ষোভেই হোটেলটিতে অগ্নিসংযোগ করা হয় ৷ ঘটনায় নিহতদের মধ্যে একজন ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক রয়েছে বলে সংবাদস্থা পিটিআই-কে জানিয়েছেন বাংলাদেশের এক সাংবাদিক ৷
তিনি এও জানিয়েছেন, যশোর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেছেন, তাঁরা এখনও পর্যন্ত মোট 24টি দেহ উদ্ধার করেছেন ৷ তবে, হোটেলের কর্মচারীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যে হোটেলের ঘরগুলি থেকে আরও অনেক দেহ উদ্ধার হতে পারে ৷ কারণ, হোটেল কর্তৃপক্ষের হিসেব অনুযায়ী, ঘটনার সময় আরও অনেক অতিথি সেখানে ছিলেন ৷ সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, অজ্ঞাত পরিচয় ভিড় হঠাৎই হোটেলে হামলা চালায় ৷ তারা সকলেই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিল ৷ সবার আগে হোটেলের নিচেরতলার আগুন ধরিয়ে দেয় ৷ যা মুহূর্তের মধ্যে উপরতলায় ছড়িয়ে যায় ৷
বাংলাদেশের বিভিন্ন সূত্র থেকে বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থকদের বাড়ি, দোকান ও ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে ৷ এমনকী ঢাকায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে অবস্থিত কেন্দ্রীয় দফতরগুলিকে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা ৷ শনিবার রাত থেকে দ্বিতীয় দফায় রক্তিক্ষয়ী আন্দোলন শুরু হওয়ার পর সোমবার দুপুরে পদত্যাগ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৷ বিকেলে তিনি নিজের বাসভবন থেকে প্রথম হেলিকপ্টার ও পরে বাংলাদেশ সেনার বিমানে দেশে ছেড়ে ভারতে আসেন ৷
হাসিনা দেশ ছাড়লেও, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি ৷ সেনার হাতে বাংলাদেশের ক্ষমতা চলে গেলেও, সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে আসেনি ৷ বরং তা কয়েকগুণ বেড়েছে ৷ এই পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের মূর্তি ভেঙে ফেলে আন্দোলনকারীরা ৷ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৷ আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে, আওয়ামী লীগের প্রাক্তন মন্ত্রীদের বাড়িতে ৷ এই অবস্থায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে, জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা করেন ৷ কিন্তু, তার পরেও সেদেশের সংসদ ভবনে ঢুকে ভাঙচুর চালায় আন্দোলনকারীরা ৷