নয়াদিল্লি, 19 ডিসেম্বর: রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবে অনেক ত্রুটি রয়েছে ৷ এই প্রস্তাব শুধুমাত্র তাঁর সম্মানহানির উদ্দেশ্যেই আনা ৷ এমনই দাবি করে বৃহস্পতিবার প্রস্তাব খারিজ করলেন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিং ৷ শুধু তাই নয়, তাঁর আরও দাবি জগদীপ ধনকড়ের নামের বানানটাও বিরোধী সাংসদরা ঠিক করে লিখতে পারেননি।
গত 10 ডিসেম্বর সংসদের উচ্চকক্ষের দুই সাংসদ জয়রাম রমেশ ও নাসির হুসেন এই প্রস্তাব পেশ করেছিলেন ৷ স্বাক্ষর করেছিলেন 60 জন বিরোধী সাংসদ ৷ 25 নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম থেকেই আদানি ইস্যুতে উত্তাল সংসদের দুই কক্ষ ৷ এরইমধ্যে রাজ্যসভার বিরোধী সাংসদরা চেয়ারম্যান ধনখড়ের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেন ৷ সংসদের 72 বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও চেয়ারম্যান বা উপ-রাষ্ট্রপতির অপসারণ চেয়ে অনাস্থা প্রস্তাব পেশের ঘটনা ঘটে ৷
Detailed ruling has been given by the Deputy Chairman on the communication received on 10th December 2024 under Article 67(b) of the constitution on the motion of no-confidence against the Vice-President placed on the table of the Rajya Sabha.@VPIndia #RajyaSabha pic.twitter.com/G0XzZzlBG3
— SansadTV (@sansad_tv) December 19, 2024
এদিকে এদিন সকাল থেকেই সংসদ চত্বরে কংগ্রেস ও বিজেপি সাংসদদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতি ৷ এর মধ্যে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান ধনখড় অধিবেশনে জানান, অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বার্তা শোনাবেন মহাসচিব পিসি মোদি ৷ সেই মতো তিনি সংসদের উচ্চক্ষে ডেপুটি চেয়ারম্যানের বার্তা পাঠ করে শোনান ৷
অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করা প্রসঙ্গে ডেপুটি চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, এই নোটিশ ভুলে ভর্তি ৷ এমনকী পুরো নোটিশে চেয়ারম্যানের নামের বানানটাও ঠিক করে লেখা হয়নি ৷ ভিডিয়ো ও তথ্যগুলি এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়নি ৷ সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টের ভিত্তিতে লিঙ্কগুলি দেওয়া হয়েছে ৷ এর সত্যতা যাচাই করা হয়নি ৷ এরকম কাজ শুধুমাত্র উপ-রাষ্ট্রপতির অবমাননার উদ্দেশে করা হয়েছে ৷ তাঁকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হয়েছে ৷ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে কালিমালিপ্ত করতে এই অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিশ পেশ করা হয়েছিল ৷
ডেপুটি চেয়ারম্যান এই ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে উল্লেখ করেছেন ৷ বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের উচ্চস্তরীয় সাংবিধানিক পদকে ইচ্ছাকৃতভাবে কালিমালিপ্ত করার জন্য় এই নোটিশ দেওয়া হয়েছে ৷ সংবিধানের 67(বি) অনুচ্ছেদের আওতায় উপ-রাষ্ট্রপতির অপসারণ চেয়ে এই নোটিশ দিতে হলে কমপক্ষে 14 দিন আগে পেশ করতে হয় ৷
চেয়ারম্যান মনে করেন, এক্ষেত্রে 10 ডিসেম্বর পেশ করা নোটিশ নিয়ে 24 ডিসেম্বরের পর আলোচনা করা যেত ৷ কিন্তু ততদিনে অধিবেশন শেষ হয়ে যাবে। বর্তমানে কাউন্সিল অফ স্টেটের 266তম অধিবেশন চলছে ৷ এই অধিবেশনের আগাম নোটিশ দেওয়া হয়েছিল 6 নভেম্বর ৷ সেই অনুসারে 25 নভেম্বর অধিবেশন শুরু হয় এবং 20 ডিসেম্বর তা শেষ হওয়ার কথা ৷ এই বিষয়টি যাঁরা নোটিশে স্বাক্ষর করেছেন, তাঁদের সবার জানার কথা ৷ তারপরও হাতে সময় থাকতে খাতকে নোটিশ দেওয়া হল না কেন?