শিলিগুড়ি, 19 ডিসেম্বর: চা বাগান শ্রমিকদের ফুটবলের মতো ব্যাবহার করা হচ্ছে। বন্ধ চা বাগান এবং শ্রমিকদের বকেয়া নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করছে না কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার ৷ বৃহস্পতিবার এমনই অভিযোগ তুলে সরব হলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী অনুরাধা তলোয়ার ৷
এদিন শিলিগুড়িতে এক সাংবাদিক বৈঠকে তরাই-ডুয়ার্সের একাধিক চা বাগানে অনিয়ম, দূর্নীতি ও দালালরাজের অভিযোগ তোলেন অনুরাধা তলোয়ার ও পশ্চিমবঙ্গ চা মজদুর সমিতি। তরাই-ডুয়ার্সের একাধিক চা বাগানের সমস্যা নিয়ে এদিন উত্তরবঙ্গের যুগ্ম শ্রম আধিকারিকের দ্বারস্থও হয়েছিলেন তিনি।
তাঁর দাবি, উত্তরবঙ্গের শুধু মাত্র দুটি জেলা আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলার 29টি চা বাগানের শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড বাবদ 79 কোটি 52 লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তার জেরে অন্তত 15 হাজার শ্রমিক ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। দ্রুত রাজ্য কিংবা কেন্দ্রীয় সরকার পদক্ষেপ না নিলে আইনি পথ অবলম্বনের কথাও জানান অনুরাধা তলোয়ার।
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অনুরাধা তলোয়ার বলেন, "চা বাগানের সমস্যা নিয়ে আধিকারিদের কাছে গেলে তাঁরা শ্রমিকদের ফুটবলের মতো ব্যবহার করেন। এক আধিকারিক থেকে অন্য আধিকারিক, আবার সেখান থেকে অন্য আধিকারিকের কাছে পাঠানো হচ্ছে। চা বাগানের প্রভিডেন্ট ফান্ড খাতেই প্রায় 80 কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। লোক আদালতে প্রায় 2022 ও 23 সালে বকেয়া মেটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মালিকপক্ষ সেই নির্দেশেরও তোয়াক্কা করছে না।"
সংগঠনের কার্যকরী কমিটির সদস্য বিনয় কেরকেট্টা বলেন, "অদ্ভুত বিষয় হল চা বাগানের দালালরা জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে তার ভুয়া সংশাপত্র বানিয়ে বীমার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ডিমডিমা চা বাগানে তিনটে ও গুলচানঝার চা বাগানে একটি এমন অভিযোগ সামনে এসেছে। ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতারও করা হয়। শুধু তাই নয়। দালালরা প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকাও শ্রমিকদের ভুল বুঝিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে।"
জানা গিয়েছে, 29টি চা বাগানের বকেয়ার মধ্যে শুধু মাত্র আলিপুরদুয়ার জেলার 19টি চা বাগানেই প্রভিডেন্ট ফান্ড বাবদ 44.8 কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। অন্যদিকে, জলপাইগুড়ি জেলার 10টি চা বাগানে বকেয়া প্রায় 34 কোটি টাকা। 2022 সাল থেকে 2023 সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আলিপুরদুয়ার জেলার সুভাষীনি, তোর্সা, নাগেশ্বরী, বাগরাকোট ও কিলকট চা বাগান কর্তৃপক্ষকে লোক আদালতের তরফে বকেয়া মেটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে সেই নির্দেশ এখনও কার্যকরী করেনি রাজ্যের শ্রম দফতর বলে অভিযোগ।