নয়াদিল্লি, 12 অগস্ট: হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের তরফে সেবির চেয়ারপার্সন মাধবী বুচের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা নিয়ে কংগ্রেস তোপ দেগেছে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ৷ লোকসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের রাহুল গান্ধি এই নিয়ে সেবির নিরেপক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ৷ তাঁর দাবি, শেয়ার মার্কেটের নিয়ন্ত্রক এই সংস্থার নিরপেক্ষতার সঙ্গে আপোস করা হয়েছে ৷ তিনি পুরো বিষয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটি গড়ে তদন্তের দাবি তুলেছেন ৷
তিনি এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধেও সরব হয়েছেন ৷ তাঁদের দাবি, যৌথ সংসদীয় কমিটি গড়ে তদন্ত করানো নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভয় পাচ্ছেন ৷ তিনি মনে করেন, এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করে তদন্ত করানো উচিত ৷ কারণ, তদন্তকারী সংস্থা সেবিরই এই দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে ৷
সোশাল মিডিয়ায় করা পোস্টে রাহুল গান্ধি লিখেছেন, "সেবির চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কারণে ছোট-খুচরো বিনিয়োগকারীদের সম্পদ রক্ষা করার জন্য ন্যস্ত সিকিউরিটি নিয়ন্ত্রক সেবির সততার সঙ্গে গুরুতরভাবে আপোস করা হয়েছে ।"
লোকসভার বিরোধী দলনেতার আরও বক্তব্য, ‘‘সারা দেশের সৎ বিনিয়োগকারীরা সরকারের কাছে জানতে চাইছে: কেন সেবি চেয়ারপার্সন মাধবী পুরি বুচ এখনও পদত্যাগ করেননি ? বিনিয়োগকারীরা তাঁদের কষ্টার্জিত অর্থ হারালে, কাকে দায়ী করা হবে ? প্রধানমন্ত্রী মোদি, সেবি চেয়ারপার্সন, নাকি গৌতম আদানি ?’’
প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দেগে তিনি বলেন, "এটা এখন অনেকটাই পরিষ্কার যে কেন প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র) মোদি জেপিসি (যৌথ সংসদীয় কমিটি) তদন্তকে এত ভয় পান এবং এটি কী প্রকাশ করতে পারে ।"
কংগ্রেসের তরফে মাধবী বুচেরও অপসারণ দাবি করা হয়েছে ৷ কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে জানান, 2023 সালে হিন্ডেনবার্গ যে অভিযোগ তুলেছিল, তার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের সেবির তরফে জানানো হয় যে আদানির কোনও দোষ নেই ৷ কিন্তু এখন সেবিরই এই দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ সামনে এসেছে ৷
খাড়গে বলেন, "স্টক মার্কেটে ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিনিয়োগকারীরা মূলত মধ্যবিত্ত ৷ তাঁরা তাঁদের কষ্টার্জিত অর্থ বিনিয়োগ করেন ৷ তাঁদের রক্ষা করা দরকার ৷ কারণ তাঁরা সেবিকে বিশ্বাস করেন । এই বিশাল কেলেঙ্কারির তদন্তের জন্য একটি যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্ত অপরিহার্য ৷’’
এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদিকেও নিশানা করেছেন খাড়গে ৷ তাঁর দাবি, সাত দশকের কঠোর পরিশ্রমে ভারতে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলি গড়ে উঠেছে ৷ সেই প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে আপোস করে নিজের বন্ধু (আদানি)-কে রক্ষা করবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি, যদি না যৌথ তদন্ত কমিটি গড়ে তদন্ত হয় ৷
উল্লেখ্য, মার্কিন সংস্থা হিন্ডেন রিসার্চ শনিবার দাবি করেছে যে সেবির চেয়ারপার্সন মাধবী বুচ ও তাঁর স্বামীর এমন সব শেয়ারে বিনিয়োগ করেছেন, যেখান টাকা এসেছে আদানির কাছে ৷ যদিও মাধবী বুচ ও তাঁর স্বামী এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ৷ আদানি গোষ্ঠীও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে ৷ তারা জানিয়েছে, সেবির চেয়ারপার্সন বা তাঁর স্বামীর সঙ্গে আদানি গোষ্ঠীর কোনও বাণিজ্যিক সম্পর্ক নেই ৷