কলকাতা, 20 ডিসেম্বর: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে সওয়াল করায় শাস্তির মুখে ওয়েবকুপার সহ-সভাপতি মণিশঙ্কর মণ্ডল। একইভাবে শাস্তির খাড়া নেমে এসেছে মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি প্রীতম হালদারের বিরুদ্ধেও। শুক্রবার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা ওয়েবকুপার সভাপতি ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, দল বিরোধী কাজের জন্য এই দু'জনকে তৃণমূল কংগ্রেসের সমস্ত পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে ৷
প্রসঙ্গত, ওয়েবকুপার সহ-সভাপতি মণিশঙ্কর মণ্ডল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ট বলেই পরিচিত। এমনকী লোকসভা নির্বাচনের পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দিয়ে 'কলকাতায় গেম চেঞ্জার দাদা' বলে পোস্টার দিয়েছিলেন তিনি। এখানেই শেষ নয়, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার দল ছাড়ার পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্য প্রশাসনে এনে প্রশাসনকে আরও শক্তপোক্ত করার দাবিও তুলেছিলেন তিনি। এদিন তাঁর বিরুদ্ধেই দল বিরোধী কাজ করার অভিযোগে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে, তাহলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে প্রচার এবং তাঁর পক্ষে সওয়াল করেই দল থেকে বহিষ্কার হতে হল তাঁকে।
অন্যদিকে, তৃণমূল যুব কংগ্রেসের তরফ থেকেও উত্তর কলকাতায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে টাকা তোলার অভিযোগে দল থেকে সাসপেন্ড করা হল যুবনেতা তরুণ তেওয়ারিকে ৷ তাঁর বিরুদ্ধেও দল বিরোধী কাজকর্ম করার অভিযোগ ওঠায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী সায়নী ঘোষ প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে তাঁর সাস্পেনশনের কথা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নিয়ে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছিল তরুণ তেওয়ারির বিরুদ্ধে। এক ব্যবসায়ীর মাকে আটকে রেখে এই যুবনেতা তিন লক্ষ টাকা তোলে বলে অভিযোগ ওঠে। এই নিয়ে, তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও হয়েছিল। এই অবস্থায় দল থেকে তাকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করা হল।
এদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর বহিষ্কৃত ওয়েবকুপার নেতা মণিশঙ্কর মণ্ডল এই সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উপড়ে দিয়েছেন। সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, "আপনারা বহিষ্কারের কথা বললেও অফিসিয়ালি কোনও কমিউনিকেশন আমার সঙ্গে এখনও পর্যন্ত হয়নি। তবে সংবাদ মাধ্যম থেকেই বহিষ্কারের খবর পাচ্ছি।"
এদিন ব্রাত্য বসু সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, "ব্রাত্যবাবু একাধারে শিক্ষামন্ত্রী, তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষা সেলের চেয়ারম্যান, একই সঙ্গে ওয়েবকুপার সভাপতি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন এক ব্যক্তি এক পদের কথা বলছেন, তখন তিনি তিনটি পদ দখল করে বসে আছেন।"
এদিন তিনি এ-ও দাবি করেছেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে দীর্ঘদিন ধরে সওয়াল করার জন্যই তাঁর ওপর এই শাস্তির খাড়া নেমে এসেছে। তিনি এ-ও দাবি করেন, আগেও তাঁকে বহিষ্কারের ভয় দেখানো হয়েছিল। কিন্তু, তার পরেও তাঁকে দমাতে না পেরে অবশেষে এই সিদ্ধান্ত হয়তো নেওয়া হয়েছে বলে মনে করেন মণিশঙ্কর।