হাড়োয়া, 17 অগস্ট: হাড়োয়ায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যকে গুলি করে খুনের ঘটনায় চারদিনের মাথায় পুলিশের জালে সুপারি কিলার । ধৃতের নাম অমিত গায়েন । গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বসিরহাটের একটি আস্তানা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই 'ভাড়াটে খুনি'কে । পুলিশ সূত্রে খবর, হাড়োয়াকাণ্ডে প্রত্যক্ষ যোগ রয়েছে এই ব্যক্তির । ঘটনার দিন কয়েকজন সঙ্গে থাকলেও গুলি চালিয়েছিল অমিতই । জেলে বসেই তাকে খুনের সুপারি দেওয়া হয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ । তবে কে খুনের বরাত দিয়েছিল, কত টাকার রফা হয়েছিল তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে । সে বিষয়ে তথ্য পেতে ধৃতকে আরও জেরা করার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত অমিতের বাড়ি বসিরহাট পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে । 2018 সালে মাদক মামলায় গ্রেফতার হন তিনি । মাস দেড়েক আগে জেল থেকে ছাড়া পান তিনি । তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, তৃণমূলের জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য শেখসাহেব আলি খুনের মাস্টারমাইন্ডের সঙ্গে ধৃতের আলাপ হয়েছিল জেলেই । তাহলে কি জেলে বসেই তৃণমূল নেতা খুনের ব্লুপ্রিন্ট তৈরি হয়েছিল? নাকি জেল থেকেই অন্য কেউ কন্ট্রোল করেছিল গোটা ঘটনাটি? সেই প্রশ্নেরই এখন উত্তর পাওয়ার চেষ্টা করছে তদন্তকারী অফিসারেরা ।
তবে পুলিশ একপ্রকার নিশ্চিত যে এই খুনের ঘটনায় অন্তত 10 থেকে 12 জন জড়িত । খুনের দিন ঘটনাস্থলে 3-4 জন উপস্থিত থাকলেও বাকিরা অন্য কোথায়ও থেকে নজর রাখছিল গোটা ঘটনাটির ওপর । কিন্তু কেন ওই তৃণমূল নেতাকে গুলি করে নৃশংসভাবে খুন করা হল, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় রয়েছে তদন্তকারীরা ।
যদিও খুনের পর নিহতের মেয়ে সিমরন পারভীন অভিযোগ করেছিলেন, সংগঠনে তাঁর বাবার প্রভাব ঠেকাতেই তৃণমূলের অপর গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে সাহেব আলিকে । অর্থাৎ খুনের ঘটনায় দলেরই এক পক্ষের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন নিহতের মেয়ে । পুলিশ সেই অভিযোগও ইতিমধ্যে খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে । এ দিকে ধৃত অমিত গায়েনকে বৃহস্পতিবার দুপুরে বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ।
আরও পড়ুন: গুলিতে নিহত 'বিধায়ক ঘনিষ্ঠ' জয়ী তৃণমূল প্রার্থী, কাঠগড়ায় দলের অন্য গোষ্ঠী
গত 13 অগস্ট উত্তর 24 পরগনার হাড়োয়ায় গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় খাসবালান্দা গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়ী তৃণমূল সদস্য শেখ সাহেব আলির দেহ । ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি । সেদিন রাতে দলের অঞ্চল সভাপতির সঙ্গে দেখা করে বাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন সাহেব আলি । সঙ্গে ছিলেন এক সঙ্গীও । সামলা বাজার চত্বরে বাইক আসতেই তাঁর পথ আটকে দাঁড়ায় বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী । কিছু বুঝে ওঠার আগেই এলোপাথাড়ি গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয় তৃণমূল নেতার শরীর । ঘটনার পর কেন অভিযুক্তদের নাগাল মিলছে না, তা নিয়ে পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন উঠেছিল । শেষে খুনের ঘটনায় প্রথম গ্রেফতার হল বুধবার রাতে ।