গাইঘাটা, 13 জুন : তপশিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের জন্য অনুমোদিত সাবসিটি লোন টাকার বিনিময়ে অন্যান্য অবস্থাপন্ন লোকেদের পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল পরিচালিত সুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান ও পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে (Corruption complaints against Sutia Gram Panchayet)। এসসি-এসটিদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে লোন না-দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে । উত্তর 24 পরগনার গাইঘাটা ব্লকের সুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা । এই বিষয়ে ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা ।
সুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতটি তৃণমূল পরিচালিত । অভিযোগ, এই অঞ্চলের প্রধান মিহির বিশ্বাস, উপপ্রধান স্বপন বিশ্বাস ও পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ বিকাশ বিশ্বাস বিগত চার বছর ধরে মহিলা সমৃদ্ধি যোজনা ও এসসিপি লোনের টাকা তপশিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষদের বঞ্চনা করে, টাকার বিনিময়ে সাধারণ অবস্থাপন্ন মানুষদের তা পাইয়ে দিচ্ছেন ।
এই বিষয়ে 9 জুন দশজন অবস্থাপন্ন লোন প্রাপকের তালিকা-সহ কয়েকজন গ্রামবাসী গাইঘাটার বিডিওর কাছে অভিযোগ জানান । তাঁদের অভিযোগ, "অনেক এসসি-এসটি সম্প্রদায়ের লোকেরা বারবার সাবসিটি লোনের জন্য কাগজপত্র জমা দিয়েও লোন পাচ্ছে না । কিন্তু এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য বিকাশ বিশ্বাস টাকার বিনিময় জেনারেলদের সেই লোন পাইয়ে দিচ্ছেন । যাঁদেরকে এই লোন পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে তাঁরা যথেষ্ট অবস্থাপন্ন ৷ প্রধান তাঁর সহ-কর্মীদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজটি ব্যবসায়িক ভিত্তিতে করে চলেছেন ।"
একই অভিযোগ সুটিয়ার বিজেপি নেতা বাবলু দাসের । তিনি বলেন, " পাঁচ-ছ'বছর ধরে প্রধান, উপ-প্রধান ও পঞ্চায়েত সদস্য বিকাশ বিশ্বাস লোকের কাছ থেকে সাতশো, হাজার, দু'হাজার করে টাকা নিয়ে এসসি-এসটিদের লোন অবস্থাপন্ন লোকেদের পাইয়ে দিচ্ছেন ৷ যাদের বড় বাড়ি আছে, সরকারি চাকরি করে এমন পরিবারকে লোন দেওয়া হচ্ছে ৷ প্রধান, উপ-প্রধান এবং বিকাশ বিশ্বাসকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি । তা না হলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব ৷"
যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মিহির বিশ্বাস । তাঁর কথায়, "যেসব মহিলারা জন্মসূত্রে এসসি কিন্তু অবস্থাপন্ন ঘরে বিয়ে হয়েছে তাঁরা হয়তো লোন পেতে পারেন । কিন্তু কারা পেয়েছে আমার জানা নেই । এত বড় পঞ্চায়েত এলাকায় কে এসসি কে জেনারেল সবসময় আমার পক্ষে জানা সম্ভব নয় । মেম্বাররা যেভাবে লিস্ট পাঠায় সেইভাবে লোন দেওয়া হয় । কোথায় কারা অভিযোগ করেছে তা আমার জানা নেই ৷"
বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোবিন্দ দাস । তিনি বলেন, "এসসিপি লোন এসসি-এসটিদের দেওয়ার কথা । তবে যদি কোনও সাধারণ ক্যাটাগরির লোক পায় তাহলে আমরা এর সমর্থন করি না । অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দেখা হবে ৷"