ব্যারাকপুর, 16 ডিসেম্বর: সংসদে স্মোকক্যান কাণ্ডে তোলপাড় গোটা দেশ! এই নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই নিত্যনতুন তথ্য সামনে আসছে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের হাতে । যত দিন যাচ্ছে ততই সংসদ হানায় বাংলার যোগ জোরালো হতে শুরু করেছে । ইতিমধ্যে বেশকিছু নামও উঠে এসেছে । সেই সূত্র ধরে তদন্ত প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে বর্তমানে । সংসদে স্মোক-বম্ব হানার কয়েক সেকেন্ডের ভিডিয়ো দেখে রীতিমতো আঁতকে উঠেছে দেশবাসী । এবার সেই অভিজ্ঞতার কথাই শোনালেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং ৷
ঘটনার সময় সংসদের লোকসভা ভবনে অন্যান্য সাংসদের মতো হাজির ছিলেন অর্জুনও । সংসদের ঠিক কত নম্বর আসনে তিনি বসেছিলেন? ঘটনার সময় তিনি কী দেখেছিলেন? সেই সময় কতটা আতঙ্ক কাজ করেছিল তাঁর মনে? দিল্লি থেকে ফিরে সেই সমস্ত প্রশ্নেরই সোজাসাপ্টা উত্তর দিয়েছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ ও তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা অর্জুন সিং ।
অর্জুন সিংয়ের কথায়, "সংসদ ভবনে সেদিন আমার নির্ধারিত আসন নম্বর ছিল 349 । তবে সেই আসনে না-বসে পাশের একটি ফাঁকা আসনে বসেছিলাম । নম্বর ছিল 353 । সেই সময় জিরো আওয়ার্সে বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বলছিলেন । তখনই এক হামলাকারী দর্শক আসন থেকে নীচে লাফ দেয়।"
তিনি বলেন, "353 এবং 345 নম্বর আসনের ঠিক ওপরের দর্শক আসনে হামলাকারীরা বসেছিল । আমি কানে হেডফোন লাগিয়ে খগেন মুর্মুর বক্তব্য শুনছিলাম । তখন দুম করে কিছু পড়ার আওয়াজ শুনতে পাই। তাকিয়ে দেখি, এক হামলাকারী নীচে লাফ দিল। দেখে মনে হল সে রীতিমত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত । তাকে ধরতে গেলে সে লাফিয়ে লাফিয়ে এগোতে শুরু করে ৷ তারপর জুতো থেকে স্মোক-ক্যান বার করে স্প্রে করে । তখন সাংসদ হনুমান বেনিওয়াল তাকে ধরে ফেলে । এরপর আরও এক হামলাকারী আমার 353 সিটের পিছন থেকে ‘তানাশাহি নেহি চলেগা’ স্লোগান দিতে দিতে এগোতে থাকে । তাকে যখন আমি ধরতে যাই তখন সে স্মোক ক্যান ফাটিয়ে দেয়।" আচমকা স্মোকক্যান ফাটানোর ধোঁয়ায় সংসদের ভিতরে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়ায় । ছোটাছুটি শুরু করে দেন অনেক সাংসদ। অর্জুন সিং বলেন, "জীবনে কোনও পরিস্থিতিতে কাউকেই কখনও ভয় করিনি । দ্বিতীয় হামলাকারীকে আমিই জাপটে ধরে সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে ফেলে দিই । তারপর রাগে কে, কী করেছে সেটা তো সবারই জানা।"
এদিকে, এই ঘটনার পরই সংসদের নিরাপত্তা নিয়ে সরব হয়েছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং । তাঁর মতে,"সংসদে নিরাপত্তায় খামতি রয়েছে । ওটা স্মোকক্যান না হয়ে আরডিএক্স বা আমনিয়া গ্যস হলে বড় কোনও অঘটনও ঘটতে পারত ।" অন্যদিকে, সংসদে হানার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরতে গিয়ে সাংসদ অর্জুন সিং আরও বলেন, "জুতো কেটে তার সোলের ভিতরে সম্ভবত স্মোক ক্যান নিয়ে এসেছিল হামলাকারীরা । গণধোলাইয়ের পর পুলিশ এবং এজেন্সির লোকেরা ওদের ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় হাসতে হাসতে চলে গেল ।"
আরও পড়ুন: