বারাসত, 14 জুলাই: বর্ষা এখনও পুরোদমে শুরু হয়নি । তার আগেই ডেঙ্গি প্রাণ কাড়ল 13 বছরের এক কিশোরীর । মৃতের নাম সায়নিকা হালদার। দুঃখজনক ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর 24 পরগনার জেলাসদর বারাসতে । জানা গিয়েছে, হাসপাতাল রেজিস্ট্রেশন ফর্মে কিশোরীর ডেঙ্গি এনএসওয়ান পজিটিভ লেখা থাকলেও ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করা রয়েছে সেপটিসেমিয়া শক। অর্থাৎ মাল্টি অরগান ফেলিওর হওয়ার কারণেই মৃত্যু হয়েছে ওই কিশোরীর। ঘটনার জেরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কাজীপাড়ার প্রমোদনগর এলাকায়।
কিশোরীর অকাল মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পরিবার। 13 বছরের মেয়েকে হারিয়ে কার্যত মুষড়ে পড়েছেন বাবা সঞ্জয় হালদার-সহ পরিবারের অন্যান্যরা। প্রত্যেকেই তাঁর মৃত্যুর জন্য এলাকার নিকাশি নালার অপরিচ্ছন্নতা এবং জমা জলে মশার বাড়বাড়ন্তকেই দায়ী করেছেন। এরজন্য পৌর কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় কাউন্সিলরের ভূমিকার দিকেও আঙুল তুলেছেন পরিবারের সদস্যরা। যদিও তা অস্বীকার করে সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাবকেই দুষেছেন পৌরসভার 22 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর কৃষ্ণা সাহা।
মৃত কিশোরীর বাবা সঞ্জয় হালদার বলেন, "রবিবার থেকে মেয়ে জ্বরে ভুগছিল। প্রথমে বমি শুরু হলে পরিচিত এক ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই। ওষুধ দিলে বমি বন্ধও হয়ে যায়। কিন্তু ওষুধ খেলেও জ্বর কমার কোনও লক্ষণ ছিল না ৷ ধীরে ধীরে মেয়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তখন সেই পরিচিত ডাক্তারের পরামর্শে মেয়েকে ভর্তি করা হয় বারাসত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখানে রক্ত পরীক্ষা করা হলে মেয়ের ডেঙ্গি ধরা পড়ে।"
পরিবার সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সেখানে চিকিৎসা চললেও কিছুতেই শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল না কিশোরীর। শেষে বুধবার তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে। সেখানেও রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে কিশোরীর এনএসওয়ান পজিটিভ ডেঙ্গি ধরা পড়ে। চিকিৎসকদের শত চেষ্টা সত্বেও বাঁচানো যায়নি 13 বছরের সায়নিকাকে। বৃহস্পতিবার রাত বারোটা নাগাদ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সে। এই খবর চাউর হতেই এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।
আরও পড়ুন: কলকাতায় বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা, পরিস্থিতির দিকে নজর পৌরনিগমের
পরিবারের তরফে অভিযোগ করে জানানো হয়েছে, এতদিন এলাকার অপরিচ্ছন্নতা এবং নিকাশি নালা নিয়ে বারবার স্থানীয় কাউন্সিলর ও পৌর কর্তৃপক্ষদের জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি ৷ কিন্তু সায়নিকার মৃত্যুর পড়ে এলাকায় ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হয়েছে, মশা নিধনের তেল স্প্রে করা হয়েছে। মৃত্যুর আগে তৎপর হলে এই অঘটন এড়ানো যেত বলে মনে করছেন তাঁরা।