পুরুলিয়া, 19 জুলাই : এখন ভরা শ্রাবণ মাস ৷ হিন্দু মতে, এই পবিত্র মাসের প্রতি সোমবার শিবের মাথায় জল ঢেলে পূণ্য অর্জনের রীতি রয়েছে ৷ এই সময়টায় বোল বোম ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরুলিয়ার প্রখ্যাত শিব মন্দির চিরকা গৌরীনাথ ধাম ৷ বছর বছর ধরে এটাই ছিল চেনা ছবি ৷ তবে করোনা আবহে বদলে গিয়েছে অনেক কিছুই ৷ ভক্তের অভাবে খাঁ খাঁ করছে মন্দির ৷ চরম অর্থকষ্টে দিন কাটছে 60-70টি পুরোহিত পরিবারের ৷
পুরুলিয়ার শিব মন্দির চিরকা গৌরীনাথ ধাম খুবই জাগ্রত হিসেবে পরিচিত ভক্তদের কাছে ৷ চৈত্র সংক্রান্তিতে, শ্রাবণ মাসের সোমবারগুলিতে এবং শিবরাত্রিতে এখানে উপচে পড়ত ভিড় ৷ লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম হত ৷ এই মন্দিরের নাম-ডাক প্রচুর ৷ মনস্কামনা পূরণের জন্য অনেকে আবার মন্দির চত্বরে ধর্না দিয়ে পড়ে থাকতেন ৷ তাঁদের বিশ্বাস ছিল, মহাদেব স্বপ্নাদেশ দেবেন ৷ সেই স্বপ্নাদেশ পেয়েই নাকি ওই পুণ্যার্থী বাড়ি ফিরে যেতেন ! ঝাড়খণ্ডের বোকারো, ধানবাদ, রাঁচি, টাটা থেকে শুরু করে সুদূর কলকাতা থেকেও অনেকে এখানে পুজো দিতে আসতেন ৷ গৌরীনাথ ধাম মন্দিরের নামানুসারেই রয়েছে পুরুলিয়া জেলার গৌরীনাথ ধাম রেল স্টেশন ৷
তবে করোনা কালে থমকে গিয়েছে জীবন ৷ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর মন্দির খুলেছে ৷ তবে ভক্তের সমাগম নেই ৷ ফলে দিন গুজরান করতে হিমশিম খাচ্ছেন পুরোহিতরা ৷ 60-70টি পুরোহিত পরিবারের এখন নিত্যদিনের সঙ্গী অভাব অনটন ৷
মন্দিরের পুরোহিত সুনীল পান্ডে জানালেন, "বর্তমানে আমাদের খুবই কষ্টে দিন কাটছে, যজমানের সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে ৷ এখানে আমরা সব পুরোহিতই এই মন্দিরের উপর নির্ভরশীল ৷"
মন্দিরের আর এক পুরোহিত গয়ারাম পান্ডে আবার দলাদলির শিকার বলে অভিযোগ করেছেন ৷ তাঁর অভিযোগ, তিনি বিজেপি করেন বলে তাঁকে পুরোহিত ভাতা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে ৷
করোনা আবহে ভক্তরা না-এলেও নিষ্ঠা করে পুজো-আচ্চা করে চলেছেন পুরোহিতরা ৷ সুদিনের অপেক্ষায় এখন তাঁদের একমাত্র ভরসা দেবাদিদেব ৷