পুরুলিয়া, 18 সেপ্টেম্বর : সরকারি জমি দখল করে পুকুর ভরাটের অভিযোগ উঠেছিল আগেই । স্থানীয়রা গঠন করেছিল জমি রক্ষা কমিটি । এরপরই স্থানীয় প্রশাসনের তরফে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় । কিন্তু সেই কমিটিতে স্থানীয় কমিটির কোনও সদস্যের নাম নেই । তাই তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল ঝালদা জমি রক্ষা কমিটি।
পুরুলিয়ার ঝালদা শহরের 3 নম্বর ওয়ার্ড । এলাকার প্রায় 700 ডেসিমেল জমি সরকারি ভেস্টল্যান্ড । অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সেই সরকারি জমির পুকুর ভরাট করার এবং বেআইনিভাবে গাছ কাটার কাজ চালাচ্ছিল জমি মাফিয়ারা । এরপরই ঝালদাবাসী 'জমি রক্ষা কমিটি' নামে একটি কমিটি গঠন করে । প্রশাসনের দ্বারস্থ হয় । সরকারি জমিকে রক্ষা করার দাবি জানিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন জানায় তারা । ঘটনা প্রতিবাদে আজ জেলা পরিষদ সভাধিপতির দ্বারস্থ হয় ঝালদা জমি রক্ষা কমিটির সদস্যরা । এরপরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন । পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ঝালদার বনবিভাগ, পুলিশ, ভূমিসংস্কার দপ্তর ও ঝালদা পৌরসভার প্রশাসকদের নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে । কিন্ত সেই তদন্ত কমিটির মধ্যে ঝালদা জমি রক্ষা কমিটির কোনও সদস্যের নাম নেই ।
ঝালদা জমি রক্ষা কমিটির সদস্য চিরঞ্জিব চন্দ্র, শশিভূষণ মিশ্র, অসিত কান্দু । তাঁরা জানান, কয়েকদিন ধরে ঝালদা শহর এলাকার 700 ডেসিমেল সরকারি জায়গা । সেখানে গাছ কাটা হচ্ছিল । পুকুর ভরাটের কাজ চলছিল । আমরা 'জমি রক্ষা কমিটি' গঠন করি । স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন ও বন বিভাগের দ্বারস্থ হই । জেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিয়ে সেই কাজ বন্ধ করে দেয় । পরে জেলা প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে । বনবিভাগ, পুলিশ, ভূমিসংস্কার দপ্তর ও ঝালদা পৌরসভার প্রশাসকদের সেই কমিটির সদস্য করে ।
এইদিকে দীর্ঘ প্রচেষ্টার মাধ্যমে জমি মাফিয়াদের রুখতে জমি রক্ষা কমিটি উদ্যোগ নেয় বলে তাঁদের দাবি । অথচ প্রশাসনের কমিটিতে কোনও সদস্যকেই রাখা হয়নি । জমি রক্ষা কমিটির অভিযোগ, প্রশাসন, পৌরসভা এবং বনদপ্তর এতদিন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে । তাদেরই এই কমিটিতে রাখা হয়েছে । এর তীব্র প্রতিবাদ জানায় তারা । তদন্ত কমিটির নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে ।
কমিটির সদস্যরা বলেন, "জমি রক্ষা কমিটির অন্তত দু'জন সদস্যকে তদন্ত কমিটিতে রাখা হোক । ভবিষ্যতে সরকারি জমিতে যেন আর পুকুর ভরাট এবং গাছ কাটা না হয় । নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে জমি মাফিয়াদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া হোক ।"
এই বিষয়ে জেলা পরিষদ সভাধিপতি সুজয় বন্দোপাধ্যায় বলেন, "ঝালদায় সরকারি জমি আত্মসাৎ করে পুকুর ভরাট এবং বেআইনিভাবে গাছ কাটার অভিযোগ এসেছে । ইতিমধ্যে এই ঘটনার তদন্তের জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে । এই ঘটনার পূর্ণ তদন্ত করে দেখা হবে । ঘটনা সত্যি প্রমাণিত হলে বেআইনি কাজের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।"