পুরুলিয়া, 3 সেপ্টেম্বর : জেলেপাড়া ধীবর সমিতির দুর্গাপুজো ৷ পুরুলিয়া শহরের সর্বজনীন পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম ৷ বিশেষত্ব, দশমী নয়, একাদশীর দিন রীতি মেনে হয় প্রতিমা নিরঞ্জন ৷ চলে আতসবাজির প্রতিযোগিতা ৷
পুজো উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, বহু বছর আগে শহরেরই এক সর্বজনীন মন্দিরে পুজো দিতে গিয়ে অপমানিত হতে হয় ধীবর সম্প্রদায়ের কয়েকজনকে ৷ তারপর আর সে পথ মাড়ায়নি তারা । পুরুলিয়ার ধীবররা নিজেরাই গড়ে তোলেন স্থায়ী মন্দির ৷ তারপর থেকে সেখানেই হয়ে আসছে ধীবর সমিতি দুর্গাপুজো কমিটির পুজো । কমিটির কোষাধ্যক্ষ বিশ্বেশ্বর ধীবর বলেন, "আমাদের পূর্বপুরুষরা নিজেদের জমি-জায়গা মায়ের নামে দান করেন ৷ মাছ ধরে যে পারিশ্রমিক পেতেন সেখান থেকে মন্দির নির্মাণকল্পে অর্থ দান করতেন ৷ নিজেরাই সিমেন্ট, ইট, বালি জোগাড় করে নির্মাণের কাজে হাত লাগাতেন ৷ এভাবেই এই মন্দির তৈরি হয়েছে ৷ "
প্রতি বছর দেড়-দুই মাস আগে থেকেই পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় ৷ পুজোর দিনগুলিতে শুধু রাজ্য বা জেলা নয় প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ড থেকেও হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমায় ৷ মেলা বসে ৷ রাতভর চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ৷ একাদশীতে হয় প্রতিমা নিরঞ্জন ৷ সে দিন দুর্গামন্দিরের পাশেই রাসমেলার মাঠে হয় আতসবাজির প্রতিযোগিতা ৷
এবার 94 তম বছরে পা দিতে চলেছে এই পুজো ৷ কিন্তু কোরোনা পরিস্থিতিতে এখনও পর্যন্ত শুরু হয়নি কোনও প্রস্তুতি ৷ দুর্গাপুজো নিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রশাসনিক কোনও নির্দেশিকা জারি হয়নি ৷ তাই পুজো হবে, কিন্তু কীভাবে তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসেননি উদ্যোক্তারা ।
বিশ্বেশ্বর বলেন, "যে হারে কোরোনা সংক্রমণ বাড়ছে তাতে এ বছর তেমন কিছু করতে পারব না ৷ পুজো হবে কিন্তু সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ৷ দু'টো গেট করা হবে ৷ 10 জন করে দর্শনার্থীকে ভিতরে ঢোকানো হবে ৷ এবং 10 জন করে বাইরে বের করা হবে ৷ গেটের মুখে স্যানিটাইজ়ার রাখা হবে ৷ তবে প্রশাসনের জারি নির্দেশিকা মেনেই পুজোর আয়োজন করা হবে ৷ " কমিটির সেক্রেটারি মাধব ধীবর বলেন,"পুজো হবে ৷ কিন্তু অন্য বছরের মতো নয় ৷ আর অনুষ্ঠান বা মেলা করা নিয়ে প্রশাসন যেমন নির্দেশ দেবে তেমনটাই হবে ৷ "