কাঁথি, 22 মে: বছর পার হলেও আমফানের ক্ষত এখনও সারেনি ৷ 20 মে আমফান আছড়ে পড়ার কারণে ওলট-পালট হয়ে গিয়েছিল সারা রাজ্য ৷ বিশেষ করে উপকূলবর্তী এলাকা ৷ ভেঙে পড়ে একাধিক কাঁচা বাড়ি ৷ মৃত্যু হয় অনেকের ৷ কোথাও দিনের পর দিন বিদ্যুৎ নেই ৷ জল নেই ৷ ঘর নেই ৷ সব ছেড়ে সেন্টারে রাতের পর রাত কাটাতে হয়েছে মানুষকে ৷ সে যেন এক বিভীষিকা ৷ কেউ আর তা মনে করতে চায় না ৷ সেই পরিস্থিতিতে কেউ আর পড়তে চায় না ৷ কিন্তু, এরই মাঝে আবার একটা ঘূর্ণিঝড় আসছে ৷ 26 মে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে আছড়ে পড়বে যশ ৷ আর সব থেকে বেশি ক্ষতির আশঙ্কা উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে ৷
পূর্ব মেদিনীপুরের সমুদ্র উপকূলবর্তী দিঘা, তাজপুর, মন্দারমনি, চাঁদপুর, শংকরপুর, জুনপুট, খেজুরি, নন্দীগ্রাম, হলদিয়া-সহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ এখন রীতিমতো আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ৷ আমফানে ঘর-বাড়ির যেভাবে ক্ষতি হয়েছিল কোথাও সবে মাত্র হয়তো মেরামত হয়েছে ৷ কোথাও এখনও অনেক কাজ বাকি ৷ বলতে গেলে আমফানের স্মৃতি এখনও কেউ ভুলতে পারেনি ৷ আবার আরেকটা ঘূর্ণিঝড়ের ভ্রুকুটি রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে ওই এলাকার মানুষগুলির ৷ রামনগর এক নম্বর ব্লকের চাঁদপুর এলাকায় প্রতিনিয়ত জল গ্রামের মধ্যে ঢুকে যায় । সে ক্ষেত্রে বাঁধ পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে ৷ যশের মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের তরফে নানা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে ৷ কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফে ?
- সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে মাইকিং করা হচ্ছে ৷
- সরকারের তরফে আয়লা সেন্টার করা হয়েছে ৷
- মৎস্যজীবীদের 22 তারিখের মধ্যে সমুদ্র থেকে ফিরে আসতে বলা হয়েছে ৷
- কাঁচা বাড়িতে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ৷
- শুকনো খাবার ও অত্যাবশ্যকীয় জিনিস রাখতে বলা হচ্ছে ৷
- বিভিন্ন জায়গায় বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে ৷
আরও পড়ুন, ঘূর্ণিঝড় যশ নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করল রাজ্য
কিন্তু অনেকের অভিযোগ, যশের মোকাবিলায় সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না ৷ কোথাও কাজ এখনও আটকে রয়েছে ৷ করোনা আতঙ্কে অনেকে কাজ করতে চাইছে না বলে অভিযোগ জানালেন পুষ্প চন্দ নামে এক বাসিন্দা ৷ তিনি আরও জানান, "আমরা সব সময় ভয়ে রয়েছি ৷ কোথায় যাব আমরা ? থাকতে হয় তাই আছি ৷ ভয়েই কাটাচ্ছি সব সময় ৷" সরকারের তরফে আয়লা সেন্টার করা হলেও অনেকে সেখানে করোনার জন্য যেতে ভয় পাচ্ছেন ৷ তাঁরা জানাচ্ছেন, আমরা যেতে চাই ৷ কিন্তু, সেখানে গেলে করোনায় আক্রান্ত হব না তার কি নিশ্চয়তা আছে ? সব মিলিয়ে আমরা নিরাপদে থাকতে চাই ৷
একদিকে করোনা ৷ অন্যদিকে যশ ৷ মানুষ এখন এই দুই আতঙ্কে জর্জরিত ৷ তাঁরা একটু ভাল ভাবে বাঁচতে চাইছে ৷ নিরাপত্তা চাইছে ৷ শান্তি চাইছে ৷