পাঁশকুড়া, ২৯ মার্চ : কোরোনার সংক্রমণ ঠেকাতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল পাঁশকুড়ার সবজি বাজার । নিয়ম মেনে রাতে বাজার না বসিয়ে দিনের বেলায় সামাজিক দূরত্ব মেনেই এলাকার চাষিরা বিক্রি করেছিলেন ফসল । তিন দিন কাটতে না কাটতেই ছবিটা আমূল বদলে গেল গতরাতে । রাজ্যের বনগাঁ, নদিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর সহ একাধিক জেলা থেকে ট্রাকে করে সবজি এসে পৌঁছাল শহরে । কোথাও মানা হল না লকডাউনের সিদ্ধান্ত । আর তা থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা ।
লকডাউনের সময় বাজারগুলিতে ভিড় এড়িয়ে চলার জন্য পদক্ষেপ করেছিল জেলা প্রশাসন । সেই লক্ষ্যে রুটিন মাফিক অল্প সময়ের জন্য খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছিল আগেই । যে কারণে গত তিন দিন ধরে বন্ধ রাখা হয়েছিল পাঁশকুড়ার সবজি আড়তগুলি । স্থানীয় চাষিরা শুধু দিনে তাঁদের পণ্য বিক্রি করছিলেন । সেখান থেকেই কোনও সমস্যা ছাড়াই এলাকার বাসিন্দারা তাঁদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনছিলেন । জেলায় সবজির সংকটের কথা মাথায় রেখে গতরাতে জেলাশাসক পাঁশকুড়ার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন । বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বাজার চালু করা হবে কিন্তু মেনে চলতে হবে সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি । বৈঠক শেষে বাজার শুরু হলেও কোথাও মানা হল না সামাজিক দূরত্ব । অভিযোগ, যে সমস্ত জেলায় ইতিমধ্যেই কোরোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে যেমন নদিয়া সেখান থেকেও একাধিক ট্রাক এসে ভিড়েছে পাঁশকুড়ার বাজারে । যা থেকেই সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন পাঁশকুড়ার বাসিন্দারা ।
এ বিষয়ে পাঁশকুড়া পৌরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর কল্যাণ রায় অভিযোগ করে বলেন, "জেলাশাসক গতরাতে বাজার কমিটির ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে বাজার স্বল্পসংখ্যক ব্যবসায়ীদের নিয়ে চালু করার নির্দেশ দিয়েছিলেন । কিন্তু সেই নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বাইরের জেলাগুলো থেকে একের পর এক ট্রাক ঢুকে আড়তে মাল নিলাম করেছে । এরকম চলতে থাকলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে । পুলিশের তরফে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হলেও কেউই তা মেনে চলেনি । আমরা তাই খুবই আতঙ্কিত।"
বিষয়টি জানার পর পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পার্থ ঘোষ জানিয়েছেন, বাজারে ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য রাতে বাজারে পুলিশ মোতায়েন করা ছিল । তা সত্ত্বেও কেন সামাজিক দূরত্ব মানা হল না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে । নিয়ম না মানলে প্রয়োজনে বাজার ফের বন্ধ করে দেওয়া হবে ।