কলকাতা, 2 ডিসেম্বর: দলে তিনিই শেষ কথা ৷ দলীয় বিধায়কদের একথা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সোমবার তিনি বলেন, "কে কী বলছে শোনার দরকার নেই । আপনারা ভালো করে কাজ করুন, দলে আমি চেয়ারম্যান । সিদ্ধান্ত আমিই নেব ।"
এদিন বিধানসভার নওশার আলি কক্ষে দুপুর একটা থেকে বৈঠকে বসে তৃণমূল পরিষদীয় দল । এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বকসিও । সূত্রের খবর, সেখানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বার্তা দেন যে, শেষ কথা বলবেন তিনিই । দলীয় ক্ষেত্রে নেতা-মন্ত্রীদের শৃঙ্খলার বাঁধনে বাধার পর এবার বিধায়কদের আরও শৃঙ্খলাবদ্ধ হওয়ার বার্তা দিয়েছেন দলনেত্রী ।
মুখ্যমন্ত্রী অতীতেও বারবার দলীয় বিধায়কদের আরও বেশি করে বিধানসভাকে ব্যবহার করার বার্তা দিয়েছিলেন । এমনকি মন্ত্রী বিধায়কদের হাজিরা নিশ্চিত করার জন্য বিধানসভায় খাতার ব্যবস্থা করেছেন । কিন্তু এরপরেও দেখা যাচ্ছে বিধায়কদের একাংশ সঠিক সময় বিধানসভায় আসছেন না । জরুরি কাজ না থাকলেও তাঁরা বিধানসভাকে এড়িয়ে যাচ্ছেন । এই অবস্থায় এদিন বিধায়কদের মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, পরপর তিনদিন বিধানসভায় সময়মতো না এলে চার নম্বর দিনে বিধায়ককে শোকজ করা হবে ।
একইসঙ্গে বিভিন্ন সময় দেখা যাচ্ছে দলের বিধায়কেরা খুশি মতো মুখ খুলছেন ৷ সেবিষে সাবধান করে দিয়েছেন তিনি । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, দলের বাইরে কিছু বলার দরকার নেই । শৃঙ্খলা মানতে হবে । শৃঙ্খলার উপরে কেউ নেই । এদিন বিধায়কদের আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দলনেত্রী । বিশেষ করে জনসংযোগে জোর দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি । এক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, "আপনারা আরও বেশি করে মানুষের কাছে যান । প্রয়োজনে নিজের বিধানসভা এলাকায় চায়ের দোকানে বসে মানুষের সঙ্গে কথা বলুন । তাঁদের সুবিধা অসুবিধার কথা শুনুন । বিধায়করা বাড়ি বাড়ি যান । ছাব্বিশের প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরু করে দিন ।"
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "যদি কারও কোনও ব্যক্তিগত চাহিদা বা কাজের বিষয় থাকে, বিধানসভায় তাঁকে সেই সব দাবিদাওয়ার বিষয়গুলি জানাতে যদি তাঁরা ব্যর্থ হন, সেক্ষেত্রে প্রত্যেক রবিবার বিধায়করা মিলন সংঘে জনতার দরবারে গিয়ে চিঠি দিয়ে আসুন । আমি সঠিক সময় সঠিক ব্যবস্থা নেব ।"
এদিন এই বৈঠক থেকেই দলের ছাত্র ও যুব সংগঠনে খুব তাড়াতাড়ি রদবদল হতে পারে, এ বিষয়েও একটা ইঙ্গিত দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । মোটের উপর দিনের বৈঠক ছিল বিধায়কদের আরও নিয়মানুবর্তী ও আরও শৃঙ্খলাপরায়ন করার জন্য এবং বিধানসভাকে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়ার জন্য । সে পথেই গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী ।