শিলিগুড়ি, 2 ডিসেম্বর: উত্তাল বাংলাদেশে অপমানিত হয়েছে ভারতের জাতীয় পতাকা । পদ্মাপারে পা-দিয়ে মাড়ানো হয়েছে তেরঙা । তার বিরুদ্ধেই এবার গর্জে উঠলেন শিলিগুড়ির চিকিৎসক শেখর বন্দ্যোপাধ্যায় ।
তিনি তাঁর চেম্বারে ভারতের পতাকা লাগিয়ে দিয়েছেন । সঙ্গে দিয়েছেন এক সামাজিক বার্তা । যে সকল রোগী তাঁর কাছে আসবেন, তাঁদের প্রত্যেককে পতাকাকে আগে প্রণাম করতে হবে, তারপরেই ওই রোগীর চিকিৎসা করবেন তিনি ।
বিশেষ করে বাংলাদেশের রোগীদের উদ্দেশ্যে ওই বার্তা দিয়েছেন ড. শেখর বন্দ্যোপাধ্য়ায় । যিনি প্রণাম করবেন না সেই রোগীকে তিনি পরিষেবা দিতে নারাজ । আর ওই চিকিৎসকের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে চিকিৎসকমহল থেকে বুদ্ধিজীবীরা ।
শনিবার রাত থেকেই ড. বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্রমপাড়ায় নিজের চেম্বারে এই ব্যবস্থা চালু করেছেন । চেম্বারের বাইরে নোটিশ বোর্ডে রীতিমতো লাগিয়েছেন সেই সামাজিক বার্তা ও চেম্বারের দরজায় জাতীয় পতাকা । ইতিমধ্যে তাঁর চেম্বারে আসা রোগী থেকে শুরু করে কমপাউন্ডার-সহ মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটেটিভ সকলেই প্রণাম করে ঢুকেছেন । তিনি নিজেও প্রতিদিন পতাকা প্রণাম করে চেম্বার শুরু করছেন ।
ওপার বাংলায় যেভাবে ভারতের পতাকার অপমান হয়েছে, তা তিনি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি । তাঁর বক্তব্য, সোশাল মিডিয়ায় সকলে নানারকম পোস্ট করছেন ৷ কিন্তু কেউ এটা নিয়ে পোস্ট করছেন না । দেশকে ভালোবাসি মুখে বললেই হবে না । তার জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে । সেই কারণেই তিনি এই উদ্যোগ নিয়েছেন ।
তাছাড়া বাংলাদেশের ঘটনায় তিনি তিতিবিরক্ত । কিন্তু চিকিৎসক বলে সকলেই তিনি পরিষেবা দিতে বদ্ধপরিকর । তাই তিনি সেবা করবেন, কিন্তু তার আগে অবশ্যই ভারতের পতাকাকে সম্মান জানাতে হবে । পতাকাকে প্রণাম করতে হবে তাঁর সামনেই ।
সোমবার চিকিৎসক শেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমি আমার দেশকে ভালোবাসি । তাই আমার দেশের অপমান আমি মুখ বুঝে সহ্য করতে পারব না । আমার কাছে প্রচুর বাংলাদেশের রোগী আসেন । তাঁরা যদি আমার সামনে পতাকাকে সম্মান জানিয়ে প্রণাম করেন, তাহলেই আমি তাঁদের দেখব । নইলে আমি কাউকে কোনও পরিষেবা দেব না । চেম্বারে আসা প্রতিটি রোগীকেই এই কাজ করতে হবে । একইভাবে আমরাও প্রতিদিন পতাকাকে প্রণাম করব । এই কাজটা আমাদের প্রত্যেকের করা উচিত বলে আমি মনে করি ।"
উত্তর দিনাজপুর থেকে আগত রোগী সরিফুদ্দিন রহমান বলেন, "ডাক্তারবাবু যা করেছেন ঠিক করেছেন । জাতীয় পতাকাকে কোনোভাবেই অপমান করা উচিত হয়নি । যেভাবে অশান্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে, ওই দেশের সরকারের উচিত প্রতিরোধ করার ।"
আরেক রোগীর আত্মীয় প্রিয়াং দে বলেন, "ডাক্তারবাবুর এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই প্রশংসনীয় । আমাদের এবার প্রতিবাদের সময় এসেছে । সবাইকে একইভাবে এবার সরব হতে হবে ।"