পাঁশকুড়া, ২৩ ফেব্রুয়ারি : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নকল সই সম্বলিত শংসাপত্র দেখিয়ে গ্রেপ্তার তিন ব্যক্তি। ঘটনাটি পাঁশকুড়ার। অভিযুক্তদের নাম নরেন রায়, কমল রায় ও অম্বুজ। তিনজনই দিল্লির বদরপুরের বাসিন্দা। অভিযুক্তদের আজ তমলুক আদালতে তোলা হবে।
পুলিশের তরফে জানা যায়, গত তিনদিন ধরে নরেন, কমল ও অম্বুজ পাঁশকুড়ার একটি অতিথিশালায় ঘর ভাড়া নিয়ে থাকছিল। তারা ওই এলাকার বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে ছাত্র-ছাত্রীদের হাতের কাজ শেখানোর জন্য আবেদন করে। নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণ করানোর জন্য তারা স্কুল কর্তৃপক্ষকে মুখ্যমন্ত্রীর সইসহ বিশ্ব বাংলা লোগো লাগানো একটি নকল শংসাপত্রের প্রতিলিপি দেখায়। শংসাপত্রে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর সই দেখে কয়েকটি স্কুল ওই তিনজনকে স্কুলে হাতের কাজ শেখানোর অনুমতি দেয়। কাজ শেষে অনুদান হিসেবে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তারা মোটা অঙ্কের টাকা নেয় বলে অভিযোগ।
গতকাল দুপুরে নরেন, কমল ও অম্বুজ পাঁশকুড়ার পূর্ব বাকুলদা জুনিয়ার বেসিক স্কুলে যায়। অভিযোগ, সেখানে গিয়ে তারা স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের হাতের কাজ শিখিয়ে মোটা অঙ্কের অনুদান দাবি করে। এরপর তারা মুখ্যমন্ত্রীর সই করা নকল শংসাপত্রটিও দেখায়। ওই নকল শংসাপত্র দেখেই সন্দেহ হয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ শাসমলের। তিনি বিষয়টি নিয়ে সহশিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থান থেকে অভিযুক্তদের আটক করে নিয়ে যায়।
রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, "কিছুদিন আগেই আমি খবর পেয়েছিলাম, পার্শ্ববর্তী বেশ কয়েকটি স্কুলে শিক্ষকরা টাকা দিয়ে প্রতারিত হয়েছেন। তাই আমরা আগে থেকেই সতর্ক ছিলাম। মুখ্যমন্ত্রীর সইসহ নকল শংসাপত্রটি দেখে আমাদের সন্দেহ আরও জোরালো হয়। শংসাপত্রটির বিষয়ে অভিযুক্তদের কাছে জানতে চাওয়ায় তারা কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। তাই পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়।"
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা স্কুল পরিদর্শক আমিনুল হাসান বলেন, "শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনও প্রশিক্ষক পাঠানো হলে আমরা তাদের অনুমোদন দিই। সেই সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়। সেক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর শংসাপত্রের কোনও প্রয়োজন হয় না। বর্তমানে জেলায় কোনও ব্যক্তিকেই এধরনের অনুমোদন দেওয়া হয়নি।"
পাঁশকুড়া থানার OC অজিত কুমার ঝাঁ বলেন, " প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ শাসমলের অভিযোগের ভিত্তিতে রাতে তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।"