বর্ধমান, ১৪ ফেব্রুয়ারি : রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলগুলিতে পোশাক এবং জুতো দেয় রাজ্য সরকার। তবে প্রায় চার বছরেরও বেশি সময় কেটে গেলেও সেই সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত পূর্ব বর্ধমানের CMS (প্রাথমিক)- স্কুলের পড়ুয়ারা। ঘটনায় অভিভাবকরা সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলেছেন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতিরও অভিযোগ এনেছেন তাঁরা। এর তদন্ত চাইছেন অভিভাবক সহ স্কুলের অন্য শিক্ষকরাও। আবেদন জানিয়েছেন সরকারি সমস্ত দপ্তরে। তবে অভিযোগ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন প্রধান শিক্ষক সুভাষ চৌধুরি। তাঁর কথায় অংসঙ্গতি ধরা পড়েছে। তাঁর বক্তব্য, "স্কুল ফান্ডের যে টাকা আসে সেটা আমি এখন ব্যবহার করতে পারি না। অ্যাকাউন্ট হোল্ডার হিসেবে আমার নাম নথিভুক্ত হয়নি।"
স্কুলের তরফে জানা গেছে, ২০১৬ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব নেন সুভাষবাবু। এরপর ভরতির জন্য নোটিশ দিয়ে পড়ুয়াদের থেকে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকারও করেছেন তিনি। সেই টাকা স্কুলের পড়ুয়াদের রেজ়াল্ট, প্রশ্নপত্র, সুইপারদের মাইনের খাতে ব্যয় হয় বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে সেই টাকা কোন অ্যাকাউন্টে জমা হয়? স্কুলের কোনও অ্যাকাউন্ট সরকারিভাবে ব্যবহার না করতে পারলে যে টাকা পড়ুয়াদের থেকে নেওয়া হল সেই টাকা কোথায়? কার অ্যাকাউন্টে যায় সেই টাকা? এইসব প্রশ্নের উত্তরে সুভাষবাবুর বক্তব্য, "এই বিষয়ে আমি সরাসরি সংবাদমাধ্যমের সামনে বলতে পারব না। আমাদের আধিকারিকরা বলতে পারবেন।"
বর্ধমান শহরের BC রোডের খ্যাতনামা স্কুল CMS। ২০১৬ সাল থেকে এই স্কুলের প্রাথমিকের পড়ুয়ারা সমস্ত সরকারি সুবিধে থেকে বঞ্চিত, এই অভিযোগ উঠেছে। প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক শাহ আলমের সঙ্গে বর্তমান প্রধান শিক্ষক সুভাষ চৌধুরির বিরোধ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। অভিভাবক ও পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ, সুভাষবাবু দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই স্বেচ্ছাচার চালিয়ে যাচ্ছেন স্কুলে। এনিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, "আমি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারি নির্দেশ সকলকেই মেনে চলতে হবে।"
স্কুলের অভিভাবক দীপককুমার ঘোষ জানিয়েছেন, বর্তমান প্রধান শিক্ষক আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। তাঁর দাবি, আগের প্রধান শিক্ষক চলে যাওয়ার সময় সুভাষবাবুকে ৩৭ হাজার টাকা সহ স্কুলের ফান্ডের যাবতীয় হিসেব বুঝিয়ে দিয়ে যান। সুভাষবাবু তা লিখিতভাবে গ্রহণও করেন। কিন্তু তারপর আর ওই টাকার কোনও হিসাব তিনি দেননি।