কলকাতা, 19 ডিসেম্বর: বড়দিনের উৎসবের উদ্বোধন করতে গিয়ে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে শর্ট স্ট্রিটের নাম সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স স্ট্রিট করার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার পার্ক স্ট্রিটের অ্যালেন পার্কে বড়দিনের উৎসবের সূচনা করার পর মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি চলে আসেন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে। প্রত্যেক বছর বড়দিনের উৎসবের সূচনায় তিনি কলকাতার এই প্রথিতযশা কলেজে আসেন। এদিন সেখান থেকেই একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "আমি প্রতি বছর সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে আসি। এই কলেজ আমার খুব প্রিয়। একে আমার দ্বিতীয় বাড়ি বলে মনে করি। জেসাস যা বলেন, তার সঙ্গে কোনও কিছুর তুলনা হয় না।"
এদিন বাবরি মসজিদ ভাঙার সময়ের স্মৃতি তুলে এনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "যখন বাবরি মসজিদ ভাঙা হয়েছিল, আমি তখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলাম। আমি তখন দেখেছিলাম রাস্তায় কেউ ছিল না। আমি তখন এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ঘুরেছিলাম। লরেটোতে গিয়ে দেখি মাদার আছেন। উনি খাবার বিতরণ করতে দাঁড়িয়েছিলেন।" তিনি আরও জানান, ওই একবার নয়, আরও একবার তাঁর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎ হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "মাদারের জন্য বিশ্ব গর্বিত। আমি আজ তাঁর উদ্দেশে একটা গান লিখেছি। আমি শুধু 36 ঘন্টা সময় নিয়েছি গানটা লিখতে। এই গানটির মাধ্যমেও শান্তির কথা বলা হয়েছে।"
এদিন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের একটা বড় অংশ জুড়ে ছিল সব ধর্মকে সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়ার কথা। মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়ে দেন, তিনি পুজো বা ঈদের সময় উৎসবে যোগ দেন। একইভাবে বড়দিনের উৎসবেও তিনি যান। তিনি বলেন, "আমরা সব ধর্মকেই সম্মান করি ৷ আমরা সব ধর্মীয় উৎসবেই যাই।"
এরপরই নাম না করে কেন্দ্রের শাসক দল তথা বিজেপিকে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষায়, "রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ সকলেই সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা বলেছেন। আমাদের দেশে যদি কেউ বলে একটাই মত, একটা পথ সেটা হয় না। কোনও কিছু জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যায় না। মন থেকে ভালোবাসলেই ভালোবাসা। শান্তি ছাড়া কেউ বাঁচতে পারে না।"
প্রসঙ্গত, এদিন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জমির জন্য আবেদন জানানো হয়। সেন্ট জেভিয়ার্সের তরফ থেকে ফাদার ফিলিপ মুখ্যমন্ত্রীকে সান্তাক্লজ আখ্যাও দেন। এরপর নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আপনারা জমির কথা বললেন। কতটা জমি, কোথায় কী আছে আমাকে দেখতে হবে। তারপরই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব।"