ETV Bharat / state

"নিচু" জাতের বাড়িতে পুজো করার "অপরাধে" বয়কট পুরোহিত পরিবারকে !

সম্প্রতি পাশের গ্রাম দরবস্তি বালায় একজনের বাড়িতে নিয়মিত পুজো করা শুরু করেছিলেন দেবানন্দবাবু । অভিযোগ, এতেই বাধ সাধে গ্রাম কমিটি । বলা হয়, ওই ব্যক্তি নিচু জাতের। তাই তাঁর বাড়িতে পুজো করা চলবে না ।

aa
চন্দ্রকোনা
author img

By

Published : May 3, 2020, 4:29 PM IST

চন্দ্রকোনা, 3 মে : গ্রাম কমিটির নিদানে সমস্যায় পড়েছে চন্দ্রকোনা দুই নম্বর ব্লকের কুঁয়াপুরের পাখুয়াবালা গ্রামের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার । স্থানীয় ওই পুরোহিত পরিবারকে বয়কট করা হয়েছে বলে অভিযোগ । অভিযোগ, ওই পরিবারের কর্তা নাকি "নিচু" জাতের একজনের বাড়িতে পুজো করেছেন। সেই "অপরাধে" তাঁকে গ্রামের মন্দিরে পুজো করা বন্ধ করে দিয়েছে গ্রাম কমিটি ।

গ্রামের কয়েকটি বাড়ি ও মন্দিরে পুজো করে সংসার চালান পাখুয়াবালা গ্রামের দেবানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় । সম্প্রতি পাশের গ্রাম দরবস্তি বালায় একজনের বাড়িতে নিয়মিত পুজো করা শুরু করেছিলেন দেবানন্দবাবু । অভিযোগ, এতেই বাধ সাধে গ্রাম কমিটি । বলা হয়, ওই ব্যক্তি নিচু জাতের। তাই তাঁর বাড়িতে পুজো করা চলবে না । কমিটির এই নিদান শোনেননি দেবানন্দবাবু । এরপরে চারদিন আগে পাখুয়াবালা গ্রাম কমিটির তরফে মিটিং ডেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, গ্রামের মন্দির ও বাড়ি বাড়ি পুজো দেবানন্দবাবুকে দিয়ে করানো হবে না । দেবানন্দবাবুর অভিযোগ, তাঁকে একপ্রকার চাপ দিয়ে, সমস্ত খরচা বহন করিয়ে গ্রামের মন্দিরগুলির অভিষেক করানো হয় ।

জাতপাতের ছুতোয় গ্রাম কমিটির এই নিদানে বেজায় সমস্যায় পড়েছেন দেবানন্দবাবু । তাঁর বাড়িতে স্ত্রী ও এক ছেলে রয়েছে । এই অবস্থায় কার্যত সংসার চালানোই দায় হয়ে পড়েছে তাঁর পক্ষে । তিনি বলেন, "দীর্ঘ 15 বছর ধরে পুজো করে আসছি গ্রামের মন্দিরে । গ্রামের সমস্ত পুজো আমিই করি । সেই পুজো থেকে যা টাকা পয়সা উপার্জন এবং উপাদেয় দ্রব্য পাওয়া যায় সেই দিয়ে আমার সংসার চলে । কিন্তু সম্প্রতি ওই ব্যক্তির বাড়িতে পুজো করতে যাওয়ায় পর থেকেই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে । উঁচু- নিচু জাতের ভেদাভেদ দেখিয়ে গ্রাম কমিটি আমায় পুজো করতে দিচ্ছে না মন্দির ও অন্য বাড়িগুলিতে । আমায় বয়কট করা হয়েছে ।"

অপরদিকে গ্রাম কমিটির সদস্য সুজিত রায়, অসিত মণ্ডল-রা বলেন, "গ্রামের মন্দিরের একটা গরিমা রয়েছে । এই মন্দিরে যদি কেউ পুজো করতে চান বা পুজো করতে আসেন তিনি অন্য কোথাও পুজো করতে পারবেন না । কিন্তু দেবানন্দবাবু শোনেননি । গ্রামের সকল মানুষের সঙ্গে বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । এর বেশি আমরা কিছুই বলতে পারব না ।" এদিকে যাঁর বাড়িতে পুজো করতে গিয়ে এত সমস্যা সেই ব্যক্তি বলেন, "আমাদের বাড়িতে কোনও অনুষ্ঠান হলে সকলে তো খেতে আসেন । তাহলে পুজো করলে দোষ কোথায় ? আচার-অনুষ্ঠান বাড়িতে যদি সবাই আসতে পারেন তবে শুধু পুজো করলেই দোষ ? এই যুগে দাঁড়িয়ে কুসংস্কার চলছে । তবে দেবানন্দবাবু চাইলে আমার বাড়িতে পুজো করা বন্ধ করতে পারেন । আমি জোর করব না ।"

এবিষয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর বিজ্ঞান মঞ্চের জেলা সম্পাদক নন্দদুলাল ভট্টাচার্য বলেন, "বন্দ্যোপাধ্যায়বাবুকে যদি গ্রামবাসীরা জাতপাতের ছুতোয় বয়কট করে থাকেন তাহলে তা ভুল কাজ করেছেন । পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের কাছে সাহায্য চাওয়া হবে ।"

চন্দ্রকোনা থানার OC প্রশান্ত পাঠক বলেন, "বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।"

চন্দ্রকোনা 2 এর BDO শাশ্বত প্রকাশ লাহিড়ি বলেন, "আমরা বিষয়টি জানতাম না। খোঁজ নেব।"

চন্দ্রকোনা, 3 মে : গ্রাম কমিটির নিদানে সমস্যায় পড়েছে চন্দ্রকোনা দুই নম্বর ব্লকের কুঁয়াপুরের পাখুয়াবালা গ্রামের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার । স্থানীয় ওই পুরোহিত পরিবারকে বয়কট করা হয়েছে বলে অভিযোগ । অভিযোগ, ওই পরিবারের কর্তা নাকি "নিচু" জাতের একজনের বাড়িতে পুজো করেছেন। সেই "অপরাধে" তাঁকে গ্রামের মন্দিরে পুজো করা বন্ধ করে দিয়েছে গ্রাম কমিটি ।

গ্রামের কয়েকটি বাড়ি ও মন্দিরে পুজো করে সংসার চালান পাখুয়াবালা গ্রামের দেবানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় । সম্প্রতি পাশের গ্রাম দরবস্তি বালায় একজনের বাড়িতে নিয়মিত পুজো করা শুরু করেছিলেন দেবানন্দবাবু । অভিযোগ, এতেই বাধ সাধে গ্রাম কমিটি । বলা হয়, ওই ব্যক্তি নিচু জাতের। তাই তাঁর বাড়িতে পুজো করা চলবে না । কমিটির এই নিদান শোনেননি দেবানন্দবাবু । এরপরে চারদিন আগে পাখুয়াবালা গ্রাম কমিটির তরফে মিটিং ডেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, গ্রামের মন্দির ও বাড়ি বাড়ি পুজো দেবানন্দবাবুকে দিয়ে করানো হবে না । দেবানন্দবাবুর অভিযোগ, তাঁকে একপ্রকার চাপ দিয়ে, সমস্ত খরচা বহন করিয়ে গ্রামের মন্দিরগুলির অভিষেক করানো হয় ।

জাতপাতের ছুতোয় গ্রাম কমিটির এই নিদানে বেজায় সমস্যায় পড়েছেন দেবানন্দবাবু । তাঁর বাড়িতে স্ত্রী ও এক ছেলে রয়েছে । এই অবস্থায় কার্যত সংসার চালানোই দায় হয়ে পড়েছে তাঁর পক্ষে । তিনি বলেন, "দীর্ঘ 15 বছর ধরে পুজো করে আসছি গ্রামের মন্দিরে । গ্রামের সমস্ত পুজো আমিই করি । সেই পুজো থেকে যা টাকা পয়সা উপার্জন এবং উপাদেয় দ্রব্য পাওয়া যায় সেই দিয়ে আমার সংসার চলে । কিন্তু সম্প্রতি ওই ব্যক্তির বাড়িতে পুজো করতে যাওয়ায় পর থেকেই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে । উঁচু- নিচু জাতের ভেদাভেদ দেখিয়ে গ্রাম কমিটি আমায় পুজো করতে দিচ্ছে না মন্দির ও অন্য বাড়িগুলিতে । আমায় বয়কট করা হয়েছে ।"

অপরদিকে গ্রাম কমিটির সদস্য সুজিত রায়, অসিত মণ্ডল-রা বলেন, "গ্রামের মন্দিরের একটা গরিমা রয়েছে । এই মন্দিরে যদি কেউ পুজো করতে চান বা পুজো করতে আসেন তিনি অন্য কোথাও পুজো করতে পারবেন না । কিন্তু দেবানন্দবাবু শোনেননি । গ্রামের সকল মানুষের সঙ্গে বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । এর বেশি আমরা কিছুই বলতে পারব না ।" এদিকে যাঁর বাড়িতে পুজো করতে গিয়ে এত সমস্যা সেই ব্যক্তি বলেন, "আমাদের বাড়িতে কোনও অনুষ্ঠান হলে সকলে তো খেতে আসেন । তাহলে পুজো করলে দোষ কোথায় ? আচার-অনুষ্ঠান বাড়িতে যদি সবাই আসতে পারেন তবে শুধু পুজো করলেই দোষ ? এই যুগে দাঁড়িয়ে কুসংস্কার চলছে । তবে দেবানন্দবাবু চাইলে আমার বাড়িতে পুজো করা বন্ধ করতে পারেন । আমি জোর করব না ।"

এবিষয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর বিজ্ঞান মঞ্চের জেলা সম্পাদক নন্দদুলাল ভট্টাচার্য বলেন, "বন্দ্যোপাধ্যায়বাবুকে যদি গ্রামবাসীরা জাতপাতের ছুতোয় বয়কট করে থাকেন তাহলে তা ভুল কাজ করেছেন । পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের কাছে সাহায্য চাওয়া হবে ।"

চন্দ্রকোনা থানার OC প্রশান্ত পাঠক বলেন, "বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।"

চন্দ্রকোনা 2 এর BDO শাশ্বত প্রকাশ লাহিড়ি বলেন, "আমরা বিষয়টি জানতাম না। খোঁজ নেব।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.