আসানসোল, 8 অগস্ট: দিন কয়েক আগেই শিক্ষকদের বেতন সংক্রান্ত মামলায় রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা সংস্থা ইসিএলকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় । মাসের পর মাস ইসিএলের অধীনে থাকা স্কুলগুলির শিক্ষকরা বেতন পাচ্ছেন না শুনে তিনি বলেছিলেন, "স্কুল চালাতে না পারলে আদানিকে বেচে দিন ।" শেষ পর্যন্ত তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন শিক্ষকদের বকেয়া বেতনের অন্তত তিনমাসের বেতন যাতে অবিলম্বে ইসিএল হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে জমা দেয় । আর এতেই আশায় বুক বাঁধছেন ইসিএলের স্কুলগুলির শিক্ষক-শিক্ষিকারা ।
রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা সংস্থা ইস্টার্ন কোলফিল্ডের অধীনে ঝাড়খণ্ডে 9টি ও পশ্চিমবঙ্গে 7 টি বিদ্যালয় আছে । এই স্কুলগুলিতে যাঁরা বিএড ডিগ্রি প্রাপ্ত শিক্ষক, তাঁরা মাসে 7 হাজার টাকা, স্নাতক শিক্ষকরা মাসে 5 হাজার 500 টাকা এবং তার নিচের শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকরা মাসে মাত্র 5 হাজার টাকা বেতন পান । এত কম বেতনেও কাজ কর চলেছেন তাঁরা । শুধু তাই নয় দীর্ঘদিন ধরে তাদের বেতনের টাকা বকেয়া পড়ে আছে ।
শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানাচ্ছেন, 2011 সাল থেকে এক পয়সা কারও বেতন বাড়েনি । উপরন্তু সেই বেতনও 4-5 মাস বকেয়া পড়ে আছে ইসিএলের ঘরে । কারও আবার আরও বেশি দিনের বকেয়া পড়ে আছে । এই অভিযোগ নিয়েই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, ইসিএলের স্কুলের 44 জন শিক্ষক-শিক্ষিকা । অভিযোগ, নিজেদের খেয়াল খুশিমতো বেতন দিচ্ছে ইসিএল । কারও 4-5 মাস আবার কারও 10 মাস । আবার কারও 7 থেকে 8 বছর পর্যন্ত বকেয়া আছে বেতন । কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় শিক্ষকদের বেতন না পাওয়া নিয়ে এই মামলায় ইস্টার্ন কোলফিল্ড লিমিটেডকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন ।
সপ্তাহখানেকের মধ্যে 4 লক্ষ 80 হাজার টাকা কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি । এই টাকা দিয়ে সব শিক্ষকদের 5 হাজার টাকা করে 3 মাসের জন্য মোট 15 হাজার টাকা দেওয়া হবে । আগামী 21 অগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে । তাই আশায় বুক বাঁধছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা ।
তাঁরা জানিয়েছেন, বেতন না পেলেও কিন্তু পড়ানো বন্ধ করেননি । তবে শুধু বেতন নয় । স্কুলগুলির অবস্থাও বেহাল । সার্বিকভাবে স্কুলগুলির অবস্থার পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা । যদিও বিষয়টি নিয়ে ইসিএল কর্তৃপক্ষ কিছু জানাতে চায়নি এখনও ।