মালদা, 14 ফেব্রুয়ারি : মালদায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারকে ঘিরে চাঞ্চল্য ৷ দোষীদের শাস্তির দাবিতে সরব ডান-বাম সব পক্ষ ৷ আজ সকালে মৃত ভারতী হেমব্রমের বাড়িতে যান পুরাতন মালদা পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী মৃণালিনী মণ্ডল মাইতি, সহ সভাপতি হারেজ আলি, যাত্রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান নুর হক সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীরা ৷ হারেজ সাহেব বলেন, “ভারতীকে ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে ৷ তাঁর আত্মীয়রা খুনিদের ফাঁসির দাবি করেছে ৷ আমরাও একই দাবি করছি ৷ গোটা ঘটনা নিয়ে পুলিশি তদন্ত চলছে ৷ পুলিশ ও রাজ্য সরকারের উপর আমাদের যথেষ্ট ভরসা রয়েছে ৷”
তৃণমূল নেতৃত্ব পোপড়া গ্রাম থেকে চলে যাওয়ার খানিক বাদেই ভারতীর বাড়িতে উপস্থিত হন সাংসদ খগেন মুর্মু, বিধায়ক জয়েল মুর্মু সহ বিজেপির নেতা-কর্মীরা ৷ খগেনবাবু বলেন, “পরিকল্পিতভাবে এবং ঠান্ডা মাথায় ভারতীকে খুন করা হয়েছে ৷ খুনে যুক্ত সন্দেহে দু’জন পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে ৷ আমরা নিশ্চিত, নিমাই হেমব্রমই এই ঘটনার নায়ক ৷ তার সঙ্গে আরও লোকজন রয়েছে ৷ গ্রামবাসীরা দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছে ৷ আমরাও একই দাবি করছি ৷ পুলিশ যাতে এই ঘটনাকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা না করে তার আর্জি জানাচ্ছি ৷ গোটা রাজ্যেই পুলিশ এমন ঘটনাকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে ৷”
আরও পড়ুন : মুখ্যমন্ত্রীর মালদা সফরের 48 ঘণ্টার মধ্যেই মিটল সিভিক সমস্যা
প্রসঙ্গত, গ্রামের একটি নির্মীয়মাণ কালভার্টের নিচ থেকে ভারতী হেমব্রমের রক্তাক্ত দেহ লক্ষ্য করেন স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ এরপরেই খবর দেওয়া হয় পুলিশ ৷ পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায় ৷ জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রী স্থানীয় ইশ্বরলাল হাইস্কুলে পড়ত ৷ গ্রামবাসীদের দাবি, বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছে ভারতীকে ৷ পুলিশ সূত্রের খবর, নিহত ছাত্রীর বান্ধবী পারমিতা সোরেনের দাবি ঘটনার পিছনে সোনাঝুরি গ্রামের নিমাই হেমব্রমের হাত থাকতে পারে ৷ নিমাইয়ের সঙ্গে একসময় ভারতীর সম্পর্ক ছিল বলেও জানিয়েছে সে ৷ এমনকি, একটা সময়ে ওই যুবকের বাড়িতেও যায় ভারতী ৷ তবে, তখন তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় ৷ এরপর থেকেই ওই যুবককে ভারতী এড়িয়ে চলত বলে জানান পারমিতা ৷ যদিও তাঁর দাবি, এই ঘটনার পর বিভিন্ন ভাবে ভারতীকে উত্যক্ত করত নিমাই ৷ এমনকী ঘটনার আগের দিন তাঁকে খুনের হুমকিও দেয় সে ৷ ঘটনার পরই মালদা থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন ভারতীর মা সুমি সোরেন ৷ অপরদিকে, নিমাই হেমব্রমের বাড়ির লোকেদের দাবি, শনিবার রাত 12টার সময় বাড়ি থেকে বের হয় নিমাই ৷ এরপর আর সে বাড়ি ফেরেনি ৷ অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ ৷ এরপরই খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নিমাই ও তার এক বন্ধুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ৷