মালদা, 18 মে: মুম্বইয়ে কোরোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল মালদার এক বাসিন্দার ৷ শক্তি সেন নামে ওই ব্যক্তি মুম্বইয়ে স্বর্ণশিল্পীর কাজ করতেন ৷ শনিবার তাঁর মৃত্যু হওয়ার পর গতকাল মালদার বাড়িতে খবর পৌঁছায় ৷ খবর পেয়ে এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক ওই স্বর্ণশিল্পীর বাড়ি যান ৷ তিনি সবরকমভাবে ওই পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন ৷
ছ'মাস আগে মুম্বইয়ে স্বর্ণশিল্পীর কাজ করতে গিয়েছিলেন শক্তি সেন ৷ তাঁর বাড়ি মালদার চাঁচল 2 ব্লকের ক্ষেমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাণ্ডারণ গ্রামে ৷ বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী সান্ত্বনা সেন ও মেয়ে রুমা সেন ৷ স্থানীয় সীতাদেবী বালিকা বিদ্যামন্দিরের ছাত্রী রুমা এবছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে ৷ পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী শক্তিবাবু এলাকার বেশ কয়েকজনের সঙ্গে মুম্বই পাড়ি দেন ৷ সেখানে ভুলেশ্বর কালোয়াদেবী এলাকার ভগতবাড়ি নামে একটি জায়গায় থাকতেন তিনি ৷ সেখানেই একটি সোনার দোকানে কাজ করতেন ৷ কয়েকদিন আগে তাঁর জ্বর ও সর্দি-কাশি হয় ৷ প্রথমে নিজেই ওষুধ কিনে খান ৷ কিন্তু শারীরিক সমস্যা বাড়তে থাকায় তাঁকে সেখানকার সরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয় ৷ নমুনা পরীক্ষার পর জানা যায়, তিনি কোরোনায় আক্রান্ত ৷ শনিবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয় ।
শক্তিবাবুর স্ত্রী বলেন, "শুক্রবার শেষবার কথা হয়েছিল ৷ বলেছিল জ্বর কমে গিয়েছে ৷ অল্প কাশি রয়েছে ৷ তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাব ৷ কিন্তু গতকাল শুনি ও মারা গেছে ৷ মারা যাওয়ার কারণ সেখান থেকে এখনও আমাকে জানানো হয়নি ৷ শুনেছি কোরোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৷ স্বামীই পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিল ৷ এখন আমাদের কী হবে জানি না ৷" আত্মীয় গৌতম দাস বলেন, "জ্বর, সর্দি-কাশি নিয়ে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল শক্তিকে ৷ সেই খবর পাওয়ার একদিন পর জানতে পারি ও কোরোনায় আক্রান্ত ৷ যারা ওর সঙ্গে ছিল তারা জানিয়েছে কাউকে মৃতদেহ দেখতেও দেওয়া হয়নি ৷ সুতরাং মৃতদেহ এখানে আনার কোনও প্রশ্নই নেই ৷ শুনেছি গতকালই মৃতদেহের সৎকার করে দেওয়া হয়েছে ৷"
আজ শক্তিবাবুর বাড়ি যান এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা আবদুর রহিম বক্সি ৷ তিনি বলেন, "এই ঘটনায় আমরা শোকাহত ৷ শক্তিবাবুর পরিবারের পাশে রয়েছি ৷ তাঁদের সবরকম সাহায্য করার চেষ্টা করব ৷ রুমা এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে ৷ ওর উচ্চশিক্ষার জন্য যতটা সাহায্য করা যায় তাও করব ৷" চাঁচল 2-এর BDO অমিতকুমার সাউ বলেন, "এই ব্লকের এক স্বর্ণশিল্পী মুম্বইয়ে কাজ করতে গিয়ে কোরোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন বলে শুনেছি ৷ কিন্তু এখনও এনিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু জানতে পারিনি ৷ বিষয়টি আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি ৷"