মালদা, 10 জানুয়ারি: হাতে হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশ ৷ তবু চাকরি হয়নি সরকারি ভবনের জন্য জমি দান করা ব্যক্তির ছেলের ৷ সেই দান করা জমিতেই মঙ্গলবার দুপুরে গ্রাম পঞ্চায়েত ভবনের উদ্বোধন হয়েছে ৷ সেখানে হাজির ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী, বিডিও (BDO)-সহ আরও গণ্যমান্যরা ৷ সেই অনুষ্ঠানেই চাকরির দাবি তুলেছেন জমিদাতা, প্রয়াত মইনুদ্দিন শেখের ছেলে আনসারুল হক ৷ এই ঘটনায় অস্বস্তি ধরা পড়েছে অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রত্যেকের শারীরী ভাষাতে ৷
আনসারুল হক বলেন, "আমার সমস্ত নথিপত্র ঠিক রয়েছে ৷ হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে কিন্তু তারপরেও আমার চাকরি হয়নি ৷ সমস্ত নথি থাকার পরেও জেলা থেকে আমাকে ঘোরানো হচ্ছে ৷ 1981 সালে বাবা পঞ্চায়েত ভবন নির্মাণের জন্য পাঁচ কাঠা জমি দিয়েছিলেন ৷ সেই সময় পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়ার লিখিত চুক্তি হয়েছিল ৷ প্রথমে বিডিও, তারপর এসডিও সেখান থেকে হাইকোর্ট পর্যন্ত ছুটেছি ৷ হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও আমার কোনও চাকরি হয়নি ৷"
ঘটনাপ্রসঙ্গে অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসু জানান, জমি দান ও তার পরিপ্রেক্ষিতে চাকরির যে বিষয় রয়েছে তাতে যে নথিপত্র আমাদের থেকে চাওয়া হয়েছিল তা সব জায়গায় পাঠিয়েছি ৷ কিন্তু দুঃখজনক বিষয় আনসারুল হকের কাজ এখনও হয়নি ৷ পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের নির্দেশিকাও হয়তো হয়েছে ৷ তবে কোনও একটি জটে এখনও কাজ হচ্ছে না ৷ সেই বিষয়টি আমাদের এক্তিয়ারের বাইরে ৷ তবে দান মানে নিঃশর্তে কিছু দেওয়া ৷ ভবিষ্যতে এনিয়ে পঞ্চায়েতকে সতর্ক থাকতে বলব ৷ পরবর্তীতে শর্ত সাপেক্ষে এধরনের কোনও প্রস্তাব এলে তা এড়িয়ে যাওয়ায় ভালো হবে ৷"
আরও পড়ুন: জমা জলে নাজেহাল দত্তপুকুর 2 নম্বর পঞ্চায়েতের পূর্বপাড়ার বাসিন্দারা
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনা 1981 সালের ৷ সেই সময় মহেন্দ্রপুর পঞ্চায়েত প্রধান ছিলেন ইউসুফ শেখ ৷ গ্রাম পঞ্চায়েত ভবন তৈরির জন্য জমি খোঁজা হচ্ছে ৷ সেই সময় পরিবারের এক সদস্যের চাকরির লিখিত প্রতিশ্রুতিতে পঞ্চায়েত ভবন নির্মাণের জন্য পাঁচ কাঠা জমি দিয়েছিলেন মইনুদ্দিন শেখ ৷ অভিযোগ, ঘটনার 41 বছর পরেও এখনও সরকারি চাকরি জোটেনি মইনুদ্দিন সাহেবের পরিবারের কোনও সদস্যের ৷ মঙ্গলবার পঞ্চায়েত ভবনের উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে ডাক পেয়েছিলেন মইনুদ্দিন সাহেবের ছেলে আনসারুল হক ৷ ভবন উদ্বোধনের অনুষ্ঠানেই হাইকোর্টের চাকরি দেওয়ার নির্দেশ হাতে দাঁড়িয়েছিলেন আনসারুল হক ৷ হাইকোর্টের নির্দেশ থাকার পরও কেন তিনি চাকরি পাচ্ছেন না, এনিয়ে সরকারি আমলাদের সামনে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি ৷