ETV Bharat / state

Mango Production in Malda: আবহাওয়া অনুকূল ! মালদায় রেকর্ড আম উৎপাদনের সম্ভাবনা

চরম গ্রীষ্মে রসনাতৃপ্তির অন্যতম ভরসা আম । এবার বসন্তের মরশুমেই বাঙালি স্বপ্ন দেখছে গ্রীষ্মের দাবদাহে হাতে গোলাপখাস কিংবা হিমসাগর নিয়ে সুখসাগরে পাড়ি দেওয়ার । সৌজন্যে, মালদা । জানুয়ারির মধ্যেই জেলার প্রায় 95 শতাংশ আমগাছেই ঝেঁপে মুকুল এসেছে ৷ কয়েকদিনের মধ্যেই মুকুলে ছোট গুটি ধরে যাবে ৷ তারপর? ফলের রাজার স্রেফ পাতে পরার অপেক্ষা (Farmers assumption of record in mango production ) ।

Etv Bharat
Etv Bharat
author img

By

Published : Feb 23, 2023, 9:47 PM IST

মালদায় রেকর্ড আম উৎপাদনের সম্ভাবনা

মালদা, 23 ফেব্রুয়ারি: আবহাওয়ার কোনও খামখেয়ালিপনা না-থাকলে চলতি মরশুমে মালদায় আমের রেকর্ড ফলন হতে চলেছে ৷ আমচাষি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, এমনকি জেলা প্রশাসনও সেই সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে ৷ ইতিমধ্যে আমবাগানগুলিতে শুরু হয়েছে মুকুলের পরিচর্যা ৷ এবারই প্রথম দুই বঙ্গের আম একসঙ্গে বাজারে নামার সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে ৷ সেখানেই রয়েছে খানিক আশঙ্কা ৷ এত আম একসঙ্গে বাজারে নামলে তার প্রভাব দামে পড়তে পারে বলে মনে করছে উদ্যানপালন দফতর (Farmers assumption of record in mango production) ৷

মালদা জেলার অর্থনীতি সবচেয়ে বেশি নির্ভর করে আমচাষের উপর ৷ এই জেলায় 31 হাজার 600 হেক্টর জমিতে আমচাষ হয় ৷ চাষের জমির পরিমাণ প্রতি বছরই বাড়ছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর ৷ আমচাষের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে রয়েছেন জেলার প্রায় 70 শতাংশ মানুষ ৷ করোনার পর থেকে দু’বছর বিভিন্ন কারণে জেলায় আমের উৎপাদন ব্যাপক মার খেয়েছিল ৷ এবার জানুয়ারি মাসেই জেলার প্রায় 95 শতাংশ আমগাছেই ঝেঁপে মুকুল এসেছে ৷

উদ্যানপালন দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর সামন্ত লায়েক জানান, মালদায় এবার প্রায় 32 হাজার হেক্টর জমিতে আমচাষ হচ্ছে ৷ এবারের আবহাওয়া এখনও পর্যন্ত আমচাষের পক্ষে ভীষণ অনুকূল ৷ 90 শতাংশের বেশি আমগাছে মুকুল চলে এসেছে ৷ কারণ, এবার শীতে ঘন কুয়াশা বা দীর্ঘকালীন কুয়াশা দেখা যায়নি ৷ আর কয়েকদিনের মধ্যেই মুকুলে ছোট গুটি ধরে যাবে ৷ 2020-21 সালে এই জেলায় 3 লক্ষ 70 হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হয়েছিল ৷ প্রতিকূল আবহাওয়ায় গত বছর সেই ফলন নেমে আসে 2 লক্ষ 70 হাজার মেট্রিক টনে ৷ এবার 3 লক্ষ 75 হাজার থেকে 4 লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে ৷ অবশ্য যদি আবহাওয়া প্রতিকূল না হয় ৷

তিনি বলেন, “মালদা জেলায় প্রধানত ফেব্রুয়ারির প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে আমগাছে মুকুল আসে ৷ কিন্তু এবার তার 15-20 দিন আগেই মুকুল এসেছে ৷ তাই এবার আমরা জামাইষষ্ঠীর বাজার ধরতে পারব বলে আশা করছি ৷ তবে একটা আশঙ্কার বিষয়ও রয়েছে ৷ অন্যান্য বছর দক্ষিণবঙ্গের গাছে মুকুল আগে আসে ৷ মালদায় পরে মুকুল দেখা যায় ৷ কিন্তু এবার দুই বঙ্গেই একই সঙ্গে গাছে মুকুল এসেছে ৷ ফলে একই সময়ে দুই জায়গার আম বাজারে নামবে ৷ ফলে বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে আম চলে আসার সম্ভাবনাও রয়েছে ৷”

আরও পড়ুন: বাংলার মাটিতে এবার গরমে জাপানি আমের চাষ, বিদেশে প্রতি কিলোর দাম লক্ষাধিক

আরেক আমচাষি শিবু দাস জানান যে এখনও পর্যন্ত আবহাওয়া খুব ভালো ৷ তবে ফেব্রুয়ারি মাস না-পেরোলে কিছুই বলা যাবে না ৷ এই মাসে বৃষ্টি হলেই মুকুলের ক্ষতি হবে ৷ তবে এবছর গাছে প্রচুর মুকুল এসেছে ৷ জেলার প্রতিটি জায়গাতেই মুকুলের ভারে গাছ ভেঙে পড়ার জোগাড় ৷ যাঁরা চাষ করেননি, তাঁদের গাছও মুকুলে ভরে গিয়েছে ৷ ইতিমধ্যে দু’বার কীটনাশক স্প্রে করা হয়েছে ৷ আরও কয়েকবার কীটনাশক, অনুখাদ্য এবং ছত্রাকনাশক স্প্রে করা হবে ৷ এবার যা মুকুল এসেছে, তাতে গোটা জেলায় সাড়ে 4 লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হতে পারে ৷ তবে মুকুলে আমের দানা কেমন গাঁথবে, তার উপরেই ফলন নির্ভর করছে ৷ মার্চ মাসে আমের গুটি শক্ত হওয়ার পর বৃষ্টি হলে খুব ভালো ৷ গুটির বোঁটা শক্ত হয়ে যাবে ৷ আম ঝরে পড়ার সম্ভাবনাও কমে যাবে ৷

মালদা ম্যাঙ্গো মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উজ্জ্বল সাহা বলেন, “দেশের মোট উৎপাদনের প্রায় 70 শতাংশ আমই মালদায় উৎপাদিত হয় ৷ এবার এখনও পর্যন্ত আবহাওয়া আমচাষের পক্ষে যথেষ্ট অনুকূল ৷ প্রায় 32 হাজার হেক্টর জমিতে এবার আমচাষ হচ্ছে ৷ আমরাও আশা করছি, এবার অন্তত 4 লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হবে ৷ আমরা জেলার আম দেশের সঙ্গে বিদেশেও বাজারজাত করতে চাই ৷ তবে একটা সমস্যা এখনও রয়েছে ৷ সব আমচাষিকে এখনও বিমার আওতায় নিয়ে আসা যায়নি ৷ আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, প্রত্যেক আমচাষিকে যেন বিমার আওতায় আনা হয় ৷”

মালদায় রেকর্ড আম উৎপাদনের সম্ভাবনা

মালদা, 23 ফেব্রুয়ারি: আবহাওয়ার কোনও খামখেয়ালিপনা না-থাকলে চলতি মরশুমে মালদায় আমের রেকর্ড ফলন হতে চলেছে ৷ আমচাষি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, এমনকি জেলা প্রশাসনও সেই সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে ৷ ইতিমধ্যে আমবাগানগুলিতে শুরু হয়েছে মুকুলের পরিচর্যা ৷ এবারই প্রথম দুই বঙ্গের আম একসঙ্গে বাজারে নামার সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে ৷ সেখানেই রয়েছে খানিক আশঙ্কা ৷ এত আম একসঙ্গে বাজারে নামলে তার প্রভাব দামে পড়তে পারে বলে মনে করছে উদ্যানপালন দফতর (Farmers assumption of record in mango production) ৷

মালদা জেলার অর্থনীতি সবচেয়ে বেশি নির্ভর করে আমচাষের উপর ৷ এই জেলায় 31 হাজার 600 হেক্টর জমিতে আমচাষ হয় ৷ চাষের জমির পরিমাণ প্রতি বছরই বাড়ছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর ৷ আমচাষের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে রয়েছেন জেলার প্রায় 70 শতাংশ মানুষ ৷ করোনার পর থেকে দু’বছর বিভিন্ন কারণে জেলায় আমের উৎপাদন ব্যাপক মার খেয়েছিল ৷ এবার জানুয়ারি মাসেই জেলার প্রায় 95 শতাংশ আমগাছেই ঝেঁপে মুকুল এসেছে ৷

উদ্যানপালন দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর সামন্ত লায়েক জানান, মালদায় এবার প্রায় 32 হাজার হেক্টর জমিতে আমচাষ হচ্ছে ৷ এবারের আবহাওয়া এখনও পর্যন্ত আমচাষের পক্ষে ভীষণ অনুকূল ৷ 90 শতাংশের বেশি আমগাছে মুকুল চলে এসেছে ৷ কারণ, এবার শীতে ঘন কুয়াশা বা দীর্ঘকালীন কুয়াশা দেখা যায়নি ৷ আর কয়েকদিনের মধ্যেই মুকুলে ছোট গুটি ধরে যাবে ৷ 2020-21 সালে এই জেলায় 3 লক্ষ 70 হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হয়েছিল ৷ প্রতিকূল আবহাওয়ায় গত বছর সেই ফলন নেমে আসে 2 লক্ষ 70 হাজার মেট্রিক টনে ৷ এবার 3 লক্ষ 75 হাজার থেকে 4 লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে ৷ অবশ্য যদি আবহাওয়া প্রতিকূল না হয় ৷

তিনি বলেন, “মালদা জেলায় প্রধানত ফেব্রুয়ারির প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে আমগাছে মুকুল আসে ৷ কিন্তু এবার তার 15-20 দিন আগেই মুকুল এসেছে ৷ তাই এবার আমরা জামাইষষ্ঠীর বাজার ধরতে পারব বলে আশা করছি ৷ তবে একটা আশঙ্কার বিষয়ও রয়েছে ৷ অন্যান্য বছর দক্ষিণবঙ্গের গাছে মুকুল আগে আসে ৷ মালদায় পরে মুকুল দেখা যায় ৷ কিন্তু এবার দুই বঙ্গেই একই সঙ্গে গাছে মুকুল এসেছে ৷ ফলে একই সময়ে দুই জায়গার আম বাজারে নামবে ৷ ফলে বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে আম চলে আসার সম্ভাবনাও রয়েছে ৷”

আরও পড়ুন: বাংলার মাটিতে এবার গরমে জাপানি আমের চাষ, বিদেশে প্রতি কিলোর দাম লক্ষাধিক

আরেক আমচাষি শিবু দাস জানান যে এখনও পর্যন্ত আবহাওয়া খুব ভালো ৷ তবে ফেব্রুয়ারি মাস না-পেরোলে কিছুই বলা যাবে না ৷ এই মাসে বৃষ্টি হলেই মুকুলের ক্ষতি হবে ৷ তবে এবছর গাছে প্রচুর মুকুল এসেছে ৷ জেলার প্রতিটি জায়গাতেই মুকুলের ভারে গাছ ভেঙে পড়ার জোগাড় ৷ যাঁরা চাষ করেননি, তাঁদের গাছও মুকুলে ভরে গিয়েছে ৷ ইতিমধ্যে দু’বার কীটনাশক স্প্রে করা হয়েছে ৷ আরও কয়েকবার কীটনাশক, অনুখাদ্য এবং ছত্রাকনাশক স্প্রে করা হবে ৷ এবার যা মুকুল এসেছে, তাতে গোটা জেলায় সাড়ে 4 লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হতে পারে ৷ তবে মুকুলে আমের দানা কেমন গাঁথবে, তার উপরেই ফলন নির্ভর করছে ৷ মার্চ মাসে আমের গুটি শক্ত হওয়ার পর বৃষ্টি হলে খুব ভালো ৷ গুটির বোঁটা শক্ত হয়ে যাবে ৷ আম ঝরে পড়ার সম্ভাবনাও কমে যাবে ৷

মালদা ম্যাঙ্গো মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উজ্জ্বল সাহা বলেন, “দেশের মোট উৎপাদনের প্রায় 70 শতাংশ আমই মালদায় উৎপাদিত হয় ৷ এবার এখনও পর্যন্ত আবহাওয়া আমচাষের পক্ষে যথেষ্ট অনুকূল ৷ প্রায় 32 হাজার হেক্টর জমিতে এবার আমচাষ হচ্ছে ৷ আমরাও আশা করছি, এবার অন্তত 4 লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হবে ৷ আমরা জেলার আম দেশের সঙ্গে বিদেশেও বাজারজাত করতে চাই ৷ তবে একটা সমস্যা এখনও রয়েছে ৷ সব আমচাষিকে এখনও বিমার আওতায় নিয়ে আসা যায়নি ৷ আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, প্রত্যেক আমচাষিকে যেন বিমার আওতায় আনা হয় ৷”

For All Latest Updates

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.