ETV Bharat / state

TMC ও BJP-র বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ কংগ্রেস ও CPI(M)-র

কমিশনে তৃণমূল কংগ্রেস ও BJP-র বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগ জানিয়েছে কংগ্রেস ও CPI(M) । তাদের অভিযোগ, গতকাল অনুমতি না নিয়েই মালদায় তৃণমূল ও BJP-র পদযাত্রা করা হয়েছে ।

ফাইল ফোটো
author img

By

Published : Apr 19, 2019, 8:16 PM IST

Updated : Apr 19, 2019, 11:49 PM IST

মালদা, 19 এপ্রিল : কমিশনে তৃণমূল কংগ্রেস ও BJP-র বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগ জানিয়েছে কংগ্রেস ও CPI(M) । গতকাল বিকেলে মালদা শহরে অনুমতি ছাড়াই পদযাত্রা করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এর কিছুক্ষণ পরই BJP নেত্রী রূপা গাঙ্গুলিকে নিয়ে রোড শো করেন মালদা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের BJP প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরি ।

গতকাল পাকুয়াহাটে জনসভা ছিল তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেখানে গিয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেন, মালদা শহরে পদযাত্রা করবেন। তাঁর নির্দেশ পেয়ে পাকুয়াহাটের সভামঞ্চ ছেড়ে মালদা চলে আসেন কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরি সহ বেশ কয়েকজন নেতা । সেখানে সভা শেষ করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চপারে চলে আসেন মালদা শহরে । বিকেল সাড়ে 4টা নাগাদ শহরের রবীন্দ্র মূর্তি থেকে শুরু হয় তাঁর রোড শো । শহরের প্রায় সব রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ । এমনকি সাধারণ মানুষকেও রাস্তায় নামতে দেওয়া হয়নি । শহর ঘুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরাতন মালদার সাহাপুর সেতু মোড়ে পৌঁছোন । সেখান থেকে তিনি গাড়িতে চেপে চলে যান নারায়ণপুরের হোটেলে । এদিকে তাঁর পদযাত্রার পরপরই দক্ষিণ মালদার BJP প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরিকে নিয়ে রোড শো করেন রূপা গাঙ্গুলি । অবশ্য এক্ষেত্রে পুলিশের পক্ষ থেকে রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করা হয়নি । ফলে ফের প্রবল যানজট দেখা দেয় শহরে ।

শুনুুন বক্তব্য়
এই দুই রোড শোয়ের বিরুদ্ধে রাতেই জেলা নির্বাচন আধিকারিকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন CPI(M)-র জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র । নির্বাচন কমিশনের নিযুক্ত অবজ়ারভারের কাছে একই অভিযোগ দায়ের করেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোস্তাক আলমও । আজ অম্বরবাবু বলেন, "নির্বাচন কমিশনের নিয়ম হল, কোনও সভা বা রোড শোয়ের জন্য সুবিধা অ্যাপসের মাধ্যমে 48 ঘণ্টা আগে অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে । বিশেষত যেখানে স্টার কিংবা VVPI-রা প্রচারক হিসাবে থাকেন, সেখানে অবশ্যই এই অনুমতি নিতে হবে । কিন্তু গতকাল দুপুর পর্যন্ত কেউ জানতেন না, মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মালদা শহরে তৃণমূলের নির্বাচনি মিছিল হবে । এর কোনও আগাম অনুমতি ছিল না । কারণ, অনুমতি থাকলেই তার প্রচার করা হত । সন্ধেয় পূর্বতন অভিনেত্রী, বর্তমানে BJP নেত্রী রূপা গাঙ্গুলিও শহরে একটি রোড শো করেন । সেই শোয়েরও আগাম কোনও অনুমোদন ছিল বলে আমাদের জানা নেই । অর্থাৎ দুটি ক্ষেত্রেই নির্বাচনি আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে । এনিয়ে আমরা প্রশাসনের কাছে চিঠি দিয়েছি । আমার প্রশ্ন, যদি অন্য রাজনৈতিক দলগুলিও একই পদ্ধতি অবলম্বন করে, তবে কি নির্বাচন কমিশন তাদের ছাড় দেবে ?" গতকাল তৃণমূল নেত্রী দক্ষিণ মালদা লোকসভাকেন্দ্রের অন্তর্গত মালদা শহরে পদযাত্রা করেছিলেন । এই কেন্দ্রে এবার বামফ্রন্ট কোনও প্রার্থী দেয়নি । তাহলে কেন এই বিরোধিতা? উত্তরে অম্বরবাবু বলেন, "উত্তর বা দক্ষিণ বলে কোনও কথা নেই । মালদা শহর জেলাসদর । এখানে দুই কেন্দ্রের প্রার্থীর দেওয়াল লিখনই দেখতে পাওয়া যায় । ফলে এখানে কিছু হলে তার ছাপ গোটা জেলায় পড়ে ।" তৃতীয় দফার ভোটে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাবাহিনী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "কমিশন বলছে 70 থেকে 80 শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয়বাহিনী থাকবে । কিন্তু তাঁদের দাবি, প্রত্যেক বুথেই এই বাহিনী নিয়োগ করতে হবে । কারণ, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের অভিজ্ঞতা তাঁদের কাছে খুব খারাপ । অনেক মানুষ ভোট দিতে পারেননি । এবার মানুষ ভোট দিতে চান । তবে শুধু বুথে কেন্দ্রীয়বাহিনী তাঁরা চান না । তাঁদের দাবি, ভোটগ্রহণের অন্তত দু'দিন আগে এলাকায় টহলদারি করে কেন্দ্রীয়বাহিনীকে মানুষের আস্থা ফেরাতে হবে । দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করতে হবে । কারণ, এখন থেকেই গ্রামে গ্রামে মানুষকে হুমকি দেওয়া শুরু হয়ে গেছে ।"এদিকে জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি কালীসাধন রায় বলেন, "মোদি এবং দিদি, দুই দলের মধ্যেই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে কে কত বেশি কুকথা বলতে পারে ও নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করতে পারে । নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে মায়াবতী, যোগি আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে । কিন্তু ভোট যত বেশি এগোচ্ছে, এরা তত বেশি নির্বাচন বিধি ভঙ্গ করছে । গতকাল আমাদের পশ্চিমবঙ্গের দিদি নির্বাচন বিধি ভঙ্গ করেছেন । ভোট ঘোষণার পর থেকেই আদর্শ আচরণবিধি চালু হয়ে যায় । মাইক ব্যবহার করে মিছিল করতে গেলে সুবিধা অ্যাপের মাধ্যমে আগাম অনুমোদন নিতে হয় । গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে দুই প্রার্থীকে সঙ্গে নিয়ে মালদা শহরে যে নির্বাচনী মিছিল করা হয়েছে, আমরা বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পেরেছি, এর জন্য আগাম কোনও অনুমোদন নেওয়া হয়নি । ঠিক একইভাবে দক্ষিণ মালদার প্রার্থীর সমর্থনে BJP নেত্রী রূপা গাঙ্গুলি গতকাল মালদা শহরে রোড শো করেছেন । তিনিও নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করেছেন । জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোস্তাক আলম সঙ্গে সঙ্গে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে এনিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন । কমিশনের কাছে এর জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ারও আর্জি জানিয়েছেন ।"

মালদা, 19 এপ্রিল : কমিশনে তৃণমূল কংগ্রেস ও BJP-র বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগ জানিয়েছে কংগ্রেস ও CPI(M) । গতকাল বিকেলে মালদা শহরে অনুমতি ছাড়াই পদযাত্রা করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এর কিছুক্ষণ পরই BJP নেত্রী রূপা গাঙ্গুলিকে নিয়ে রোড শো করেন মালদা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের BJP প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরি ।

গতকাল পাকুয়াহাটে জনসভা ছিল তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেখানে গিয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেন, মালদা শহরে পদযাত্রা করবেন। তাঁর নির্দেশ পেয়ে পাকুয়াহাটের সভামঞ্চ ছেড়ে মালদা চলে আসেন কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরি সহ বেশ কয়েকজন নেতা । সেখানে সভা শেষ করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চপারে চলে আসেন মালদা শহরে । বিকেল সাড়ে 4টা নাগাদ শহরের রবীন্দ্র মূর্তি থেকে শুরু হয় তাঁর রোড শো । শহরের প্রায় সব রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ । এমনকি সাধারণ মানুষকেও রাস্তায় নামতে দেওয়া হয়নি । শহর ঘুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরাতন মালদার সাহাপুর সেতু মোড়ে পৌঁছোন । সেখান থেকে তিনি গাড়িতে চেপে চলে যান নারায়ণপুরের হোটেলে । এদিকে তাঁর পদযাত্রার পরপরই দক্ষিণ মালদার BJP প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরিকে নিয়ে রোড শো করেন রূপা গাঙ্গুলি । অবশ্য এক্ষেত্রে পুলিশের পক্ষ থেকে রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করা হয়নি । ফলে ফের প্রবল যানজট দেখা দেয় শহরে ।

শুনুুন বক্তব্য়
এই দুই রোড শোয়ের বিরুদ্ধে রাতেই জেলা নির্বাচন আধিকারিকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন CPI(M)-র জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র । নির্বাচন কমিশনের নিযুক্ত অবজ়ারভারের কাছে একই অভিযোগ দায়ের করেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোস্তাক আলমও । আজ অম্বরবাবু বলেন, "নির্বাচন কমিশনের নিয়ম হল, কোনও সভা বা রোড শোয়ের জন্য সুবিধা অ্যাপসের মাধ্যমে 48 ঘণ্টা আগে অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে । বিশেষত যেখানে স্টার কিংবা VVPI-রা প্রচারক হিসাবে থাকেন, সেখানে অবশ্যই এই অনুমতি নিতে হবে । কিন্তু গতকাল দুপুর পর্যন্ত কেউ জানতেন না, মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মালদা শহরে তৃণমূলের নির্বাচনি মিছিল হবে । এর কোনও আগাম অনুমতি ছিল না । কারণ, অনুমতি থাকলেই তার প্রচার করা হত । সন্ধেয় পূর্বতন অভিনেত্রী, বর্তমানে BJP নেত্রী রূপা গাঙ্গুলিও শহরে একটি রোড শো করেন । সেই শোয়েরও আগাম কোনও অনুমোদন ছিল বলে আমাদের জানা নেই । অর্থাৎ দুটি ক্ষেত্রেই নির্বাচনি আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে । এনিয়ে আমরা প্রশাসনের কাছে চিঠি দিয়েছি । আমার প্রশ্ন, যদি অন্য রাজনৈতিক দলগুলিও একই পদ্ধতি অবলম্বন করে, তবে কি নির্বাচন কমিশন তাদের ছাড় দেবে ?" গতকাল তৃণমূল নেত্রী দক্ষিণ মালদা লোকসভাকেন্দ্রের অন্তর্গত মালদা শহরে পদযাত্রা করেছিলেন । এই কেন্দ্রে এবার বামফ্রন্ট কোনও প্রার্থী দেয়নি । তাহলে কেন এই বিরোধিতা? উত্তরে অম্বরবাবু বলেন, "উত্তর বা দক্ষিণ বলে কোনও কথা নেই । মালদা শহর জেলাসদর । এখানে দুই কেন্দ্রের প্রার্থীর দেওয়াল লিখনই দেখতে পাওয়া যায় । ফলে এখানে কিছু হলে তার ছাপ গোটা জেলায় পড়ে ।" তৃতীয় দফার ভোটে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাবাহিনী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "কমিশন বলছে 70 থেকে 80 শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয়বাহিনী থাকবে । কিন্তু তাঁদের দাবি, প্রত্যেক বুথেই এই বাহিনী নিয়োগ করতে হবে । কারণ, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের অভিজ্ঞতা তাঁদের কাছে খুব খারাপ । অনেক মানুষ ভোট দিতে পারেননি । এবার মানুষ ভোট দিতে চান । তবে শুধু বুথে কেন্দ্রীয়বাহিনী তাঁরা চান না । তাঁদের দাবি, ভোটগ্রহণের অন্তত দু'দিন আগে এলাকায় টহলদারি করে কেন্দ্রীয়বাহিনীকে মানুষের আস্থা ফেরাতে হবে । দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করতে হবে । কারণ, এখন থেকেই গ্রামে গ্রামে মানুষকে হুমকি দেওয়া শুরু হয়ে গেছে ।"এদিকে জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি কালীসাধন রায় বলেন, "মোদি এবং দিদি, দুই দলের মধ্যেই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে কে কত বেশি কুকথা বলতে পারে ও নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করতে পারে । নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে মায়াবতী, যোগি আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে । কিন্তু ভোট যত বেশি এগোচ্ছে, এরা তত বেশি নির্বাচন বিধি ভঙ্গ করছে । গতকাল আমাদের পশ্চিমবঙ্গের দিদি নির্বাচন বিধি ভঙ্গ করেছেন । ভোট ঘোষণার পর থেকেই আদর্শ আচরণবিধি চালু হয়ে যায় । মাইক ব্যবহার করে মিছিল করতে গেলে সুবিধা অ্যাপের মাধ্যমে আগাম অনুমোদন নিতে হয় । গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে দুই প্রার্থীকে সঙ্গে নিয়ে মালদা শহরে যে নির্বাচনী মিছিল করা হয়েছে, আমরা বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পেরেছি, এর জন্য আগাম কোনও অনুমোদন নেওয়া হয়নি । ঠিক একইভাবে দক্ষিণ মালদার প্রার্থীর সমর্থনে BJP নেত্রী রূপা গাঙ্গুলি গতকাল মালদা শহরে রোড শো করেছেন । তিনিও নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করেছেন । জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোস্তাক আলম সঙ্গে সঙ্গে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে এনিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন । কমিশনের কাছে এর জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ারও আর্জি জানিয়েছেন ।"
Intro:মালদা, ১৯ এপ্রিল : হতকাল বিকেলে মালদা শহরে হঠাৎ পদযাত্রা করে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ জেলার দুই কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী সহ অন্যান্য নেতৃত্বকে নিয়ে তিনি প্রায় ৬ কিলোমিটার রাস্তা হাঁটেন৷ তৃণমূলনেত্রীর পদযাত্রা শেষ হওয়ার কিছু পর ফের আরকটি রোড শো দেখে মালদা শহর৷ দক্ষিণ মালদার দলীয় প্রার্থীকে নিয়ে সন্ধেয় শহরে রোড শো করেন বিজেপি নেত্রী রূপা গাঙ্গুলি৷ দুই শিবিরের দুই নেত্রীর এহেন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে কংগ্রেস ও সিপিএম৷ দুই দলের তরফেই দাবি করা হয়েছে, তৃণমূল ও বিজেপির রোড শো নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ করেছে৷ এনিয়ে নির্বাচন কমিশনকে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছে বিরোধীরা৷Body:গতকাল পাকুয়াহাটের জনসভায় উপস্থিত হয়েই তৃণমূলনেত্রী সিদ্ধান্ত নেন, তিনি মালদা শহরে পদযাত্রা করবেন৷ তাঁর নির্দেশ পেয়ে পাকুয়াহাটের সভামঞ্চ ছেড়ে মালদা চলে আসেন কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরি সহ বেশ কিছু নেতা৷ সেখানে সভা শেষ করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চপারে চলে আসেন শহরে৷ বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ শহরের রবীন্দ্র মূর্তি থেকে শুরু হয় তাঁর রোড শো৷ শহরের প্রায় সব রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ৷ এমনকি সাধারণ মানুষকেও রাস্তায় নামতে দেওয়া হয়নি৷ শহর ঘুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরাতন মালদার সাহাপুর সেতু মোড়ে পৌঁছোন৷ সেখান থেকে তিনি গাড়িতে চেপে চলে যান নারায়ণপুরের হোটেলে৷ এদিকে তাঁর পদযাত্রার পালটা হিসাবে দলীয় নেত্রী রূপা গাঙ্গুলিকে দিয়ে দ্বিতীয় একটি রোড শো করানোর সিদ্ধান্ত নেয় বিজেপি৷ দক্ষিণ মালদার প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরিকে নিয়ে রোড শো করেন রূপা৷ অবশ্য এক্ষেত্রে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনও রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করা হয়নি৷ ফলে ফের প্রবল যানজট দেখা দেয় শহরে৷
         এই দুই রোড শোয়ের বিরুদ্ধে রাতেই জেলা নির্বাচন আধিকারিকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র৷ নির্বাচন কমিশন নিযুক্ত অবজারভারের কাছে একই অভিযোগ দায়ের করেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোস্তাক আলমও৷
         আজ অম্বরবাবু বলেন, "নির্বাচন কমিশনের নিয়ম হল যে কোনও সভা কিংবা রোড শোয়ের জন্য সুবিধা অ্যাপসের মাধ্যমে ৪৮ ঘণ্টা আগে অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে৷ বিশেষত যেখানে স্টার কিংবা ভিভিআইপিরা প্রচারক হিসাবে থাকেন, সেখানে অবশ্যই এই অনুমতি নিতে হবে৷ কিন্তু গতকাল দুপুর পর্যন্ত কেউ জানতেন না, মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মালদা শহরে তৃণমূলের নির্বাচনি মিছিল হবে৷ এর কোনও আগাম অনুমতি ছিল না৷ কারণ, অনুমতি থাকলেই তার প্রচার করা হত৷ সন্ধেয় পূর্বতন অভিনেত্রী, বর্তমানে বিজেপি নেত্রী রূপা গাঙ্গুলিও শহরে একটি রোড শো করেন৷ সেই শোয়েরও আগাম কোনও অনুমোদন ছিল বলে আমাদের জানা নেই৷ অর্থাৎ দুটি ক্ষেত্রেই নির্বাচনি আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে৷ এনিয়ে আমরা প্রশাসনের কাছে চিঠি দিয়েছি৷ আমার প্রশ্ন, যদি অন্য রাজনৈতিক দলগুলিও একই পদ্ধতি অবলম্বন করে, তবে কি নির্বাচন কমিশন তাদের ছাড় দেবে?" গতকাল তৃণমূলনেত্রী দক্ষিণ মালদা লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মালদা শহরে পদযাত্রা করেছিলেন৷ এই কেন্দ্রে এবার বামফ্রন্ট কোনও প্রার্থী দেয়নি৷ তাহলে কেন এই বিরোধিতা? উত্তরে অম্বরবাবু বলেন, "উত্তর বা দক্ষিণ বলে কোনও কথা নেই৷ মালদা শহর জেলাসদর৷ এখানে দুই কেন্দ্রের প্রার্থীর দেয়াল লিখনই দেখতে পাওয়া যায়৷ ফলে এখানে কিছু হলে তার ছাপ গোটা জেলায় পড়ে৷" তৃতীয় দফার ভোটে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাবাহিনী প্রসঙ্গে অম্বরবাবুর বক্তব্য, কমিশন বলছে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয়বাহিনী থাকবে৷ কিন্তু তাঁদের দাবি, প্রত্যেক বুথেই এই বাহিনী নিয়োগ করতে হবে৷ কারণ, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের অভিজ্ঞতা তাঁদের কাছে খুব খারাপ৷ অনেক মানুষ ভোট দিতে পারেননি৷ এবার মানুষ ভোট দিতে চান৷ তবে শুধু বুথে কেন্দ্রীয়বাহিনী তাঁরা চান না৷ তাঁদের দাবি, ভোটগ্রহণের অন্তত দু'দিন আগে এলাকায় টহলদারি করে কেন্দ্রীয়বাহিনীকে মানুষের আস্থা ফেরাতে হবে৷ দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে হবে৷ কারণ, এখন থেকেই গ্রামে গ্রামে মানুষকে হুমকি দেওয়া শুরু হয়ে গেছে৷
         এদিকে জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি কালীসাধন রায় বলেন, "মোদি এবং দিদি, দুই দলের মধ্যেই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে কে কত বেশি কুকথা বলতে পারে ও নির্বাচন বিধি ভঙ্গ করতে পারে৷ নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে মায়াবতি, যোগি আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে৷ কিন্তু ভোট যত বেশি এগোচ্ছে, এরা তত বেশি নির্বাচন বিধি ভঙ্গ করছে৷ গতকাল আমাদের পশ্চিমবঙ্গের দিদি নির্বাচন বিধি ভঙ্গ করেছেন৷ ভোট ঘোষণার পর থেকেই আদর্শ আচরণবিধি চালু হয়ে যায়৷ মাইক ব্যবহার করে মিছিল করতে গেলে সুবিধা অ্যাপের মাধ্যমে আগাম অনুমোদন নিতে হয়৷ গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে দুই প্রার্থীকে সঙ্গে নিয়ে মালদা শহরে যে নির্বাচনি মিছিল করা হয়েছে, আমরা বিভিন্ন সূত্র মারফৎ জানতে পেরেছি, এর জন্য আগাম কোনও অনুমোদন নেওয়া হয়নি৷ ঠিক একইভাবে দক্ষিণ মালদার প্রার্থীর সমর্থনে বিজেপি নেত্রী রূপা গাঙ্গুলি গতকাল মালদা শহরে রোড শো করেছেন৷ তিনিও নির্বাচন বিধি ভঙ্গ করেছেন৷ জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোস্তাক আলম সঙ্গে সঙ্গে অবজারভারের কাছে এনিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন৷ কমিশনের কাছে এর জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ারও আর্জি জানিয়েছেন৷"
Conclusion:তৃতীয় দফার ভোটে কেন্দ্রীয়বাহিনী প্রসঙ্গে কালীসাধনবাবু বলেন, "নির্বাচন কমিশন প্রচার করছে গোটা পৃথিবীতে এটা হচ্ছে গণতন্ত্রের মহোৎসব৷ কিন্তু এই মহোৎসবে অংশ নিতে গিয়ে নির্বাচকদের যাতে প্রাণ না যায়৷ এটাও নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে৷ শুধুমাত্র কেন্দ্রীয়বাহিনী নিয়োগ করলেই হবে না, বাহিনীকে নিশ্চিত করতে হবে, একজন নির্বাচক ঘর থেকে বেরিয়ে ভোটদানের পর নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরে যাবেন৷ শুধু তাই নয়, ভোটের পরেও তাঁর সামাজিক শান্তি অক্ষত থাকবে৷ তা না হলে গণতন্ত্রের মহোৎসব নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দাবি অন্তঃসারশূন্য হয়ে যাবে৷ আগামীকাল আমরা এটা বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষককে জানাব৷"
Last Updated : Apr 19, 2019, 11:49 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.