মালদা, 28 ডিসেম্বর: অবশেষে অজ্ঞাতপরিচয় পোড়া দেহের পরিচয় জানা গেল ৷ বছর তিরিশের মৃত মহিলার বাবার বাড়ি চাঁচল ব্লকেরই একটি গ্রামে ৷ শনিবার দেহ সনাক্ত করেছেন তাঁর বাবার বাড়ির লোকজন ৷ এদিকে এদিনই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে রাজ্য ফরেন্সিক বিভাগের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল ৷ ঘটনাস্থল থেকে একাধিক নমুনা সংগ্রহ করেছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা ৷ অন্যদিকে, এই ঘটনায় পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া স্টেশন থেকে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ তাঁকে দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মালদা জেলার পুলিশ সুপার ৷ তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, এই ঘটনার দ্রুত তদন্ত শেষ করা হবে ৷
শুক্রবার সকালে চাঁচল ব্লক অফিস সংলগ্ন এলাকায় একটি আম বাগানের মধ্যে থাকা ফাঁকা অংশে এক মহিলার পোড়া দেহ উদ্ধার হয় ৷ গতকালই ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছিল জুতো, নাকের সোনার ফুল, গলার হার ৷ দুপুরে ঘটনাস্থলের কাছেই একটি বাঁশঝাড় থেকে উদ্ধার হয় রক্তমাখা ছুরি ৷ শনিবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে সামান্য দূরে একটি পুকুরের ধার থেকে একটি ব্যাগ খুঁজে পায় চাঁচল থানার পুলিশ ৷ সেই ব্যাগে এক মহিলার আধার ও ভোটার কার্ড পাওয়া যায় ৷ সেই সূত্র ধরেই যোগাযোগ করা হয় মহিলার বাবার বাড়িতে ৷ খবর পেয়ে মৃতার বাবা মেয়ের দেহ সনাক্ত করেন ৷
মৃতার ছোট ছেলে বিষ্ণু হাঁসদা বলেন, "আমার মা এক বছর আগে আমাদের ছেড়ে একটি ছেলেটির সঙ্গে চলে যায়। আমাদের সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগ রাখেনি, আমরাও রাখিনি। আমাদের সঙ্গে কোনও রকম সম্পর্কই ছিল না। থানা থেকে পুলিশ ফোন করে বলে যে আমার মায়ের দেহ পাওয়া গিয়েছে। কোন সম্পর্ক না থাকলেও আমি চাই, যে মাকে মেরেছে তার শাস্তি হোক। ওই ছেলেটাই আমার মা-কে মেরেছে।"
এদিকে পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, “সামসী স্টেশনের সিসিটিভির ফুটেজে মৃতাকে এক যুবকের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল ৷ কয়েক ঘণ্টা পর ওই যুবক ফের স্টেশন থেকে একা বেরিয়ে যায় ৷ তাতেই প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, রাতেই ওই মহিলাকে খুন করা হয়েছে ৷ প্রমাণ লোপাট করতে দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয় ৷ ইতিমধ্যে আবু তাহের নামে ওই যুবককে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া স্টেশন থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ তাকে জেরা করা হচ্ছে ৷ তার সঙ্গে মৃতার কোনও সম্পর্ক ছিল কি না, তা জানার চেষ্টা চলছে ৷ দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে৷ মৃতার ডিএনএ-এর পাশাপাশি ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হবে ৷ তদন্তের স্বার্থে তাঁর পরিবারের সদস্যদেরও জেরা করা হচ্ছে ৷” তবে পুলিশের একাংশের অনুমান, সম্ভবত আবু তাহেরের সঙ্গে মৃতার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল ৷ সেই সম্পর্কে কোনও টানাপোড়েনের জন্যই এই খুন ৷